ডেস্ক রিপোর্ট :
সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্থ করতে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা গত বছর ২৮ অক্টোবর থেকে সহিংস কর্মসূচির মাধ্যমে সারাদেশে ৬০০ এর অধিক যানবাহনে ভাঙচুর করেছে এবং নাশকতার ঘটনার ১৩ জন নিহত হয়েছে। হরতাল ও অবরোধের নামে নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
বুধবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আবদুল্লাহর এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এ তথ্য জানান। এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গত বছর ২৮ অক্টোবর হতে এ ধরনের সহিংস কর্মসূচির মাধ্যমে সারাদেশে ৬০০ এর অধিক যানবাহনে ভাঙচুর যার মধ্যে ১৮৪টি যাত্রীবাহী বাস; ৪৮টি ট্রাক, ২৮টি কাভার্ড ভ্যান/মালবাহী লরি/কনটেইনার; ৩টি সিএনজি; ৪টি প্রাইভেটকার; ১১টি পিক আপভ্যান। ৫টি ট্রেন-যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেন: ঢাকা কমিউটার ট্রেন; মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন; বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন; টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেন। ১৫টি মোটরসাইকেল; ৩টি লেগুনা; ১টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিস (মধ্যরামপুরা, ফেনী): ১টি অটোরিকশা।
এছাড়া ১টি উচ্চ বিদ্যালয় (চর শাহা উচ্চ বিদ্যালয়, সোনাগাজী, ফেনী): ১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়- ধলাইপার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ; পূর্ব চান্দনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জয়দেবপুর গাজীপুর; টিএনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গাজীপুর সদর; মাস্টারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হাতিবান্ধা, লালমনিরহাট: পড়শীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গফরগাঁও, ময়মনসিংহ; নিশ্চিন্ত পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্দর, চট্টগ্রাম; বাজিতখিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেরপুর; মৌচাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কালিয়াকৈর, গাজীপুর: হরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নান্দাইল, ময়মনসিংহ; ঙ মনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ময়মনসিংহ; পুলেরঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাকুন্দিয়া, কিশোরগঞ্জ: ৪টি বসতঘর; দক্ষিণ পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দৌলতপুর, খুলনা। ১টি বৌদ্ধ মন্দির (রাম-কক্সবাজাব। ১টি নৌকা, সর্বমোট ৩২৮টি যানবাহন ও প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো আহত হরতাল-অবরোধে ড্রাইভার, হেলপার, পুলিশ, বিজিবি, শ্রমিক, মুক্তিযোদ্ধাসহ বহু লোক নিহত, আহত ও পঙ্গুত্ববরণ করেছে এবং বিএনপি ক্যাডাররা অসংখ্য যানবাহন জ্বালিয়ে দিয়েছে। হরতাল অবরোধের নামে নাশকতার ঘটনায় সারাদেশে ১৩ জন নিহত হয়েছে। যার মধ্যে ট্রেনে নাশকতার ঘটনায় নিহত হয়েছে ৯ জন, বিজিবির ০২ জন আহত এবং ০১টি রিকুইজিশনকৃত যানবাহনের ক্ষতিসাধন হয়। আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিভিন্ন জেলায় ৪৫ জন সদস্য আহত হয়েছে।
বিআরটিসি বাস ডিপোর বাস রক্ষা করতে গিয়ে ১ জন আনসার সদস্য ইট পাটকেলের আঘাতে আহত হয়। এদের মধ্যে ২ জন আনসার সদস্য হোসেন আলী ও সুমন আলী বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়। তাদের বাহিনীর পক্ষ থেকে চিকিৎসা সেবা ও আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়েছে;
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, অগ্নি-সন্ত্রাস, নাশকতা, অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড প্রভৃতি অপরাধে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য দেশে দক্ষ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, বিচার ব্যবস্থা ও প্রচলিত আইন রয়েছে। হরতাল ও অবরোধের নামে নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক বিভিন্ন আইনী কার্যক্রম চলমান রয়েছে।