ডেস্ক রিপোর্ট :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের নাগরিক, করদাতা, ব্যবসায়ী এবং জনগণকে প্রয়োজনীয় কর সেবা প্রদানের পাশাপাশি রাষ্ট্রের রাজস্ব ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) জাতীয় আয়কর দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার দেওয়া এক বাণীতে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
‘আমরা বদলে যাব, আমরা বদলে দেব’ স্লোগানকে সামনে রেখে প্রতি বছরের মতো এবারও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উদ্যোগে জাতীয় আয়কর দিবস পালিত হচ্ছে জেনে আনন্দ প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে তিনি দেশের সম্মানিত সব করদাতা এবং আয়কর বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। পাশাপাশি যারা এ বছর সেরা করদাতা সম্মাননা পাচ্ছেন তাঁদের অভিনন্দন জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের রূপকল্প ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের রূপকল্পগুলো বাস্তবায়নে বাজেট লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অপরিহার্য। সম্মানিত করদাতাদের সার্বিক সহযোগিতা ও অংশগ্রহণের মাধ্যমেই কেবল সেই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। আনন্দমুখর পরিবেশে কর প্রদান, তাৎক্ষণিক ই-টিআইএন প্রদান, অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল, আয়কর রিটার্ন পূরণে সহয়তা, ই-চালান, ই-টিডিএস সিস্টেম এবং তথ্যসেবা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে কর বিভাগের সঙ্গে সম্মানিত করদাতা, অংশীজন ও নাগরিকদের মেলবন্ধনে দেশে আজ কর সংস্কৃতির এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।’
‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর বিভিন্ন উদ্ভাবনী কর্মসূচি দেশের রাজস্ব-বান্ধব সংস্কৃতি গড়ার ক্ষেত্রে শক্তিশালী ভূমিকা রাখছে’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, করদাতাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশের কর কার্যালয়গুলোতে একযোগে নভেম্বর মাসব্যাপী ‘আয়কর তথ্য-সেবা মাস’ এর মাধ্যমে করসেবা প্রদান করা হয়েছে। করদাতাদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে করসেবা গ্রহণ ও কর প্রদানের মাধ্যমে রাজস্ব ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়েছে। পাশাপাশি কর সংস্কৃতির বিকাশ, কর সচেতনতা বৃদ্ধি এবং করদাতাদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জিত হয়েছে।’
ইতোমধ্যে নতুন আয়কর আইন, ২০২৩ প্রণীত ও কার্যকর হয়েছে জেনে প্রধানমন্ত্রী আনন্দিত হয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, ‘এটি আমাদের সরকারের অন্যতম সাফল্য। দেশের মানুষ এখন স্ব-প্রণোদিত হয়ে আনন্দের সঙ্গে কর প্রদান করছেন। এ বছরই আমরা প্রথমবারের মতো ট্যাক্স রিটার্ন প্রিপেয়ারার সিস্টেম প্রবর্তন করেছি। এ সিস্টেমের মাধ্যমে প্রান্তিক করদাতাগণ অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে পারছেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জেনে আনন্দিত যে, এনবিআর করদাতাদের রিটার্ন দাখিলের সুবিধার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে এ বছর প্রথমবারের মতো করশূন্য রিটার্ন দাখিলকারী করদাতাদের জন্য অনলাইনে এক পৃষ্ঠার রিটার্ন দাখিলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রাপ্তি স্বীকার এবং সনদ দুটো পাওয়া যাবে। ফলে এই শ্রেণির করদাতাদের কর অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এ ধরনের সৃজনশীল ও সমন্বিত কাজের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ তথা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের দৃঢ় প্রত্যয়ে দেশের সামগ্রিক কর ব্যবস্থাপনাকে গণমুখী ও অধিকতর তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।