বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে ডুবে যাওয়া কার্গো উদ্ধার নিয়ে সংশয়

বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে ডুবে যাওয়া কার্গো উদ্ধার নিয়ে সংশয়

নিউজ ডেস্ক:

বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে দুর্ঘটনায় ডুবে যাওয়া এমভি মো. দুদু মিয়া (রা.)-১ নামের সিমেন্ট তৈরির উপাদান (ক্লিংকার) বোঝাই কার্গোটিকে উদ্ধার করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ উদ্ধারকারী নৌযানের ওজনের থেকে ডুবে যাওয়া নৌযানের ওজন প্রায় আট গুণ বেশি হওয়ায় এটি দ্রত উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়েছে। আর একই কারণে কার্গোটি নৌ-চ্যানেল থেকে সরিয়ে নেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না।

ডুবে যাওয়া কার্গোটি দ্রুত উদ্ধার কিংবা সরিয়ে না নেওয়া হলে নৌ-চ্যানেলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই এটি দ্রুত উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন অপর নৌযান চালক ও মালিকরা।

বিআইডব্লিউটিএ’র উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভীকের কমান্ডার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ডুবে যাওয়া কার্গোটির মালামালসহ ওজন ১৮০০ টন। পানিতে ডুবে এটির ওজন আরও বেড়েছে। আর উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভীকের উদ্ধার ক্ষমতা ২৫০ টন। তাই এ মুহূর্তে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করা নির্ভীকের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে, রোববার (১৫ ডিসেম্বর) ভোরে উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভীকের ডুবুরিদের নদীর তলদেশে জাহাজের অবস্থান পর্যবেক্ষণে পাঠানো হয়।

ডুবুরি রবিউল ইসলাম জানান, ডুবে যাওয়া নৌযানটি বাম দিকে কাত হয়ে আছে। এটি দ্রুত উদ্ধার করা না হলে পলি পড়ে আরও আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ফলে উদ্ধারকাজ আরও কঠিন হয়ে যাবে।

স্থানীয় লঞ্চ মালিকরা বলছেন, বরিশালের এ কীর্তনখোলা নদীতে প্রতিদিন অসংখ্য নৌযান চলাচল করে। এছাড়া কলকাতা থেকে নারায়ণগঞ্জগামী পণ্যবাহী নৌ চলাচলের রুটও এটি। আর যেখানে কার্গোটি ডুবেছে সেখান দিয়ে নৌযান নিয়মিত চলাচল করে। বিশেষ করে যেসব জাহাজের বেশি পানির প্রয়োজন হয়, সেসব বড় আকারের নৌযান ডুবে যাওয়া কার্গোটির আশপাশ দিয়ে চলাচল করে। এক কথায় কার্গোটি নৌ-চ্যানেলের মধ্যে ডুবেছে। তাই ডুবে যাওয়া নৌযানটি দ্রুত উদ্ধার না করা হলে নৌপথ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে এমভি শাহরুখ-২ লঞ্চটি প্রায় ৩৫০ জন যাত্রী নিয়ে বরগুনা থেকে ঢাকা যাচ্ছিল। বরিশাল নদীবন্দর সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদী দিয়ে যাওয়ার সময় চট্টগ্রাম থেকে আসা অ্যাংকর সিমেন্টের ১২০০ মেট্রিক টন ক্লিংকারবাহী এমভি মো. দুদু মিয়া (রা.)-১ নামের একটি কার্গোর সঙ্গে লঞ্চটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে লঞ্চের সামনের অংশের তলা ফেটে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সিমেন্ট তৈরির ১২০০ মেট্রিক টন উপাদান (ক্লিংকার) বাহী কার্গোটি নদীতে ডুবে যায়।

লঞ্চের যাত্রীসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, নদীতে বাঁক থাকা সত্ত্বেও এমভি শাহরুখ-২ লঞ্চটি প্রচণ্ড গতিতে চলছিল এবং কার্গোটিও নিয়ম না মেনে নদীর বাম দিক ঘেষে যাচ্ছিল। আকস্মিক বিকট শব্দে সংঘর্ষের পর লঞ্চটি কার্গোর সঙ্গে আটকে যায়। কার্গোটি মুহূর্তের মধ্যে ডুবতে শুরু করে এবং লঞ্চটির সামনের তলার অংশ ফেটে যাওয়ায় এর যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে ঝুঁকি এড়াতে তাৎক্ষণিক লঞ্চটি চরকাউয়া খেয়াঘাট সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদী তীরে নোঙর করে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়।

অপরদিকে স্থানীয় খেয়াঘাট ও স্পিডবোট ঘাট থেকে নৌযান নিয়ে দ্রুত লোকজন উদ্ধারে এগিয়ে এলে ডুবে যাওয়া কার্গোর আরোহীদের তাৎক্ষণিক উদ্ধার করা সম্ভব হয়।

এমভি শাহরুখ-২ লঞ্চের সুপারভাইজার সেলিম হোসেন মারুফ বলেন, নদীর বাঁকে এসে তারা ডান দিকে টার্নিং করার সময় কার্গোর চালক লঞ্চের দিকে ঘুরিয়ে দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ যুক্তি খণ্ডন করে দুর্ঘটনার শিকার কার্গো এমভি মো. দুদু মিয়া (রা.)-১ এর জি এম আনসার আলী হাওলাদার বলেন, লঞ্চের ভুলের কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech