বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

হঠাৎ করে কেন এত বিদ্যুৎ সংকট এর মুখে বাংলাদেশ ?

হঠাৎ করে কেন এত বিদ্যুৎ সংকট এর মুখে বাংলাদেশ ?

ডেস্ক রিপোর্ট :
জ্যৈষ্ঠের তীব্র গরমে জনজীবন যখন হাঁসফাঁস করছে তখন ঘন ঘন লোডশেডিং সেই জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে। ঘরের বাইরের প্রখর রোদ আর গরমের উত্তাপে ঘরের মধ্যেও মানুষজন থাকতে পারছে না। বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাপমাত্রা অত্যধিক বৃদ্ধির কারণে বিদ্যুতের চাহিদাও বেড়েছে। আবার জ্বালানি সংকট ও রক্ষণাবেক্ষণের কারণে বেশ কিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন এখন বন্ধ। এ অবস্থায় চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না বিদ্যুৎ বিভাগ।

শিগগিরই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশ্বাস জানিয়ে রবিবার (৪ জুন) গ্রাহকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি জানান, দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। কিন্তু চলমান লোডশেডিংয়ের মধ্যেই দেশের সবচেয়ে বড় কয়লাভিত্তিক পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন আজকের পর থেকে কয়লার মজুদ শেষ হওয়ায় পুরোপুরি বন্ধ হতে যাচ্ছে। এতে দেশে মে মাস থেকে শুরু হওয়া লোডশেডিং আরও খারাপ পরিস্থিতির দিকে যাবে। বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, জুন মাসজুড়েই লোডশেডিংয়ের জন্য দেশবাসীকে ভুগতে হবে।

জ্বালানি সংকটের কারণে দেশব্যাপী চলমান মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে শিশু থেকে বয়স্ক সব শ্রেণির গ্রাহক। রাতে-দিনে সমানতালে হচ্ছে লোডশেডিং। কী গ্রাম কী শহর- লোডশেডিং থেকে কোথাও রেহাই মিলছে না। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, বৃষ্টির জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। আর বৃষ্টি না ঝরলে এবং তাপমাত্রা না কমলে লোডশেডিং পরিস্থিতিরও কোনো উন্নতি হবে না বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

সারা দিনের দৈনন্দিন কাজ সামলাতে মানুষজন ভোগান্তিতে পড়ছে। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষ। মধ্যরাতে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ঘুমে ব্যাঘাত হচ্ছে। শিশুরা পরদিন স্কুলে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, চলমান লোডশেডিং জুন মাসজুড়ে থাকবে। রাজধানীতে এখন দিন-রাত মিলিয়ে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার মতো লোডশেডিং হচ্ছে। এর চেয়েও ভয়াবহ অবস্থা গ্রামাঞ্চলের। সেখানে দিন-রাত মিলিয়ে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। শহরে প্রতিদিন ছয় থেকে আটবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হচ্ছে। আর প্রতিবার ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং হচ্ছে। গ্রামে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ শহরের দ্বিগুণ বা এরও বেশি।

পিজিসিবি’র ওয়েবসাইট থেকে দেখা যায়, কয়েক দিন ধরে মধ্যরাতের পর সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, রাত ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ লোডশেডিং হচ্ছে। রাত ১০টার পর বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যায় গড়ে প্রায় ২ হাজার মেগাওয়াট। স্বাভাবিক সময়ে রাতে বিদ্যুতের চাহিদা কমে গেলেও গরমের কারণে কয়েক দিন ধরে তা হচ্ছে না। এ জন্য লোডশেডিংও বেশি হচ্ছে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহে দেশে তীব্র লোডশেডিং হয়। মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় সাময়িক স্বস্তি মিললেও তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে আবারও লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। তাপমাত্রা বেশি অনুভূত হওয়ায় কয়েক দিন ধরে বিদ্যুতের চাহিদা দৈনিক ১৬ হাজার মেগাওয়াটের কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে। এতে দৈনিক দেড় থেকে আড়াই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের লোডশেডিং করতে হচ্ছে। আবার রাতে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় লোডশেডিং আরও বেড়ে যাচ্ছে।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা, গ্যাস ও তেলের অভাবসহ রক্ষণাবেক্ষণের কারণে এখন ৫০টির বেশি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ আছে। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা এখন ২৩ হাজার ৩৭০ মেগাওয়াট হলেও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও জ্বালানি সংকটের কারণে গড়ে অন্তত ৪ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা ১১ হাজার ৩৯ মেগাওয়াট। কিন্তু গতকাল বেলা ১২টা পর্যন্ত গ্যাস স্বল্পতার কারণে উৎপাদন করা হয় ৬ হাজার ৩৯৩ মেগাওয়াট। অন্যদিকে ফার্নেস তেল ও ডিজেল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৭ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। কিন্তু রবিবার (৪ জুন) উৎপাদন করা হয়েছে ২ হাজার ৬৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। আর কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৩ হাজার ৪৪০ মেগাওয়াট। কিন্তু একই দিনে উৎপাদিত হয় ১ হাজার ৯৯২ মেগাওয়াট।

ডলারের অভাবে বিল বকেয়া পড়ায় কয়েক মাস ধরে কয়লা কিনতে না পারায় দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র পায়রার একটি ইউনিট ২৫ মে বন্ধ হয়ে যায়। মজুদ শেষ হওয়ায় দ্বিতীয় ইউনিটটিও সোমবার (৫ জুন) এর পর বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। এ কেন্দ্র থেকে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। এটি বন্ধ হলে লোডশেডিং আরও বৃদ্ধি পাবে। ৩ জুন দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৩ হাজার ৬৩৫ মেগাওয়াট আর উৎপাদন হয় ১১ হাজার ৬৪৭ মেগাওয়াট। ঘাটতি ছিল ১ হাজার ৯৮৮ মেগাওয়াট। আর রবিবার (৪ জুন) দুপুর ১২টা পর্যন্ত চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে সরবরাহ হয় ১১ হাজার ৯০৫ মেগাওয়াট। ঘাটতি ছিল ২ হাজার ২৮৭ মেগাওয়াট।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এই ক’দিন আমরা গ্যাসচালিত বিদ্যুৎ দিয়ে সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করছি। কিন্তু এর পরও চাহিদা ও সরবরাহের পার্থক্য রয়ে গেছে। অত্যধিক গরমের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিজেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলো দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয়বহুল হওয়ায় আমরা কম ব্যবহার করি। পিক আওয়ারে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চালানো হয়। সাধারণত এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো রাতে চালানো হয়। ফলে দিনে লোডশেডিং করতে হয়। রাতে সাড়ে ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিনের চেয়ে বেশি লাগে। ফলে তখন লোডশেডিংও বেশি হয়। একদিকে বৈশ্বিক সংকট, অন্যদিকে পরিবেশও আমাদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করছে। দুটো মিলিয়ে লোডশেডিং বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কয়লা নিয়ে আগের যে সমস্যায় আমাদের পড়তে হয়েছে, ভবিষ্যতে আর পড়তে হবে না বলে আশা করছি। আগের চেয়ে জ্বালানির দাম ও ডলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) পরিচালক (জনসংযোগ পরিদফতর) মো. শামীম হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তাপমাত্রা কমে এলে বা এক পসলা বৃষ্টি হলেই বিদ্যুতের চাহিদা তিন থেকে ৪ হাজার মেগাওয়াট কমে আসবে। এ ছাড়া আপাতত নাটকীয় কোনো পরিস্থিতি তৈরি না হলে অবস্থার পরিবর্তন হবে না। নতুন কোনো একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র যে দুই সপ্তাহের মধ্যে আসবে এমন সম্ভাবনাও নেই। ফলে খুব তাড়াতাড়ি লোডশেডিং নিয়ে স্বস্তির কোনো খবর নেই।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, কখন কী ধরনের বিদ্যুতের চাহিদা হয় এ ব্যাপারে পিডিবি থেকে সরকারকে আগেই জানানো হয়েছিল। আমরা উৎপাদন সক্ষমতা বাড়িয়েছি। আবার আদানির বিদ্যুৎও এর মধ্যে জাতীয় গ্রিডে এসেছে। সব মিলিয়ে চাহিদামতো বিদ্যুৎ উৎপাদন করার কাঠামোগত কোনো সমস্যা নেই। গত বছরও এ সমস্যা ছিল, চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি সরবরাহ করতে পারিনি। কোন ধরনের জ্বালানি সরবরাহ করা যাবে আর কোনটি যাবে না, কোনটিতে খরচ তুলনামূলক কম হবে এসব বিচার-বিশ্লেষণ করে জ্বালানির চাহিদা বের করা কঠিন ছিল না। এই পরিকল্পনা আগে থেকে নেওয়া যেত।

তিনি আরও বলেন, খাদ্য সংকট হলে যেমন মানুষ মারা যায়, একইভাবে জ্বালানি সংকট হলে অর্থনীতি মারা যায়। এ বিষয়টি জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়েরও বোঝা উচিত। আমরা জানি, প্রতিবার কোন মাসে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। সে হিসেবে কোন জ্বালানি ব্যবহার করে সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় তা অজানা নয়। এ জন্য কী পরিমাণ জ্বালানি প্রয়োজন তাও আমাদের জানা। তাহলে সরকার কেন এ জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করে রাখতে পারল না। যতদূর জানি পিডিবি থেকে এ বিষয়গুলো অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানানো হলেও মন্ত্রণালয় বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি। আর গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে এখন সংকট তীব্র হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ, লোডশেডিং হতে পারে আরও দুই সপ্তাহ 

অর্থনৈতিক কারণে প্রায় দুই মাস আগে থেকে চেষ্টা করেও কয়লা, তেল ও গ্যাসের জোগান দিতে না পারায় বেশ কিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালানো যাচ্ছে না। ফলে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও প্রায় দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। গতকাল মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি জানি লোডশেডিং বড় হওয়ায় পরিস্থিতিটা অসহনীয় হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে আমরা চেষ্টা করছি এটা কত দ্রুত সমাধান করা যায়। সরকারের পক্ষ থেকে এটা সমাধানের চেষ্টা চলছে যে কত দ্রুত অন্তত পায়রায় (পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র) কয়লা নিয়ে আসা যায়। ওটা বর্তমানে অর্ধেক ক্যাপাসিটিতে চলছে। বড়পুকুরিয়ায় অর্ধেক ক্যাপাসিটিতে চলছে। আমাদের লিকুইড ফুয়েল যে পাওয়ার প্লান্টগুলো ছিল সেগুলোও প্রায় অর্ধেক ক্যাপাসিটিতে চলছে। এসব কারণে আমাদের লোডশেডিংয়ের মাত্রা অনেক বেশি বেড়ে গেছে।

তিনি বলেন, আমাদের এখানে বিশেষ করে লোডশেডিংয়ের জায়গাটা বেড়ে গেছে। আমরা বারবার বলে আসছিলাম যে আমাদের ফুয়েলগুলো- গ্যাস, কয়লা ও তেল; আমাদের দীর্ঘ সময় লাগছে এগুলো জোগান দিতে। এ কারণে কিন্তু আমাদের লোডশেডিংয়ের জায়গাটা ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। এখন যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, এটার আকারটা বেশ খানিকটা বড় হয়ে গেছে।

সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে নসরুল হামিদ বলেন, ঢাকার আশপাশসহ গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় আমরা সকাল থেকে এটা মনিটর করছি। আমরা বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা চেষ্টা করছি অচিরেই এ অবস্থা থেকে কীভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। আমরা আশা করব আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব এখান থেকে বেরিয়ে আসার। কারণ আমাদের কয়লা, তেল, গ্যাসের জোগান দিতে হচ্ছে, আবার ইন্ডাস্ট্রিতেও গ্যাস দিতে হচ্ছে। এসব পরিস্থিতি একসঙ্গে এসেছে।

তিনি বলেন, আবহাওয়ার যে অবস্থা দেখছি আমরা, হিট ওয়েভের জায়গাটা বেড়ে গেছে। ৩৮ ডিগ্রির কাছাকাছি চলে গেছে, কোনো জায়গায় ৪১ ডিগ্রি হয়ে গেছে। এ কারণে পিক আওয়ারে ডিমান্ডও বেড়ে গেছে। আমাদের হাতে যে মজুদ ছিল পাওয়ার প্লান্ট, যা আমরা নিরবচ্ছিন্ন রাখার জন্য প্রস্তুত রাখছিলাম, সেটিও বিশেষ করে জ্বালানির কারণে আমরা দিতে পারছি না। কিন্তু পাওয়ার প্লান্ট আমাদের নিজেদের কাছে আছে।

নসরুল হামিদ বলেন, আমরা কিছু জায়গায় কিছুটা লোডশেডিং করছি। আমাদের কয়লা, গ্যাস ও তেলের শর্টেজ। আমরা ঠিকমতো জোগান দিতে পারছি না। সে কারণে এ ঝামেলাটা হচ্ছে। আমি মনে করি এটা খুব সাময়িক। এটা নিয়ে এত হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এরই মধ্যে জোগানের চেষ্টা হয়ে গেছে। চেষ্টা করছি অন্তত দুই সপ্তাহের মধ্যে আমরা একটা ভালো পরিস্থিতিতে যেতে পারব।

তিনি বলেন, আমরা দুই মাস আগে থেকে চেষ্টা করছিলাম। এর কারণ এসব পরিস্থিতি আগে থেকে সামাল না দিলে সমাধান হয় না। আমরা জানতাম এ রকম একটা পরিস্থিতিতে যেতে পারে। সে রকম সমাধান নিয়ে আমরা চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু সার্বিকভাবে আমাদের অনেক কিছু দেখতে হয়। অর্থনৈতিক বিষয় আছে, সময়মতো এলসি (আমদানি ঋণপত্র) খোলার বিষয় আছে, সময়মতো জ্বালানি পাওয়ার বিষয় আছে। সেই বিষয়গুলো কিন্তু আমাদের একসঙ্গে সমন্বয় করে নিতে হয়। আশার কথা হচ্ছে, সামাল দেওয়ার একটা ব্যবস্থা হয়ে গেছে। আমাদের সেই সময়টুকু দিতে হবে। এক-দুই সপ্তাহ কিছুটা কষ্ট ভোগ করতে হবে সবাইকে।

তিনি বলেন, আমরা দেখছি প্রায় আড়াই হাজার মেগাওয়াটের লোডশেডিং হচ্ছে। আশা করছি লোডশেডিং ধীরে ধীরে কমিয়ে আনতে পারব।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech