বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

ফ্লাইওভারে দুই মরদেহ, ক্লু পাচ্ছে না পুলিশ

ফ্লাইওভারে দুই মরদেহ, ক্লু পাচ্ছে না পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজধানীর কুড়িল ফ্লাইওভারের পৃথক স্থান থেকে গলায় গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, শ্বাসরোধ করে তাদের হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। মাস পেরিয়ে গেলেও ওই দুটি হত্যাকাণ্ডের ক্লু বের করা সম্ভব হয়নি।

ভাটারা থানাধীন কুড়িল ফ্লাইওভারের ওপর গত ৯ ডিসেম্বর দিনগত রাত আড়াইটার দিকে গলায় গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় আক্তার হোসেন নামে এক স্বর্ণ কারিগরের মৃতদেহ উদ্ধার করে। উদ্ধারের পরপরই পুলিশ সাংবাদিকদের জানিয়েছিল, ধারণা করা হচ্ছে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

ফ্লাইওভারের ওপর পৃথক স্থান থেকে দু’টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদেহ দুটি উদ্ধারের ঘটনাস্থল একটি ভাটারা থানা আরেকটি পড়ে খিলক্ষেত থানায়।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুক্তারুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ওই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কোনো সুখবর দেওয়ার মতো এখনো সময় আসেনি। তবে আমরা আশা করি শিগগিরই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হবে। তবে তিনি জানান, ওই ফ্লাইওভারের ওপরে কোনো সিসি ক্যামেরা নেই। ফ্লাইওভারের বাতিগুলো জ্বলে না।

তিনি আরো জানান, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তাদের সঙ্গে কারো দ্বন্দ্ব ছিল না। অন্য কারো সঙ্গেও তাদের কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না।

তবে আমরা বিভিন্নভাবে তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। উদ্ঘাটনের পরে বিস্তারিত জানা যাবে আসলে কারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল।

একই সময় খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বোরহান উদ্দিন জানান, এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আমাদের পুলিশ এখনো কাজ করে যাচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের কারা জড়িত ছিল সেটি উদঘাটন হলে আপনাদের জানানো হবে। গত ৩ জানুয়ারি দিনগত মধ্য রাতে কুড়িল ফ্লাইওভারের ওপর থেকে গলায় মাফলার প্যাঁচানো অবস্থায় মনির হোসেনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদেহ শনাক্ত করেছেন তার স্ত্রী। আমাদের টিম এখনো কাজ করছে।

তিনিও বলেন, ফ্লাইওভারের ওপর কোনো সিসি ক্যামেরা নেই। ফ্লাইওভারের বাতিগুলো সব সময় নষ্ট থাকে। অন্ধকার থাকে। কারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা তদন্তের পর জানা যাবে।

নিহত মনির হোসেনের স্ত্রী শাহনাজ পারভীন হ্যাপির সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার স্বামীর সঙ্গে কারো কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না। কে তার স্বামীকে হত্যা করেছে তা তিনি বুঝতে পারছেন না। দুই সন্তানকে নিয়ে তিনি আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় থাকেন বলে জানান। কাজ করেন একটি পোশাক কারখানায়। তার স্বামী উত্তরায় সততা টেইলার্সে চাকরি করতো।

তিনি জানান, গত ৩ জানুয়ারি তার স্বামী বাসা থেকে কাজে বের হয়ে যায়। সেদিন অল্প অল্প বৃষ্টি ছিল। গলায় মাফলার দিয়ে বেরিয়েছিল। রাত ৯টার দিকে তার সঙ্গে শেষ কথা হয়। স্বামী তাকে জানান ফিরতে দেরি হবে। পরে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। পরের দিন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করে না পেয়ে ৫ তারিখে তিনি উত্তরা থানায় যান। সেখানে একটি পত্রিকায় লাশ উদ্ধারের খবর দেখে। লাশের পরনের কাপড় চোপড়ের সঙ্গে স্বামীর কাপড়-চোপড়ের মিল পান। সঙ্গে সঙ্গে থানায় অফিসারকে জানান। পরে ঢাকা মেডিক্যালের মর্গে তিনি স্বামীর লাশ শনাক্ত করেন।

নিহত মনির গাইবান্ধা সদর উপজেলার উত্তর গিডারি পুরানভিটা গ্রামের মৃত রমজান আলীর সন্তান।

নিহত আক্তার হোসেনের পিতা মফিজুর রহমানের সঙ্গে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান, ৭ ডিসেম্বর রাত ১২টার দিকে ছেলে তাকে কল দিয়ে কী লাগবে জানতে চেয়েছিলেন। তিনি একটা গামছা আর একজোড়া নরম স্যান্ডেল আনতে বলেছিলেন। এটাই ছিল ছেলের সঙ্গে তার শেষ কথা।

তিনি জানান, ছেলেকে কে হত্যা করলো কেন হত্যা করলো কিছুই বুঝতে পারছেন না। ঢাকার ভাটারা সলমাইড খন্দকার বাড়ি এলাকায় মায়ের দোয়া কুমিল্লা জুয়েলার্স দোকানটি চালাতো তার ছেলে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech