কোমল পানীয়র সাথে নেশাজাত দ্রব্য মিশিয়ে এক গৃহবধূকে অচেতন করে ধর্ষণ ও আপত্তিকর ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে কয়েক লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে।
সোমবার (২৬ আগস্ট) সকালে ওই গৃহবধূ নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা করেছেন। মামলার তদন্তকারী সংস্থা ডিবি পুলিশ সোমবার রাতেই অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃত পুলিশ কনস্টেবলের নাম সাব্বির আহমেদ মেহেদী। তিনি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের মালিগাঁও গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেনের ছেলে এবং সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকার পদ্মকুড়ি স্কুল সংলগ্ন মিজানুর রহমানের বাড়ির ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করেন। সে নারায়ণগঞ্জ নৌ পুলিশে কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, একজন নারী ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন। তবে অভিযুক্ত সাব্বির আহম্মেদ মেহেদী পুলিশের কনস্টেবল কিনা তা জানি না। মামলাতেও সে কথা উল্লেখ নেই। ডিবি পুলিশ মামলাটি তদন্ত করবে। তখন জানা যাবে সে পুলিশে আছে কিনা।
ওই গৃহবধূ জানান, আমি আমার দুই মেয়ে সন্তানকে নিয়ে মতিঝিল মডেল স্কুলে আসা যাওয়ার সুবাধে সাব্বির আহম্মেদ মেহেদীর সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে মোবাইল ফোনে কথা হতো। এক পর্যায়ে দুইজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত ৭ আগস্ট সাব্বির আমাকে ফোন করে বলে যে জরুরি কথা আছে। তখন আমি আমার ভাইয়ের বাসা নারায়ণগঞ্জ শহরের উত্তর চাষাঢ়ায় আছি বলে জানাই। আর জরুরি কথা হলে বাসায় আসতে বলি। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সাব্বির আমার ভাইয়ের বাসায় আসার সময় সঙ্গে একটি কোকাকোলার বোতল নিয়ে আসে। সে আমাকে কোকাকোলা খাওয়ানোর পর আমি অচেতন হয়ে যাই। তখন বাসায় কোনো লোকজন না থাকার সুযোগে সে আমাকে ধর্ষণসহ আপত্তিকর ছবি তুলে রাখে।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে আমার জ্ঞান ফিরলে সাব্বির আমাকে হুমকি দিয়ে বলে -‘তোমার নোংরা ছবি আমার কাছে আছে। বিষয়টি কাউকে জানালে আমি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেবো।’ এ সুযোগে আরও কয়েকবার সে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে আমাকে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে অশ্লীল ছবির ভয় দেখিয়ে ৩ লাখ টাকা দাবি করে। পরে মানসম্মানের ভয়ে দুই লাখ টাকা দেই। আর সাব্বির আমার কিছু স্বর্ণের গহনা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে সাব্বির বাকি এক লাখ টাকা দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে এবং গত ১১ আগস্ট বিকাশের মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা দেই। পরে আমি সাব্বিরকে আর টাকা দিব না বললে তার মোবাইলের অশ্লীল ছবিগুলো আমার মোবাইলে পাঠিয়ে দেয়। এসব ছবি আমার স্বামীর মোবাইলসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়াসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হমকি দেয়। তাই ভয়ে ভাইয়ের বাসায় এসে থাকছি। এ ঘটনায় সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর এনামুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মেহেদী নামে এক যুবককে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি নারায়ণগঞ্জ নৌ পুলিশে কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত।