আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের বিরুদ্ধে মার্কিন কর্তৃপক্ষের লড়াইয়ের প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করতে তিনদিনের মধ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা দ্বিতীয় রাজ্য এটি।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম বলেন, সোমবার (১ আগস্ট) জারি করা এ জরুরি অবস্থা অঙ্গরাজ্যটিকে মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধে সরকারি প্রতিক্রিয়া সমন্বয় করতে সাহায্য করবে। খবর গার্ডিয়ানের।
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার আগে জরুরি অবস্থা জারি করা হয় সান ফ্রান্সিসকো এবং নিউইয়র্কেও।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৯ জুলাই) রাতে নিউইয়র্কজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন রাজ্যের গভর্নর ক্যাথি হোচুল। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় আমাদের চলমান প্রচেষ্টাকে আরও শক্তিশালী করার জন্য আমি রাজ্যজুড়ে ‘দুর্যোগ জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করছি।
গভর্নর ক্যাথি জানান, যুক্তরাষ্ট্রে মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত প্রতি চারজনের মধ্যে অন্তত একজন নিউইয়র্কের বাসিন্দা।
এর আগে, ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকো শহরে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) এ সতর্কতা জারি করে অঞ্চলটির কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ভাইরাসটির সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে সবাইকে সতর্ক থাকতেও বলা হয়।
সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি মাঙ্কিপক্স নিয়ে বিশ্বব্যাপী ‘জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা’ জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। যে কোনো স্বাস্থ্য সংকটে এটিই সংস্থাটির জারি করা সবচেয়ে জোরাল সতর্কতা।
গত ২৩ জুলাই মাঙ্কিপক্স ভাইরাস সম্পর্কিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি কমিটির দ্বিতীয় বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেয়া হয়। এতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী মাঙ্কিপক্সের বিস্তার আন্তর্জাতিক উদ্বেগের পাশাপাশি জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতার পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সারা বিশ্বের সরকার মাঙ্কিপক্সের ক্রমবর্ধমান প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালালেও, এটি আরও ছড়িয়ে পড়ার ‘সুস্পষ্ট ঝুঁকি’ রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ইউরোপ হলো মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের বিশ্বব্যাপী প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রস্থল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঙ্কিপক্স বসন্তের একটি বিশেষ ধরন। সংক্রামক হলেও রোগীর সংস্পর্শে না এলে এই রোগ ছড়ায় না। বিভিন্ন বানর জাতীয় প্রাণীর মাধ্যমে এটি ছড়ায়। এছাড়া শ্বাসনালি, শরীরে তৈরি হওয়া কোনো ক্ষত, নাক কিংবা চোখের মাধ্যমেও অন্যের শরীরে প্রবেশ করতে পারে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস।
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই ভাইরাস সম্পর্কে সবাইকে বিস্তারিত জানার আহ্বান জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। কীভাবে মাঙ্কিপক্স ছড়াচ্ছে তা চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়েও জোর দিয়েছে সংস্থাটি। এছাড়া ভাইরাসটির বিরুদ্ধে কার্যকর অ্যান্টিভাইরাল ভ্যাকসিন গ্রহণের ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।