আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ব্যাপক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও জন্মহারে সর্বনিম্ন রেকর্ড হয়েছে পূর্ব এশিয়ার দ্বীপ রাষ্ট্র জাপানে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২২ সালে ৭ লাখ ৯৯ হাজার ৭২৮ জন শিশুর জন্ম হয়েছে, যা ৪০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথমবারের মতো জাপানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ৮ লাখের নিচে নেমে এল। ১৯৮২ সালে দেশটিতে ১৫ লাখ শিশু জন্ম নেয়। চার দশকের ব্যবধানের তা অর্ধেকে নেমেছে।
জাপানে গত বছর ১৫ লাখ ৮০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে একটি রেকর্ড।
গত এক দশকের বেশি সময় ধরে জাপানে জন্মের হারকে ছাড়িয়ে গেছে মৃত্যু। একই সঙ্গে কমছে কর্মক্ষম জনসংখ্যা। যা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির জন্য একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা তৈরি করেছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, জাপানের জনসংখ্যা ১৯৮০ এর দশকের অর্থনৈতিক উত্থানের পর থেকে ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে। ২০২১ সালে দাঁড়ায় ১২ কোটি ৫৫ লাখে।
জাপানের স্থিতিশীল জনসংখ্যার জন্য নারী প্রতি সন্তান ধারণ সক্ষমতা ২ দশমিক ১ হলেও বর্তমানে তা ১ দশমিক ৩।
বিশ্বে সর্বোচ্চ আয়ুসম্পন্ন দেশের একটি জাপান। ২০২০ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে, জাপানে দেড় হাজার মানুষের মধ্যে প্রায় একজনের বয়স ছিল ১০০ বা তার বেশি।
সব প্রবণতা মিলিয়ে গত জানুয়ারিতে সতর্কতা জারি করেন প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। দেশের অর্থনীতি ও সমাজের স্থায়িত্বের কথা চিন্তা করে শিশু-পালনকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নীতি হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
আগামী এপ্রিলে জাপানে জন্মহার নিয়ে নতুন একটি সংস্থা কাজ করবে। শিশু-সম্পর্কিত কর্মসূচিতে ব্যয় দ্বিগুণের কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
জন্মহার কমায় ভূমিকা রাখছে বিভিন্ন সামাজিক কারণ। এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয়, আবাসনের সীমিত পরিসর ও শহর অঞ্চলে শিশুদের লালন-পালনে সহায়তার অভাব।
২০২২ সালে আর্থিক প্রতিষ্ঠান জেফরিজের গবেষণা অনুসারে, শিশু লালন-পালনে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল স্থানগুলোর মধ্যে একটি জাপান। এ ছাড়া আয় নিয়েও দেশটিতে অসন্তুষ্টি রয়েছে।