জার্মানির অর্থমন্ত্রী রবার্ট হাবেক জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে তাঁর দেশ অর্থনৈতিক মন্দায় ডুবে আছে। তবে আশার কথা, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মন্দার যে চেহারা হবে বলে অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করেছিলেন, তার চেয়ে ভালো জায়গায় আছে জার্মানি। জার্মান সরকার আগে থেকেই এ বিষয়ে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেওয়ায় মন্দার দাপট কিছুটা হলেও কম হবে।
সংবাদমাধ্যমকে বুধবার এ মন্তব্যের পাশাপাশি জার্মান অর্থমন্ত্রী জানান, পুতিন অর্থনৈতিক যুদ্ধ শুরু করেছেন। যার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে পশ্চিমের অর্থনীতিতে।
রবার্ট জানিয়েছেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর অর্থনীতিবিদদের ধারণা ছিল ২০২৩ সালে জার্মান অর্থনীতি দুই দশমিক পাঁচ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু, বাস্তবে তা শূন্য দশমিক চার শতাংশ কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০২২ সালে দুই দশমিক দুই শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে বলে মনে করা হয়েছিল, বাস্তবে তা এক দশমিক চার শতাংশ হয়েছে। ফলে, এ বছরও বৃদ্ধির হার কম। এই দুয়ের যোগফলেই ২০২৩ সালে জার্মানিতে মন্দা দেখা দেবে।
ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতি জার্মানি, সেখানে এই অবস্থা হলে বাকি দেশগুলোতেও যার যথেষ্ট প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে, রবার্ট আশ্বস্ত করে বলেছেন, ‘অর্থনীতির পূর্বাভাস ভালো নয়, কিন্তু তা আরও খারাপ হতে পারত। সরকার আগে থেকেই ব্যবস্থা নেওয়ায় বিষয়টি আয়ত্ত্বের মধ্যে রাখা গেছে।’
গ্রিন পার্টির এই রাজনীতিবিদ জানিয়েছেন, সরকার ব্যবস্থা না নিলে অর্থনীতির পতন তিন থেকে নয় শতাংশ পর্যন্ত হতে পারত। তবে, একইসঙ্গে এদিন তিনি জানিয়েছেন, যুদ্ধের প্রভাব ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে। পুতিন যা চেয়েছিলেন, তা তিনি পাননি। ইউক্রেনে রাশিয়া মুখ থুবড়ে পড়েছে। ফলে পরিস্থিতির উন্নতি হবেই বলেই তাঁর বিশ্বাস। তবে, যুদ্ধের জন্য জার্মানি সবচেয়ে বিপর্যস্ত হয়েছে এনার্জি ক্ষেত্রে। এই সমস্যাটি জার্মানিকে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে সংকটে ফেলেছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তবে, একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, এখনও জার্মানির শক্তিভাণ্ডার ফুরিয়ে যায়নি। কিন্তু, এনার্জি ক্ষেত্রে ব্যাপক সমস্যা দেখা দিয়েছে।
রবার্ট জানিয়েছেন, শুধু এনার্জি ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ার ফলে ২০২২ সালে জার্মানির মুদ্রাস্ফীতি আট শতাংশে পৌঁছেছে। ২০২৩ সালে তা সাত শতাংশ থাকবে বলে সরকার মনে করছে।