আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়ছে, যদিও খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি কম। আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিস ইনভেস্টর সার্ভিস এমন দাবি করেছে।
বিশ্বে প্রায় আড়াই বছর ধরে ছড়ি ঘুরাচ্ছে অতিমারি করোনাভাইরাস। সঙ্গে যোগ হয়েছে গত ছয়মাসের ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। এতে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট তৈরি করেছে নানা দেশে। বিশ্লেষকদের মতে, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলো।
ইতিমধ্যে দেউলিয়া হয়েছে শ্রীলঙ্কা, সংকট তীব্র হচ্ছে পাকিস্তানে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য আশা কথাই বলছে মুডিস।
সিঙ্গাপুরে মুডিসের স্বাধীন বিশ্লেষক ক্যামিলে চৌটার্ড বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চায়ন কমে গেছে। কিন্তু মূল বার্তাটি এসেছে আরও বড় পর্যায় থেকে, সার্বভৌম বাহ্যিক ঝুঁকির সূচক নিচের দিকে রয়েছে।
ব্লুমবার্গের খবর বলছে, সামষ্টিক অর্থনৈতিক ঝুঁকি কমাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ। ক্যামিলে চৌটার্ড আরও বলেন, আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় অর্থনৈতিক রক্ষাকবচ তৈরি করতে চাচ্ছে বাংলাদেশ। কারণ, আমদানিতে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চায়ন উধাও হয়ে যাচ্ছে।
এরইমধ্যে নিয়ম করে লোডশেডিংয়ের ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ঘাটতির কারণে ডলার মজুত করার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এক বছর আগের তুলনায় বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চায়ন কমে হয়েছে ৩ হাজার ৯৬৭ কোটি মার্কিন ডলার। আগের বছর যেটা ছিল ৪ হাজার ৫৫১ কোটি ডলার।
ইউক্রেন যুদ্ধের আগে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রত বর্ধমান ছিল বাংলাদেশের অর্থনীতি। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিভিন্নভাবে সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য নতুন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ভবিষ্যৎ প্রয়োজন বিবেচনায় রেখে আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয়নি।
মুডিসের ক্যামিলে চৌটার্ড বলেন, চলতি হিসাব ঘাটতিতে বাজে অবস্থা তৈরি হয়ে যেতে পারে। কারণ, রেমিট্যান্স কমেছে। রফতানি চাহিদাও বেশি নয়। আর খাদ্য ও জ্বালানি মূল্যের গতিও ঊর্ধ্বমুখী। আর সাম্প্রতিক বন্যার কারণে পরিস্থিতি আরও বেশি খারাপ অবস্থার দিকে চলে গেছে।
এদিকে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ভারত, নেপাল, মালদ্বীপ ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সম্প্রতি জাপান ভিত্তিক নিক্কেই এশিয়া পত্রিকা বলছে, এসব দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি সবচেয়ে সুসংহত।