আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বাঙালি জাতির ওপর পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর চালানো নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ডকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট কংগ্রেসে একটি প্রস্তাব আনা হয়েছে। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ তথা হাউস অব রিপ্রেজেন্টিভসে শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন রো খান্না ও স্টিভ চ্যাবট নামে রিপাবলিকান দুই আইনপ্রণেতা।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানের ২৩ বছরের শোষণ থেকে মুক্তির আন্দোলন শুরু করে বাঙালি জাতি। সেই আন্দোলন চিরতরে স্তব্ধ করে দিতে ওই বছরের ২৫ মার্চ রাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী।
‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের সেই অভিযানে কালরাতের প্রথম প্রহরে ঢাকায় চালানো হয় গণহত্যা। তারপর ৯ মাসে ৩০ লাখ বাঙালিকে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী। পাকিস্তানের সেই হত্যাযজ্ঞের প্রতিরোধে নামে নামে বাঙালিরা। রক্তক্ষয়ী সেই সংগ্রামের পথ ধরে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
এখন পর্যন্ত সেই গণহত্যার স্বীকৃতি দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। তবে ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশন একাত্তরে বাংলাদেশিদের ওপরে পাকিস্তানিদের হত্যাযজ্ঞকে ‘জেনোসাইড বা গণহত্যা’ বলে স্বীকৃতি দেয়।
একাত্তরে পাকিস্তানের চালানো সেই গণহত্যার প্রায় ৫০ বছর পর মার্কিন কংগ্রেসে ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশে গণহত্যার স্বীকৃতি’ শীর্ষক একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনপ্রণেতা রো খান্না বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালায়।
বাঙালি ও হিন্দুদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। প্রস্তাবে সেই হত্যাকাণ্ডকে গণহত্যার স্বীকৃতি দেয়ার আবেদন করা হয়েছে। পাশাপাশি গণহত্যার জন্য বাংলাদেশের নাগরিকদের কাছে পাকিস্তানের ক্ষমার আহ্বান জানানো হয়েছে।
স্টিভ বলেছেন, ১৯৭১ সালের বাংলাদেশে চালানো গণহত্যার ঘটনা ভুলে যাওয়া ঠিক হবে না। সেই গণহত্যার স্বীকৃতির জন্য আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছি।
এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেন, গণহত্যায় লাখ লাখ মানুষের প্রাণ হারিয়েছে। সেই স্মৃতি কখনোই মুছে ফেলা উচিত নয়। গণহত্যার এই স্বীকৃতি ইতিহাসের ভিতকে আরও মজবুত করবে। মার্কিন নাগরিকরা কখনোই এই ধরনের অপরাধ ভুলে যাবে না। এই স্বীকৃতি অপরাধীদের সেই বার্তাই দেবে।