ডেস্ক রিপোর্ট :
৩১ দিন পর অক্ষত অবস্থায় মুক্তি পেলেন সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকা বাংলাদেশি ২৩ নাবিক ও জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। গতকাল শনিবার বিমান থেকে ফেলা মুক্তিপণের ডলারভর্তি তিনটি ব্যাগ জলদস্যুদের হাতে পৌঁছানোর আট ঘণ্টা পর নাবিকসহ জাহাজটিকে মুক্ত করা হয়। শনিবার দিবাগত রাতেই জাহাজটি নিয়ে নাবিকরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্দরের উদ্দেশে রওনা দেন। তবে কি পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে জলদস্যুরা ২৩ বাংলাদেশি নাবিক ও জাহাজটিকে মুক্তি করলো, তাই নিয়ে এখন আলোচনা চলছে।
যদিও এ নিয়ে কোনো স্পষ্ট তথ্য দেয়নি জাহাজ সংশ্লিষ্ট কোনো পক্ষই। মুক্তিপণ নিয়ে জানতে চাইলে কেএসআরএম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম রবিবার দুপুরে নগরের আগ্রাবাদে কেএসআরএম কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেনিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও সোমালিয়ার আইন অনুয়ায়ী জাহাজটি সমঝোতার সব প্রক্রিয়া বৈধভাবে হয়েছে। সমঝোতার শর্ত অনুযায়ী অনেক বিষয় প্রকাশ করতে পারব না আমরা।’ এভাবেই মুক্তপণ নিয়ে জাহাজটির মালিকপক্ষ, বিমা কোম্পানি ও সোমালিয়ার দস্যুদের কেউই সরাসরি কোনো কথা বলেননি। তবে সোমালিয়ার স্থানীয় গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এসব সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, সোমালিয়ার দস্যুরা ৫ মিলিয়ন বা ৫০ লাখ ডলার মুক্তিপণ পেয়ে জাহাজটি ছেড়ে দিয়েছে।
যেখানে শুরু থেকেই শোনা যায়, নাবিকসহ জাহাজটি জিম্মি করে এতদিন রাখা হয় মূলত মুক্তিপণের দর কষাকষি নিয়ে। তাই ধারণা করা হচ্ছে, মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ নিয়ে তবেই জাহাজ ও নাবিকদের মুক্ত করেছে সোমালিয়ার দস্যুরা। দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডেইলি সোমালিয়া অনলাইনের এক্স (সাবেক টুইটার) বার্তায় বলা হয়, পাঁচ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে জাহাজটি ছেড়ে দিয়েছে দস্যুরা। আরেকটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যম পান্টল্যান্ড মিররের এক্স বার্তায় স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়, পাঁচ মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ নেওয়ার পর জলদস্যুরা জাহাজটি ছেড়ে দিয়েছে।
পান্টল্যান্ড পোস্টের অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঁচ মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ আদায়ের পর দস্যুরা জাহাজটি ছেড়ে দিয়েছে। জলদস্যুরা তীরে অবতরণের সময় সেখানে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছিলেন।
জানা যায়, জলদস্যুরা চলে যাওয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের দু’টি যুদ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যায়। উল্লেখ্য,এর আগে ২০১০ সালে ছিনতাই হওয়া একই কোম্পানির জাহাজ এমভি জাহান মণিও ১০০ দিনের মাথায় ছেড়ে দেয় দস্যুরা। সে সময় সোমালিয়ার এক সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, জাহাজটি মুক্ত করতে চার মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করে মালিকপক্ষ, যদিও এর সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।