আমতলী প্রতিনিধি।
১১ দিন পর বরগুনা ও পটুয়াখালী মালিক সমিতির দ্বন্ধ নিরসন হলেও একদিন পর আবার মহাসড়কে বরগুনা মালিক সমিতির বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। বরগুনা বাস মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ বরগুনা থ্রি-হুইলার মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধা বাস চলাচলে প্লাই দিচ্ছে না। ফলে সোমবার থেকে বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। দ্রুত প্রশাসনকে সমস্যার সমাধানের দাবী জানিয়েছেন যাত্রীরা।
জানাগেছে, আমতলী-তালতলী সড়কে খানাখ›ন্দের কারনে গত দুই বছর ধরে তালতলী-বরিশাল রুটে বাস চলাচল বন্ধ ছিল। গত ১৫ মে থেকে তালতলী সড়কে বাস চলাচল শুরু হয়। ওই সময়ে পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ ওই সড়কে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় এবং ওই সড়কের গাড়ীগুলো বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা সড়কে চালান। এতে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে রুটেশনে সমস্যা দেখা দেয় বলে। এ নিয়ে বরগুনা বাস মালিক সমিতি ও পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির দ্বন্ধে গত ১৮ মে থেকে দশ দিন বরিশাল-পটুয়াখালী ও কুয়াকাটা মহাসড়কে বাস চলাচল বন্ধ ছিল। গত রবিবার পটুয়াখালী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ হুমায়ূন কবির, বরগুনা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ ফয়সাল মাহমুদ, বরগুনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলী, পটুয়াখালী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহমাদ মাঈনুল হাসান, পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন মৃধা, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড, আরিফুজ্জামান, বরগুনা বাস মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ গোলাম মোস্তফা কিসলু ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব সগির হোসেন দ্বন্ধ নিরসনে বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকে সিধান্ত হয় আগামী জুন মাস পর্যন্ত অর্থ্যাৎ তালতলী সড়ক সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত দুই জেলার সমান সংখ্যক গাড়ী চলাচল করবে। ওই বৈঠকের সিধান্তের পরপরই সড়কে গাড়ী চলাচল শুরু হয়। কিন্তু দ্বন্ধ নিরসনের এক দিন পর সোমবার সকাল থেকে সড়কে বরগুনা মালিক সমিতির বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। বরগুনা মালিক সমিতির অভিযোগ পটুয়াখালী মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ বরগুনা থ্রি-হুইলার মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধাকে আমতলী বাস স্ট্যান্ডের কাউন্টার ইনচার্জ করেছেন। সোমবার থেকে খোকন মৃধা বরিশাল-পটুয়াখালী- কুয়াকাটা মহাসড়কে চলাচলকারী বরগুনা বাস মালিক সমিতির ১৭ টি গাড়ীর প্লাই বন্ধ করে দিয়েছেন। তারা আরো অভিযোগ করেন, খোকন মৃধা বরগুনা বাস মালিক সমিতির গাড়ী চালককে গাড়ী চালাতে নিষেধ করছেন। তার কথার অবাধ্য হয়ে গাড়ী চালালে চালকদের হাত পা ভেঙ্গে দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন। ভয়ে চালকরা বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে সড়কে কম সংখ্যক গাড়ী চলাচল করছে। ফলে দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের।
বাস চালক আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, এক প্রভাবশালী শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা আমাকে বাস নিয়ে আমতলী যেতে নিষেধ করেছে, তাই আমি বাস নিয়ে আমতলী যাইনি। তিনি আরো বলেন, বরিশাল-পটুয়াখালী- কুয়াকাটা সড়কে বরগুনা মালিক সমিতির সকল বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
যাত্রী মোঃ খাইরুল ইসলাম বলেন, বরিশাল যেতে সড়কে এক ঘন্টা দাড়িয়ে আছি কোন বাস পাচ্ছি না। শুনেছি সড়কে কম গাড়ী চলছে।
বরগুনা বাস মালিক সমিতির লাইন সম্পাদক মোঃ সজল মৃধা বলেন, পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ আমতলী বাস স্ট্যান্ডে মোঃ জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধাকে কাউন্টার ইনচার্জ করেছেন। যা সম্পুর্ণ অবৈধ। খোকন মৃধা সোমবার সকাল থেকে বরগুনা মালিক সমিতির গাড়ীর প্লাই দিচ্ছে না। ফলে বরিশাল-পটুয়াখালী- কুয়াকাটা মহাসড়কে গাড়ী চলাচল বন্ধ রয়েছে। তিনি আরো বলেন, খোকন মৃধা চালকদের বাস চালাতে নিষেধ করছেন। চালকরা তার ভয়ে বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন।
আমতলী বাস স্ট্যান্ডের কাউন্টার ইনচার্জ মোঃ জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধা চালকদের বাস চালাতে নিষেধ এবং হুমকির কথা অস্বীকার করে বলেন, এগুলো অসত্য কথা। বাস মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে দ্বন্ধ রয়েছে।
বরগুনা বাস মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ গোলাম মোস্তফা কিসলু বলেন, বরিশাল-পটুয়াখালী ও কুয়াকাটা মহাসড়কে ঝামেলা চলছে। জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধা প্লাই দিচ্ছে না। তাই সড়কে বাস চলছে না।
বরগুনা অতিরিক্তি পুলিশ সুপার মোঃ মহরম আলী বলেন, গতকাল মালিক সমিতির দ্বন্ধ নিরসন করে দেয়া হয়েছে। তারপর কি হয়েছে তা আমার জানা নেই। খোজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।