তিনি বলেন, যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে অন্যান্য দেশেও। গত কয়েক দশকে এত বড় পরিসরের মানবিক সংকট দেখা যায় নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিশ্বে মোট উৎপাদিত গম এবং যবের ৩০ শতাংশ, ভুট্টার ৫ ভাগের এক ভাগ এবং সূর্যমুখী তেলের অর্ধেকই উৎপাদন হয় রাশিয়া এবং ইউক্রেনে। যার বড় একটি অংশের ক্রেতা ৪৫টি স্বল্পোন্নত দেশ।
ইউক্রেনে সংঘাতের কারণে সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। যে কারণে স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে শস্য রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। এর ফলে ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন মানুষ দরিদ্র এবং ক্ষুধার্ত হতে পারে বলে শঙ্কার কথা জানান গুতেরেস। এ সংকট কাটাতে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কার করার আহবান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব।
দ্রুত যুদ্ধ না থামলে আগামীদিনে তা আরও চরম আকার ধারণ করবে। আশঙ্কা প্রকাশ করলেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তার কথায়, ‘ইউক্রেনের পরিস্থিতি ভয়াবহ। যা আমরা প্রতিনিয়ত চাক্ষুষ করছি।’ এরপরই তিনি যোগ করেন, ‘যুদ্ধের প্রভাব সারা বিশ্বেই পড়ছে৷ খাদ্য এবং জ্বালানির ঘাটতি আর অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছেন বিশ্বের অন্তত ১৭০ কোটি মানুষ। যাদের এক পঞ্চমাংশই এখন দারিদ্র্যে দিন কাটাচ্ছেন৷ খিদের জ্বালায় কাতর।’
গুতেরেস বলেন, এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্তত ৪৫টি দেশ ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত। কারণ ওই ৪৫টি দেশ তাদের গমের চাহিদার অর্ধেকই রাশিয়া এবং ইউক্রেন থেকে আমদানি করে৷
গুতেরেসের মতে, খাদ্য এবং জ্বালানির সংকট অনেক দরিদ্র দেশকে সামাজিক এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাই দ্রুত যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, ‘যুদ্ধ এখনই বন্ধ না হলে পরিস্থিতি এমন হতে পারে যে এই বিশ্ব যা হয়ত তা সামাল দিতে পারবে না৷’
এদিকে আইএমএফও মনে করছে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে চলতি বছরেও আর্থিক বিকাশ হতে পারে ধীরগতিতে। আইএমএফের মতে, সারা বছরে বিকাশ কমতে পারে ০.৩৫ শতাংশ।
এমনিতেই করোনার জেরে গত দু’বছরে বিশ্ব জুড়ে নানা পণ্যের সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছে। আর এখন যুদ্ধের ফলে ফের সরবরাহে বাঁধা সৃষ্টি হয়েছে। জ্বালানি ও অন্যান্য পণ্যের দাম বেড়েছে ব্যাপকহারে। আইএমএফ, বিশ্ব ব্যাংক, জাতিসংঘ তাই একযোগে যুদ্ধ বন্ধের দাবি তুলেছে।