নিজস্ব প্রতিবেদক:
রোববার (১২ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশনের এক অনানুষ্ঠানিক সভায় এমনই মত দেন নির্বাচন কমিশনাররা। ওই সভায় নির্বাচন কমিশনের আইন শাখার কর্মকর্তাদের ডেকে রিটের সবশেষ অবস্থা জানতে নির্দেশনা দেয় কমিশন।
কমিশনের বৈঠক সূত্র জানায়, আগামী ২ মার্চ ভোটার দিবস উদযাপন বিষয়ে আলোচনা হয়। এসময় জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার সরস্বতী পূজার কারণে ভোটের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়টি উত্থাপন করেন। অন্য নির্বাচন কমিশনরারও আলোচনায় অংশ নেন। পরে ইসির আইন শাখার কর্মকর্তাদের কাছে রিট আবেদনের সবশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত থেকে এখনও কোনো রায় পাওয়া যায়নি। পরে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়।
সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটিতে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আদালতে একটি রিট আবেদন হয়েছে। আদালত কোনো নির্দেশনা দিলে তা আমরা সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবো।
সরস্বতী পূজার কারণে নির্বাচন পেছানোর জন্য দু’দফা আবেদন করেছে বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। নির্বাচন পেছানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানিয়েছে শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ। এছাড়া একই কারণে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদনও করেছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অশোক কুমার ঘোষ।
অন্যদিকে গত ৯ জানুয়ারি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ভোট পেছানোর একটি আবেদনও করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে ১০ জানুয়ারি ভোট পেছাতে ইসি সচিব মো. আলমগীরকে একটি সুপারিশও ইসিতে পাঠিয়েছে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন।
রোববার (১২ জানুয়ারি) রিট আবেদনটি বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অশোক ঘোষ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর উস সাদিক।
পরে অশোক ঘোষ জানান, রোববারের (১২ জানুয়ারি) কার্যতালিকায় বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে রিট আবেদনটি ৩৮ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে। কিন্তু বিষয়টি এখতিয়ার বর্হিভূত হওয়ায় আদালত অন্য বেঞ্চে নিতে বলেন। এরপর বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হয়। আদালত বলেছেন সোমবার (১৩ জানুয়ারি) এটি কার্যতালিকায় আসবে এবং শুনানি হবে।
ডেপুটি অ্যাটির্নি জেনারেল নূর উস সাদিক বলেন, আবেদনটির ওপর সোমবার দুপুর দুইটায় শুনানি হবে।
ইসি সূত্র জানান, আদালতের নির্দেশনা এলে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ভোটের তারিখ পরিবর্তন নিয়ে আবারও বসবে কমিশন।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি/সমমান পরীক্ষা। ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার। জুমার দিন সাধারণ নির্বাচন সম্পন্ন করা যায় না। আবার ৩০ জানুয়ারি আগে ভোট করার সুযোগও কম। এক্ষেত্রে হয় এসএসসি/সমমান পরীক্ষা পেছাতে হবে, অন্যথায় নির্বাচন পরীক্ষা শেষে মার্চে নিয়ে যেতে হবে।
সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী, করপোরেশনের মেয়াদ হচ্ছে প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। সে অনুযায়ী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালের ১৩ মে, ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালের ১৬ মে। আর ভোটের আয়োজন করতে হয় মেয়াদ পূর্তির পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে।