আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
শ্রীলঙ্কায় সপ্তাহান্তের একটি সমাবেশ কর্মসূচির আগে ছাত্র বিক্ষোভে নতুন করে অশান্ত হয়ে ওঠা পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস এবং জলকামান ছুড়েছে। কলোম্বোয় জারি করা হয়েছে কারফিউ। শুক্রবার প্রেসিডেন্টের বাসভবন অভিমুখে পদযাত্রার আয়োজন করেন ইন্টার ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট ফেডারেশনের সদস্য ওয়াসানথা মুদালিগে।
তিনি বলেন, ‘জ্বালানির জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে মানুষ মরছে। দিনে তিনবেলা খাবার জোগাড়ের অবস্থাও তাদের নেই। প্রেসিডেন্ট এবং তার সরকার দেশের এই হাল করেছে।’
‘আমরা প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী (রনিল বিক্রমাসিংহে) বিদায় না নেওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ থামাবো না,’ বলেন মুদালিগে।
গত মে মাসে বিক্ষোভের মুখে মাহিন্দা রাজাপাকসের পদত্যাগের পর নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন রনিল বিক্রমাসিংহে।
বিক্ষোভের আয়োজকরা বলছেন, শিক্ষার্থীরা রাতভর অবস্থান ধর্মঘট করবে এবং শনিবার তাদের সঙ্গে যোগ দেবে আরও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ও বিরোধীদলের সমর্থকরা।
ওদিকে, পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুক্রবারই স্থানীয় সময় রাত ৯টা থেকে কলোম্বো এবং আরও কয়েকটি শহরতলীতে কারফিউ বলবৎ হবে। তবে এ কারফিউ কখন তুলে নেওয়া হবে তা পুলিশ জানায়নি। পুলিশের একটি নোটিশে বলা হয়েছে, ‘কারফিউ জারি থাকা এলাকাগুলোতে মানুষজনকে ঘরে থাকতে হবে। কারফিউ ভঙ্গ করাকে সরকারি নির্দেশ অমান্য বলে গণ্য করা হবে এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ইতিহাসের ভয়াবহতম অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা ‘দেউলিয়া’ হয়ে গেছে বলে গত বৃহস্পতিবারই মন্তব্য করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।
স্বাধীনতার পর সবচেয়ে মারাত্মক আর্থিক সংকেট পড়া শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক রিজার্ভ বলে আর কিছু নেই। তাই দেশটি খাবার, ওষুধ ও জ্বালানির মত অতি জরুরি আমদানি প্রয়োজন মেটাতে পারছে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।
জরুরি সেবার জন্যও জ্বালানি পাওয়া যাচ্ছে না। বাণিজ্যিক রাজধানী কলম্বোসহ বড় বড় নগরীতে একটু জ্বালানি তেলের জন্য মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছে। কখনও কখনও পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে।