নিউজ ডেস্ক:
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানিতে আপিল বিভাগের সনদ (এনরোলমেন্ট) ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। ফলে আদালতে ঢুকতে না পেরে আপিল বিভাগের সামনে অনেক আইনজীবী অপেক্ষা করছেন।
খালেদার জামিন শুনানিতে প্রধান বিচারপতির আদালতে দুইপক্ষে ৩০ জন করে মোট ৬০ জন আইনজীবী থাকার অনুমতি দিয়েছেন। আদালতের ঢুকতে না পেরে অপেক্ষা করা আইনজীবীদের মধ্যে কেউ কেউ একে অপরের ছবি তুলে দিচ্ছেন, অনেকে সেলফিও তুলছেন।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) এ জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে প্রধান বিচারপতির আদালতে সকাল ৯টায় কেবলমাত্র সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের তালিকাভুক্ত আইনজীবী ও সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়। আপিল বিভাগের সনদ ছাড়া কোনো আইনজীবীকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।
এর আগে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চে খালেদার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব আদালতে আইনজীবী প্রবেশের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। আদালতকে তিনি বলেন, ‘আমাদের আইনজীবীদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। শত শত আইনজীবী আমাদের বাইরে দাঁড়িয়ে। ওদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ডিএজি, এএজিরা কোর্টের ভেতরে এসে বসে আছেন।’
তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনার জুনিয়ররা তো থাকতে পারবে। আর আজ (বৃহস্পতিবার) এ মামলার শুনানিতে কেবলমাত্র মামলা সংশ্লিষ্টরাই আদালতে থাকবে।’
এ প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এ মামলার শুনানিতে একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক আইনজীবীকে আদালতে থাকার অনুমতি দেয়া হোক।’
সেই সময় খালেদার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘আমরা এতে রাজি আছি। এরপর প্রধান বিচারপতি বলেন, আচ্ছা এ মামলার শুনানিতে তাহলে ৩০ জন করে একেক পক্ষের আইনজীবী থাকবে।’
এদিকে খালেদার জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) পুরো সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা নেয়া করা হয়েছে। সকাল থেকেই কোর্টের প্রতিটি প্রবেশপথ ও আদালত চত্বরের অভ্যন্তরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যদের দেখা গেছে।
এছাড়া অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের সামনে এবং বার ভবন থেকে মূল কোর্ট ভবনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা চোখে পড়ার মত। এর বাইরে আদালত অঙ্গনে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার বাড়তি সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।
সকাল ৮টা থেকেই আর্চওয়ে এবং মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করে আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী, সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্টদের পরিচয়পত্র দেখে আদালত চত্বরে প্রবেশ করানো হয়।
গত ৫ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চে ২১০ মিনিটের ‘নজিরবিহীন’ হট্টগোল হয়। সেদিন একপর্যায়ে এজলাস ছেড়ে চলে যান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
আদালত কক্ষের ওই হট্টগোলের প্রেক্ষাপটে প্রধান বিচারপতির আদালত কক্ষে ৮টি সিসি (ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এর বাইরে প্রায় সাড়ে ৩শ’ সিসি ক্যামেরায় পুরো সুপ্রিম কোর্ট মনিটরিংয়ের আওতায় রয়েছে।
এছাড়া খালেদা জিয়ার আজকের (বৃহস্পতিবার) জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে মৎস্য ভবন ও শিক্ষা ভবনের মোড়সহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য দায়িত্ব পালন করছে।