প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের চলমান সংঘাত ও রোহিঙ্গা পরিস্থিতির বিষয়ে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। গত রাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ৭৭তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, মিয়ানমারে অস্থিরতা, সংঘাত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দুরূহ করে তুলেছে। এ দেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘ মেয়াদে অবস্থান আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকিতে ফেলছে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে মানবাধিকার ও শান্তির প্রতি অঙ্গীকার তুলে ধরেন। জাতিসংঘ ব্যবস্থার প্রতি সমর্থন জানানোর পাশাপাশি কভিড মহামারির শিক্ষা নিয়ে এটি সংস্কারের আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিষয়ে জাতিসংঘসহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, ২০১৭ সালে স্বদেশ থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে তাদের গণহারে বাংলাদেশে প্রবেশের পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে গত মাসে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরিতে দ্বিপক্ষীয়, ত্রিপক্ষীয় এবং জাতিসংঘসহ অন্যান্য অংশীজনকে নিয়ে আলোচনা সত্ত্বেও একজন রোহিঙ্গাকেও তাদের মাতৃভূমিতে ফেরত পাঠানো যায়নি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মিয়ানমারে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সশস্ত্র সংঘাত বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনকে আরো দুরূহ করে তুলেছে। আশা করি, এ বিষয়ে জাতিসংঘ কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘায়িত উপস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ, নিরাপত্তা এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। তাদের প্রত্যাবাসনের অনিশ্চয়তা সর্বস্তরে ব্যাপক হতাশার সৃষ্টি করেছে। মানবপাচার, মাদক চোরাচালানসহ আন্ত সীমান্ত অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ পরিস্থিতি উগ্রবাদকেও ইন্ধন দিতে পারে। এ সংকট প্রলম্বিত হতে থাকলে তা এই উপমহাদেশসহ বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।’