অল্পের জন্য পারমাণবিক বিপর্যয় থেকে বিশ্ব রক্ষা পেয়েছে বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ইউক্রেনের বিদ্যুৎ গ্রিড থেকে রুশ নিয়ন্ত্রিত জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে তেজস্ক্রিয়তা বিপর্যয় নিয়ে ইউরোপজুড়ে শঙ্কা দেখা দেয়। খবর বিবিসির।
জেলেনস্কি বলেন, শুধু আলাদা বিদ্যুৎ–ব্যবস্থা সচল থাকার কারণে জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিরাপদে কাজ চালিয়ে যেতে পেরেছে।
গত বুধবার তোলা স্যাটেলাইট চিত্রগুলোতে দেখা গেছে, জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক স্থাপনাটির আশপাশে বড় একটি এলাকাজুড়ে আগুন জ্বলছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণে বৈদ্যুতিক সংযোগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে জাপোরিঝঝিয়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
জাপোরিঝঝিয়া ইউরোপের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। স্থাপনাটির আশপাশে ইউক্রেন ও রুশ বাহিনীর পাল্টাপাল্টি হামলার কারণে এর নিরাপত্তা নিয়ে ক্রমশই উদ্বেগ বাড়ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত্রিকালীন ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, ‘যদি ডিজেলচালিত জেনারেটর চালু করা না হতো; বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর যদি স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা সচল ও সেখানে কর্মরত আমাদের কর্মীরা ব্যবস্থা গ্রহণ না করত, তাহলে আমাদের তেজস্ক্রিয়তা বিপর্যয়ের পরিণতি সামাল দিতে হতো।’
ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের কারণে এই ক্ষয়ক্ষতি হয়। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিদ্যুকেন্দ্রের গ্রিডের সঙ্গে কিছু সময়ের জন্য জাপোরিঝঝিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি কমিশন (আইএইএ) সতর্ক করে বলেছে, পারমাণবিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য গ্রিড থেকে একটি নিরাপদ ‘অফসাইট’ বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকা অপরিহার্য।
এই ক্ষয়ক্ষতির জন্য রাশিয়ার গোলাবর্ষণকে দায়ী করেছেন জেলেনস্কি। ইউক্রেন ও ইউরোপকে পারমাণবিক বিপর্যয়ের ‘শেষ ধাপে’ নিয়ে গেছেন বলেও মস্কোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তিনি।
তবে রাশিয়ার নিয়োগ দেওয়া স্থানীয় গভর্নর ইয়েভজেনি বালিতস্কি হামলার জন্য ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে দায়ী করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে ওই অঞ্চলকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রাখার অভিযোগ করেছেন তিনি।