নিউজ ডেস্ক:
মাঘের শীতে কাবু হচ্ছে উত্তরের জনপদ। কয়েকদিন শীতের স্বাভাবিক অনুভূতি বিরাজ করার পর ফের শুরু হয়েছে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ। কোনো কোনো এলাকায় এক দিনের ব্যবধানেই রাতের পারদ কমে গেছে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের পারদও নেমেছে ১৪ ডিগ্রিতে।
মঙ্গলবার তেঁতুলিয়া, শ্রীমঙ্গলসহ দেশের ১৬টি অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যায় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ। এদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায়, ৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শ্রীমঙ্গলে ছিল ৭.৬ ডিগ্রি, যা মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বলে বিবেচিত। আরও ১৪টি অঞ্চলের ওপর দিয়ে মঙ্গলবার বয়ে যায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। বুধবার শীতের তীব্রতা আরও বৃদ্ধি পেয়ে শৈত্যপ্রবাহ নতুন নতুন এলাকায় বিস্তৃত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রংপুর বিভাগসহ রাজশাহী, ঈশ্বরদী, বগুড়া, বদলগাছী, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, টাঙ্গাইল, মাদারীপুর, ময়মনসিংহ অঞ্চলের ওপর দিয়ে মঙ্গলবার শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। শ্রীমঙ্গলে রাতের পারদ নেমেছিল ৭.৬ ডিগ্রিতে, এক দিন আগেও এখানে রাতের তাপমাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আশপাশের জেলাগুলোতে রাতের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রিতে নেমে এলেও ঢাকায় গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে উত্তর-পশ্চিমের বাতাস ঘণ্টায় ১২ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে ধেয়ে আসায় বিকেল থেকে কনকনে ঠান্ডা অনুভূত হয় রাজধানীতে। এখানে মঙ্গলবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৩.৭ ডিগ্রি।
আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে। তবে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। শৈত্যপ্রবাহ আরও কয়েকটি অঞ্চলে বিস্তৃত হতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।
চলতি মৌসুমে ইতোমধ্যে কয়েকটি শৈত্যপ্রবাহে কাবু হয়েছে দেশ। পৌষের শেষদিকে ইটপাথরে ঘেরা রাজধানীতেই দিনের তাপমাত্রা নেমে আসে ১৭ ডিগ্রিতে। তবে মাঘের শুরু থেকে শীতের তীব্র অনুভূতি হারিয়ে যায়। মাসের সপ্তম দিনে এসে মাঘের শীতের আসল অনুভূতি মিলছে। তবে এতে উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকার ছিন্নমূল, খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষ বেকায়দায় পড়েছেন।
পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, টানা কয়েকদিন উত্তরাঞ্চলে দিন ও রাতের তাপমাত্রা বাড়তি থাকলেও ফের মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে কনকনে শীত শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায়। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ রহিদুল ইসলাম জানান, সকাল থেকে ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় তীব্র ঠান্ডার অনুভূতি বিরাজ করছিল। এতে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে আসে। হাড় কাঁপানো শীতের কারণে আবারও দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ।
পৌরসভার মিঠাপুকুর এলাকার দিনমজুর আইবুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন সকাল সকাল বাড়ি থেকে বের হতে না পারলে কাজ পাওয়া যায় না। শীতের জন্য বাড়ি থেকে বের হতে দেরি হয়। এ জন্য ঠিকমতো কাজ পাওয়া যায় না।