ডেস্ক রিপোর্ট :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি মুণ্ডুহীন একটি দল। তারা দেশে একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। তারা জানে তাদের নেতা নেই। একটা পলাতক আসামি আরেকটা কারাগারের আসামি। সেই দল এ দেশে নির্বাচন হতে দিতে চায় না।
আজ সোমবার (১৩ নভেম্বর) খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে আয়োজিত আওয়ামী লীগের বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা বক্তব্য দেন।
বিএনপির আন্দোলন ও কর্মসূচির তীব্র সমালোচনা করে উপস্থিত দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, কেউ যদি বাসে আগুন লাগাতে আসে তাহলে ওই হাত ওই আগুনে পুড়িয়ে দেবেন। উপযুক্ত শিক্ষা দিয়ে দেবেন যাতে আর কেউ সাহস না পায় এভাবে মানুষের ক্ষতি করতে। আমি পোড়া মানুষগুলোর দুরবস্থা দেখেছি। চোখে পানি রাখা যায় না। ওদের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ নেই। প্রত্যেক এলাকায় এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দেবেন আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে তাদেরকেও আপনারা নিরাপত্তা দেবেন, আমি এ আহ্বান জানাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য যা কিছু করার আমিই করেছি। আমি ১৯৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় ছিলাম তাদের বেতন ছিল ৮০০ টাকা। আমিই তাদের বেতন চার বার বৃদ্ধি করেছি। কোন সরকার তা বাড়িয়েছে? এরশাদ সরকার ও খালেদা জিয়ার সরকার গার্মেন্ট শ্রমিকদের জন্য কিছু করেনি। গার্মেন্ট শ্রমিকদের এরপরও আন্দোলন কেনো? এ ভাঙচুর কেনো? যারা এ ভাঙচুরের জন্য দায়ী, তাদের খুঁজে বের করা হবে।
দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সরকারের নানা পদক্ষেপের বিবরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের তরুণরা বসে থাকবে কেন? তারা চাকরির পেছনে দৌড়াবে কেন? আমরা তরুণদের প্রশিক্ষণ দিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তারা নিজেরাই কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাকে দেশের মানুষ বারবার ভোট দিয়েছে। আমি দেশের জন্য কাজ করি। আমার আর কিছুই চাওয়া-পাওয়ার নেই। একজন মানুষ আপনজন হারানোর শোক সইতে পারে না। আমি আমার ছোট বোনকে ছাড়া মা বাবা ও ভাইদের হারিয়েছি। আমার বিচার চাওয়ারও এখতিয়ার ছিল না। আমার মা ও বাবাকে হত্যাকারীদের বিচারের পথ রুদ্ধ করে জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছে। এরশাদ হত্যাকারীদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে। আর খালেদা জিয়া তাদের সংসদে নিয়ে বসিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি দেশের সন্ত্রাস ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি। তাদের একটিই গুণ তা হলো মানুষ খুন। ইতোমধ্যে আমরা ঘোষণা করেছি, কেউ আগুন সন্ত্রাসীদের ধরিয়ে দিতে পারলে তাকে বিশ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার একটাই লক্ষ্য দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করা। আমি দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বহাল আছে বলেই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি মানেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। তারা গত ২৮ অক্টোবর কীভাবে পুলিশ ও সাংবাদিকদের পিটিয়েছে। রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। তাদের মধ্যে বিন্দুমাত্র মনুষ্যত্ববোধ আছে বলে আমি মনে করি না।
বিএনপি মানুষের জন্য কাজ করে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপিনেত্রী এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে দণ্ডিত হয়েছে। আরেকজন নেতা দুর্নীতি করে লন্ডনে বসে এখন সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তার নির্দেশেই এখন দেশে আগুন সন্ত্রাস চলছে।