আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারিত্বে ভিত্তিতে থাকা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। বরং তারা নিজেরাই মহাকাশ স্টেশন গড়ে তুলবে বলে জানায়। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের পর রাশিয়া সরে আসবে। তবে এই সময়ের মধ্যে যে দায়িত্ব রয়েছে তা পালনও করবে।
রাশিয়ার মহাকাশ সংস্থা রসকসমস প্রধান ইউরি বরিসভ একটি সভায় প্রেসিডেন্ট ভ্লামিদির পুতিনকে বলেছেন, আমি মনে করি এই সময়ের মধ্যে (২০২৪) রাশিয়ান অবরিটাল স্টেশন গড়ে তুলতে পারবে। তবে আইএসএস ছাড়ার আগ পর্যন্ত যেসব কর্তব্য আছে তা রাশিয়া ঠিকমতই পালন করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, মহাকাশ স্টেশন আইএসএস থেকে রাশিয়ার সরে যাওয়ার ঘোষণায় হতাশা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, মস্কোর এ ধরনের সিদ্ধান্ত খুবই দুঃখজনক। যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া দীর্ঘ সময় ধরে মহাকাশ গবেষণায় একসাথে কাজ করে আসছে। ইউক্রেন ইস্যুতে সম্পর্কের এই ধারায় পরিবর্তন এসেছে। তবে আমরা মনে করি জননিরাপত্তা, বিজ্ঞান এবং গবেষণা ইস্যুতে একত্রে দুই দেশের কাজ করার সুযোগ আছে।
ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার উপরে পৃথিবীর কক্ষপথে মহাকাশ স্টেশন আইএসএস’র অবস্থান। বিশ্বের পাঁচটি মহাকাশ গবেষণা সংস্থার একটি যৌথ প্রকল্প এই স্টেশন, যা ১৯৯৮ সাল থেকে দিন-রাত পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান, কানাডা এবং ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার যৌথ উদ্যোগে হাজারো বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এই মহাকাশ স্টেশন ব্যবহার করা হচ্ছে। যার চুক্তির মেয়াদ ২০২৪ সাল পর্যন্ত। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশগুলো প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াতে চাইলেও নারাজ রাশিয়া।
আইএসএস দুটো ভাগে বিভক্ত। একটি রাশিয়ান অরবিটাল সেগমেন্ট এবং অপরটি ইউএস অরবিটাল সেগমেন্ট। রাশিয়ার অংশটি আমেরিকান অংশের বিদ্যুৎ ছাড়া কাজ চালাতে পারে না। আবার আমেরিকান অংশ রাশিয়ার অংশের চালিকাশক্তি ছাড়া কাজ করতে পারে না। ফলে এক পক্ষকে ছাড়া অন্য পক্ষ অসম্পূর্ণ। যে কারণেই মস্কোর এ ধরনের সিদ্ধান্তে হতাশ হয়েছে ওয়াশিংটন। উল্লেখ্য, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই যৌথ মহাকাশ স্টেশন থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের হুমকি দিয়েছিল মস্কো।