আকিব মাহমুদ:
বিক্রেতারা বলছেন, শনিবার এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ দর্শনার্থী এসেছেন। আশা করছি বিক্রিও বাড়বে। এছাড়া এখন থেকে প্রতিদিনই মেলা জমবে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) সরেজমিনে মেলাপ্রাঙ্গণ ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।
মেলা ঘুরে দেখা যায়, শনিবার সকালে মেলার প্রধান ফটক খুলে দেওয়ার পরপরই শুরু হয় দর্শনার্থীর প্রবেশ। সারিবদ্ধভাবে প্রধান ফটক দিয়ে টিকিট দেখিয়ে মেলাপ্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে থাকেন তারা।
এদিকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা। মেলাপ্রাঙ্গণে আসতে শুরু করেন সব বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশুরা। দর্শনার্থী বেশি হওয়ায় বেশ খুশি বিক্রেতারাও। দর্শনার্থী বেশি হলে মেলা প্রাণ ফিরে পায় বলেও মনে করেন তারা।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে মেলায় আসা হাবিবা আক্তার নামে এক দর্শনার্থী বলেন, মেলার প্রাণ ক্রেতা-দর্শনার্থী। তারা এলে মেলার প্রাণ আসে, না এলে মেলা জমে না। এর আগে মেলার তৃতীয় দিন এসেছিলাম, দর্শনার্থী ছিল না। আজ মেলায় দর্শনার্থী বেশি হওয়ায় খুব ভালো লাগছে।
সোহেলি নামে অপর এক দর্শনার্থী বলেন, কেনাকাটা করতে মেলায় আসা। মানুষ বেশি হলে ভালো লাগে, ভালো পণ্য দোকানিরা বের করে রাখেন, দেখে নেওয়ার সুযোগ থাকে।
শফিক নামে চামড়া ও পণ্যের বিক্রেতা বলেন, এখন পর্যন্ত শনিবারই মেলায় দর্শনার্থীর আগমন ঘটেছে বেশি। তাদের আগমন হলে আমাদের বিক্রি বাড়ে। আশা করি আজ তার ব্যতয় ঘটবে না।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা যায়, এবারের বাণিজ্যমেলায় বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের চারটি দল সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে। নিরাপত্তার জন্য র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে থাকছে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যমেরা।
মেলার দুই প্রান্তে দু’টি শিশু পার্ক, দু’টি দৃষ্টি নন্দন ফোয়ারা, একটি ইকো পার্ক, একটি মা ও শিশু কেন্দ্র, একটি বঙ্গবন্ধু প্যাভেলিয়ন এবং একটি ইপিবির তথ্য সেবাকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। রয়েছে ডিজিটাল এক্সপেরিয়েন্স সেন্টার (ডিজিটাল টাচ স্ক্রিন প্রযুক্তি), যার মাধ্যমে ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা নির্দিষ্ট স্টল ও প্যাভিলিয়ন অতি সহজে খুঁজে বের করতে পারেন।
এছাড়া পর্যাপ্ত এটিএম বুথ, রেডিমেট গার্মেন্ট পণ্য, হোমটেক্স, ফেব্রিকস পণ্য, হস্তশিল্প, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহস্থালী ও উপহারসামগ্রী, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। আরও আছে তৈজসপত্র, সিরামিক, প্লাস্টিক পলিমার পণ্য, কসমেটিকস হারবাল ও প্রসাধনী সামগ্রী, খাদ্য ও খাদ্যজাত পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, ইমিটেশন ও জুয়েলারি, নির্মাণ সামগ্রী ও ফার্নিচার সামগ্রী।
মেলায় সবমিলিয়ে ৪৫০টি স্টল রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ৬১টি, প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন ৪৭টি, সাধারণ প্যাভিলিয়ন ১০, সাধারণ মিনি প্যাভিলিয়ন ৮৫টি, প্রিমিয়ার স্টল ৮৪টি, রেস্টুরেন্ট দু’টি, সংরক্ষিত প্যাভিলিয়ন আটটি, সংরক্ষিত মিনি প্যাভিলিয়ন ছয়টি, বিদেশি প্যাভিলিয়ন ২৭টি, বিদেশি মিনি প্যাভিলিয়ন ১১টি, বিদেশি প্রিমিয়ার স্টল ১৭টি, স্ন্যাক্স বুথ আটটি ও ফুড স্টল ৩৫টি।
এছাড়া সাধারণ ৫০টি স্টলের মধ্যে নারীদের জন্য রয়েছে ২০টি স্টল। বাংলাদেশ ছাড়াও ঢাকা আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যমেলায় ২৩টি দেশের বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে।
এর মধ্যে রয়েছে- ভারত, পাকিস্তান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, ভুটান, নেপাল, ভিয়েতনাম, মালদ্বীপ, জাপান, ইটালি, দুবাই, ডেনমার্ক, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ব্রাজিল, ফিলিপাইন, রাশিয়া, জার্মানি, তাইওয়ান ও হংকং।