ডেস্ক রিপোর্ট:
২০০০ সালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি শেখ মো. এনামুল হক ওরফে এনামুল করিমকে (৫৩) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। পলাতক থাকার সময় তিনি গাজীপুরের একটি মসজিদে ৮ বছরের বেশি সময় ইমামতি করেছেন। একই সঙ্গে এনামুল করিম এইডস নিরাময়ে চিকিৎসা দিতে সক্ষম বলে দাবি করতেন।
গতকাল শনিবার রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার এনামুলের বিষয়ে আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পলাতক এনামুল গাজীপুরে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে একটি জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন। পরে ক্যানসার নিরাময় কেন্দ্র নামের একটি প্রতিষ্ঠান খুলে ভুয়া হারবাল চিকিৎসা দেওয়া শুরু করেন। এনামুল করিম এইডস রোগ নিরাময়ে চিকিৎসা দিতে সক্ষম বলে দাবি করতেন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘গতকাল শনিবার রাতে এনামুল করিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখার ঘটনায় কোটালীপাড়া থানায় হত্যাচেষ্টা, হত্যার ষড়যন্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তিনটি মামলা হয়। তদন্ত শেষে ওই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০২১ সালের ২৩ মার্চ এনামুল করিমসহ ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।’
পরে এনামুল পালিয়ে গাজীপুরে অবস্থান নেন। সেখানে তিনি একটি হোমিওপ্যাথি কলেজেও দুই বছর প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বলে জানা যায়। পরে ২০১০ সালে তিনি ঢাকার উত্তরা ও বনশ্রীতে বাসা ভাড়া করে বসবাস করতে থাকেন।
এনামুল উত্তরায় ২০১৫ সালে ‘আই কে হোমিও কলেজ উত্তরা’ নামে একটি ভুয়া হোমিও প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে। পরে ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে তিনি ক্যানসার নিরাময় কেন্দ্র নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান খুলে ভুয়া হারবাল চিকিৎসা দেওয়া শুরু করেন। তাঁর চিকিৎসায় ক্যানসার সম্পূর্ণরূপে ভালো হয় বলে তিনি দাবি করতেন। এ ছাড়া তিনি এইডস রোগ নিরাময়ে চিকিৎসা দিতে সক্ষম বলে দাবি করতেন।
এনামুল সব সময় নিজস্ব গন্ডির মধ্যে চিকিৎসা দিতেন। এ ছাড়া তিনি নিজেকে হেপাটাইটিস-ভাইরাস, প্যারালাইসিস, ডায়াবেটিকস, মেদ, বন্ধ্যত্ব, টিউমার, হার্ট, কিডনি, যৌন, মানসিক রোগসহ বহুবিধ রোগের সফল চিকিৎসক হিসেবে দাবি করতেন বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।