ডেস্ক রিপোর্ট :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি আজকের দিনে স্মরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যিনি এই ভাষা আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন।
আজ বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি আমাদের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। তারা রক্তের অক্ষরে বলে গেছে মায়ের ভাষাতে কথা বলতে চাই। সেই সালাম রফিক, বরকত, জব্বারসহ যারা একুশে ফেব্রুয়ারিতে জীবন দিয়েছিল তাদেরকে স্মরণ করি। আমি ধন্যবাদ জানাই আজকের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য। যারা আমাদের মাতৃভাষায় কথা বলার আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। সেই সংগ্রামে যারা প্রয়াত হয়েছে তাদেরকে শ্রদ্ধা জানাই।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ দেশের অগ্রণী লেখক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০০৩ এ যারা ভূষিত হয়েছেন আমি তাদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। ফেব্রুয়ারি মাস আমাদের ভাষা আন্দোলনের মাস। এই আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে বাঙালির সত্তা জাগ্রত হয় এবং এই পথ বেয়েই পেয়েছি আমাদের স্বাধীনতা। আমি আজকের দিনে স্মরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। আমি স্মরণ করি ৩০ লক্ষ শহীদ মা বোনকে। ৩ নভেম্বর আমাদের জাতীয় চার নেতাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে তাদেরকেও শ্রদ্ধা জানাই। সকল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আমার সশ্রদ্ধ সালাম।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, একই সাথে আমি বেদনার সাথে জানাচ্ছি ১৫ আগস্ট, ৭৫ সাল ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং আমাদের বাঙালির জাতির সত্তার প্রতিষ্ঠাতা এবং জাতি রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা যিনি জাতির মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছিলেন। শোষিত বঞ্চিত মানুষকে একটা উন্নত জীবন দিতে চেয়েছিলেন। ৩ বছর সাত মাস তিন দিন সময় পেয়েছিলেন, একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলেছিলেন ও শোষিত এবং বঞ্চিত মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে অনেক দূর দেশকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। বাংলাদেশ স্বল্প উন্নত দেশের মর্যাদা পেয়েছিল।
এর আগে আজ অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধনী মঞ্চে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১১টি ক্যাটাগরিতে ১৬ জন এই পুরস্কার পান। গত ২৪ জানুয়ারি একাডেমির সচিব ড. মো. হাসান কবির স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হয়।
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ প্রাপ্তরা হলেন— কবিতায় শামীম আজাদ, কথাসাহিত্যে নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর ও সালমা বাণী, প্রবন্ধ/গবেষণায় জুলফিকার মতিন, অনুবাদে সালেহা চৌধুরী, নাটক ও নাট্যসাহিত্যে মৃত্তিকা চাকমা ও মাসুদ পথিক, শিশুসাহিত্যে তপংকর চক্রবর্তী, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় আফরোজা পারভীন ও আসাদুজ্জামান আসাদ, বঙ্গবন্ধু বিষয়ক গবেষণায় সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল ও মো. মজিবুর রহমান, বিজ্ঞান/কল্পবিজ্ঞান/পরিবেশ বিজ্ঞানে ইনাম আল হক, আত্মজীবনী/স্মৃতিকথা/ভ্রমণকাহিনী/মক্তগদ্যে ইসহাক খান, ফোকলোরে তপন বাগচী ও সুমনকুমার দাশ।
বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা।