চলতি বছর রাজধানীসহ সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়িয়েছে। চলতি আগস্ট মাসের ১১ দিনে মোট আক্রান্তের ৫০ শতাংশেরও বেশি ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে সরকারি হিসাব অনুযায়ী, মারা গেছেন ৪০ জন। তবে বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি দাবি করা হচ্ছে।
গত বছর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী রাজধানী ঢাকায় সীমাবদ্ধ থাকলেও এবার দেশের সব বিভাগেই ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। রাজধানীসহ সারাদেশের মানুষের মধ্যে ডেঙ্গু আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক আতঙ্কিত না হয়ে জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শে রক্ত পরীক্ষা করে ডেঙ্গু হয়েছে কিনা-তা নিশ্চিত হতে অনুরোধ জানিয়েছেন। ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজধানীর সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষা বিনামূল্যে করা হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। ডেঙ্গু মোকাবিলায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় আগামী ১৭ আগস্ট পর্যন্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিনা অনুমতিতে কর্মস্থল ত্যাগ না করার নির্দেশনা জারি করেছে। এদিকে রোববার (১১ আগস্ট) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ২০০ শয্যার ডেঙ্গু ওয়ার্ড খোলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডাক্তার আয়েশা আক্তার জানান, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আজ রোববার (১১ আগস্ট) পর্যন্ত রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪১ হাজার ১৭৮ জন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৩২ হাজার ৩৮৪ জন। বর্তমানে সারাদেশে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৮ হাজার ৭৫৪ জন।
মোট রোগীর মধ্যে জানুয়ারিতে ৩৮ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৮, মার্চে ১৭, এপ্রিলে ৫৮, মেতে ১৯৩, জুনে ১ হাজার ৮৮৪, জুলাইয়ে ১৬ হাজার ২৫৩ ও চলতি ১১ আগস্ট পর্যন্ত ২২ হাজার ৭১৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।
সরকারি হিসাবে মৃত ৪০ জনের মধ্যে এপ্রিলে ২, জুনে ৪, জুলাই ২৪ এবং আগস্টে ১০ জন মারা গেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীসহ সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৩৩৪ ডেঙ্গু রোগী। এরমধ্যে রাজধানী ঢাকায় ৯৭৯ জন, ঢাকা বিভাগসহ (ঢাকা শহর ছাড়া) বিভিন্ন বিভাগে ১ হাজার ৩৫৩ জন।
রাজধানী ঢাকায় ভর্তি রোগীদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেলে ১৭৪, মিটফোর্ডে ৪৯, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৩৭, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৫৬, বিএসএমএমইউতে ২১, পুলিশ হাসপাতাল রাজারবাগে ১৯, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২৫, বিজিবি হাসপাতাল পিলখানা ঢাকায় ৫, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১২ এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৮৮ জন।
ঢাকা শহরের বাইরে বিভিন্ন বিভাগের ভর্তি রোগীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৩৫৭, চট্টগ্রামে ২৩৭, খুলনায় ২০৯, রংপুরে ৭৫, রাজশাহীতে ১৪৭, বরিশালে ১৮৪, সিলেটে ৩৯ ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১০৫ রোগী ভর্তি হন।