ডেস্ক রিপোর্ট :
২০২৫ সালের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে ৬১৮ এমএমসিএফডি (মিলিয়ন স্ট্যান্ডার্ড কিউবিক ফিট পার ডে) গ্যাস যুক্ত করার আশায় দেশের বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্রে মোট ৪৮টি কূপ খনন সম্পন্ন করতে চায় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন পেট্রোবাংলা।
আগামী বছরের মধ্যে পেট্রোবাংলার নিজস্ব কোম্পানি ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ কাজ করা হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পেট্রোবাংলার এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা সময়মতো পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের বিষয়ে বেশ সিরিয়াস এবং যদি প্রয়োজন হয় তবে আমরা সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া এড়াতে বাধ্যতামূলক সম্ভাব্যতা সমীক্ষার বিধান থেকে ছাড় চাইব।’
বিদ্যুৎ, শিল্পসহ বিভিন্ন খাত যখন গ্যাস সংকটের সম্মুখীন তখন জাতীয় গ্রিডে ৬১৮ এমএমসিএফডি বা প্রতিদিন ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সংযোজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
সরকারি নথি অনুসারে, পরিকল্পিত ৪৮টি কূপের মধ্যে ২৩টি বাপেক্সের (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড) রিগ (কূপ খননযন্ত্র) ব্যবহার করে খনন করা হবে। বাকি ২৫টি ক্র্যাশ প্রোগ্রামের আওতায় বিদ্যমান অনশোর গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে ঠিকাদারদের দ্বারা খনন করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পেট্রোবাংলার আরেক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘স্থানীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে সরকারের চলমান পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এসব কূপ খনন করা হবে।’
তবে সরকারের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে কিছু কূপের অনুমোদন প্রক্রিয়া বাকি থাকায় তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সূত্র জানায়, রিজার্ভ কমে যাওয়ায় গ্যাসের উৎপাদন কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে পেট্রোবাংলা এ কর্মসূচি হাতে নেয়।
দেশের মোট ২৯টি গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ এমএমসিএফডি গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে এবং প্রায় ৪ হাজার এমএমসিএফডি গ্যাস চাহিদা মেটাতে আরও ১ হাজার এমএমসিএফডি গ্যাস আমদানি করা হচ্ছে।
কর্মকর্তারা বলেছেন, স্থানীয় ক্ষেত্রগুলোর গ্যাস উৎপাদন দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে, গ্যাসের মজুদ কমে যাচ্ছে।
বর্তমানে দেশে মোট ৩০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ) গ্যাসের মধ্যে ৯ টিসিএফ গ্যাস মজুদ রয়েছে। ২১ টিসিএফ ইতোমধ্যে উত্তোলন করা হয়েছে।
সারা দেশে গ্যাসভিত্তিক অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও নতুন নতুন শিল্পকারখানা স্থাপিত হওয়ায় গ্যাসের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে।
পেট্রোবাংলার একটি প্রক্ষেপণের দৃশ্য অনুযায়ী, ২০২৯-৩০ সালে দেশে গ্যাসের চাহিদা বেড়ে দাঁড়াবে ৫ হাজার ৯২ এমএমসিএফডি, ২০৩৪-৩৫ সালে ৬ হাজার ৭২ এমএমসিএফডি এবং ২০৪০-৪১ সালে ৬ হাজার ৯৮৬ এমএমসিএফডি।পেট্রোবাংলার আরেক কর্মকর্তা জানান, প্রকৃতপক্ষে ৪৮টি কূপ খননের পরিকল্পনা চলমান পরিকল্পনারই অংশ, যার আওতায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি কূপ খননের কাজ শেষ হয়েছে।
এসব কূপের মধ্যে রয়েছে ভোলা উত্তর-২, টগবী-১, ইলিশা-১, শ্রীকাইল উত্তর-১, শরীয়তপুর-১, তিতাস-২৪, বিয়ানীবাজার-১, কৈলাশটিলা-২, সিলেট-১০, রশিদপুর-২ ও সুন্দলপুর-৩।
নতুন খননকৃত এসব কূপ এখন জাতীয় গ্রিডে ১২৬ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহে অবদান রাখছে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।