নিজস্ব প্রতিবেদক:
বহুল আলোচিত ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভোট আজ। সবার দৃষ্টি এখন ঢাকায়। উত্সব ও শঙ্কার এই ভোটে সহিংসতা এড়াতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দীর্ঘদিন পরে নৌকা ও ধানের শীষের সরাসরি ভোটযুদ্ধের অপেক্ষায় নগরবাসী। জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের সুযোগ পাচ্ছে রাজনৈতিক শক্তিগুলো। দুই মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় বাড়তি আগ্রহ সবারই। দলীয় প্রচারণায় মেয়রদের মতো পিছিয়ে ছিলেন না সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। দুটি বড়ো সহিংসতা ছাড়া সব প্রার্থীর প্রচারণায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ঢাকার অলিগলি। ভোটের ফল ঘরে তুলতে এখন নানা সমীকরণ নিয়ে ব্যস্ত প্রার্থীরা।
ইসি সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, রাজনৈতিকভাবে এবারের নির্বাচন ভিন্ন গুরুত্ব বহন করছে। শুক্রবার কঠোর নিরাপত্তায় কেন্দ্রে কেন্দ্রে সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ভোটকেন্দ্রগুলোতে মক ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ভোটকে কেন্দ্র করে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের আগ্রহ এবার অনেকটাই প্রকাশ্য। দুই সিটির সবগুলো কেন্দ্রেই প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। প্রথমবার ঢাকার ভোট ইভিএমে হলেও গোপনকক্ষে গিয়ে নিজের ভোট দিতে পারবেন কি না—সেই সন্দেহ আর অবিশ্বাসের অন্ত নেই ভোটারদের। এসব শঙ্কা নিয়েই সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দুই সিটির প্রায় সাড়ে ৫৪ লাখ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। যদিও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা ও ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক দল ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে নানা সন্দেহ ও অবিশ্বাস বিরাজ করছে। রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তের আড্ডা-আলোচনার মূল বিষয় ছিল ইভিএম। নতুন এই ভোটিং মেশিনটি নিয়ে স্বস্তি এবং অস্বস্তি ছিল দৃশ্যমান।
নির্বাচন কমিশন বলছে, ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট দেওয়া এবং বাড়ি ফেরার বিষয়ে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে অতীতে নানা অনিয়মের অভিযোগ থেকে রেহাই পেতেই ইভিএমে ভোটের আয়োজন করা হয়েছে। দুই সিটির মেয়র পদে ইসির নিবন্ধিত নয়টি রাজনৈতিক দলের ১৩ জন প্রার্থী লড়াইয়ে রয়েছেন। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীতরা।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা শুক্রবার সন্ধ্যায় নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছেন, কোনো ধরনের আশঙ্কার কিছুই নেই। ভোটের পরিবেশ অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ থাকবে। ভোটাররা নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে আসতে পারবেন এবং ভোট দিয়ে ফিরতে পারবেন। পোলিং এজেন্টদেরও নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বলেছেন সিইসি।
আওয়ামী লীগ থেকে বলা হয়েছে, আজকের ভোট অবাধ, নিরপেক্ষ ও উত্সবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। জনগণ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবেন। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ক্ষমতাসীনরা নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে।
এদিকে বিজয়ী হওয়ার জন্য নানা সমীকরণ নিয়ে বিশ্লেষণ করছেন প্রার্থীরা। উত্তর এবং দক্ষিণের মেয়র পদে কারা জিতবেন? নৌকা নাকি ধানের শীষ তা জানতে আজ শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ভোটে আওয়ামী লীগ আর বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যেই মুলত মূল লড়াই হবে। ভোটে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করতে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অর্ধলক্ষাধিক সদস্য।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকার দুই সিটিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ঐ সময়ে ঢাকা উত্তরে ৩৬টি ও দক্ষিণ সিটিতে ৫৭টি ওয়ার্ড ছিল। এবারের দুই সিটিতে ১৮টি করে মোট ৩৬টি ওয়ার্ড সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এতে বেড়েছে ভোটার ও কেন্দ্র সংখ্যাও। এ নির্বাচনে দুই সিটিতে ২ হাজার ৪৬৮টি কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ জন ভোটার। সংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন ওয়ার্ডগুলোর অনেক জায়গায় যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো নয়। এছাড়া দুই সিটিতে বড়ো দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অনেক বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। সবমিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। শুধু তাই নয়, ইভিএমের গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্নের অনেক উত্তর মিলবে এ নির্বাচনে।
গত ১০ জানুয়ারি ব্যাপক উত্সাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দুই সিটির নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে টানা ২০ দিনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শেষ হয়েছে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে। দীর্ঘদির পর ভোটের মাঠে সমান্তরালে রাজনৈতিক উত্তেজনা দেখা গেছে। এই উত্তেজনার মধ্যে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন আওয়ামী লীগের দক্ষিণের প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা ইশরাক হোসেন। পিছিয়ে ছিলেন না উত্তরের আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম এবং বিএনপির তাবিথ আউয়ালও। এছাড়া অন্য সব মেয়র প্রার্থীসহ কাউন্সিলর প্রার্থীরাও প্রচারে বেশ ব্যস্ত সময় পার করেছেন। প্রচারণা চলাকালে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ভোটার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ‘শঙ্কার’ মেঘ কাটছে না। ‘বহিগারগত সন্ত্রাসী’ ঢাকায় অবস্থান নিচ্ছে এমন অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) পালটাপালটি অবস্থান নিয়েছে বড়ো দুই দল। আচরণবিধি লংঘন ঠেকাতে কার্যকর ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি ইসিকে। বরং ভোটের সব দায়িত্ব মাঠ প্রশাসনের ওপর ছেড়ে দিয়ে নিজেরা তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন।
১৩ মেয়র প্রার্থী
ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ ৯ দলের ১৩ মেয়র প্রার্থী ভোটযুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন। উত্তর সিটির ৬ মেয়র প্রার্থী হলেন—আওয়ামী লীগের মো. আতিকুল ইসলাম (নৌকা), বিএনপির তাবিথ আউয়াল (ধানের শীষ), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) আহম্মেদ সাজেদুল হক (কাস্তে), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শেখ মো. ফজলে বারী মাসউদ (হাতপাখা), পিডিপির শাহীন খান (বাঘ) ও এনপিপির মো. আনিসুর রহমান দেওয়ান (আম)। এই সিটিতে সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ৫৪টি পদে ২৫১ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ১৮টি পদে ৭৭ জন লড়ছেন।
দক্ষিণে মেয়র পদে সাত প্রার্থী হলেন—বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নুর তাপস (নৌকা), বিএনপির ইশরাক হোসেন (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি—জাপার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলনের মো. আবদুর রহমান (হাতপাখা), এনপিপির বাহরানে সুলতান বাহার (আম), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. আকতার উজ্জামান ওরফে আয়াতুল্লা (ডাব) ও গণফ্রন্টের আব্দুস সামাদ সুজন (মাছ)। দক্ষিণ সিটিতে সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ৭৫টি পদে ৩২৭ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ২৫টি পদে ৮২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
১৫৯৭ ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ
উত্তর সিটিতে (ডিএনসিসি) ৫৪টি ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৩০ লাখ ১০ হাজার ২৭৩ জন। ১ হাজার ৩১৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮৭৬টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ (গুরুত্বপূর্ণ)। বাকি ৪৪২টি কেন্দ্র সাধারণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। দক্ষিণ সিটি (ডিএসসিসি) ভোটে ৭৫ ওয়ার্ডে ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪ ভোটার। মোট ১১৫০ কেন্দ্রের ভেতরে ঝুঁকিপূর্ণ (গুরুত্বপূর্ণ) কেন্দ্র ৭২১টি এবং সাধারণ কেন্দ্র ৪২৯টি ঘোষণা করেছে ইসি।
ইভিএম সহায়তায় সেনাবাহিনী
এবারই প্রথম বড়ো পরিসরে ইভিএমে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইভিএম প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২৮ হাজার ৮৭৮টি। এর মধ্যে উত্তরের জন্য ১৫ হাজার ৭০০টি এবং দক্ষিণে ১৩ হাজার ১৭৮টি। ইভিএম মেশিনের কারিগরি সহায়তা প্রদান করবেন ৪ হাজার ৯৩৬ জন সেনাসদস্য। এর মধ্যে উত্তরে থাকবেন ২ হাজার ৬৩৬ জন এবং দক্ষিণে ২ হাজার ৩০০ সদস্য। প্রতিটি কেন্দ্রে দুই জন করে সার্জেন্ট বা করপোরাল বা ল্যান্স করপোরাল অথবা সৈনিক দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া ৫২ জন জেসিও ও ২৭ জন অফিসারও মাঠে থাকবেন।
ভোটের আগেই নির্বাচিত ৪ কাউন্সিলর
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন চার কাউন্সিলর প্রার্থী। দুটি সাধারণ ওয়ার্ড ও দুটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে গত ৯ জানুয়ারি মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে একক প্রার্থী হওয়ায় রিটার্নিং অফিসার আলাদা আলাদা বিজ্ঞপ্তিতে তাদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেন। এই চার জনই আওয়ামী লীগসমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী। তারা হলেন—২৫ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের মো. আনোয়ার ইকবাল এবং ৪৩ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের মো. আরিফ হোসেন (বর্তমান কাউন্সিলর) এবং সংরক্ষিত আসন ৬ নম্বরে (১৬, ১৭ ও ১৮ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের সমন্বয়ে) নারগিস মাহতাব (বর্তমান কাউন্সিলর) এবং সংরক্ষিত ৮ নম্বর আসনের (২২, ২৩, ২৬) নিলুফার রহমান।
নিরাপত্তার চাদরে রাজধানী
নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে পুরো নগরী। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বসানো হয়েছে নিরাপত্তা চৌকি। ভোটারদের নিরাপত্তা আর ভোটদান নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে ৩ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ১৬ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ জন মোতায়েন রয়েছেন। গড়ে দুই সিটির ২ হাজার ৪৬৮ কেন্দ্রে পুলিশ এবং আনসার ভিডিপির সদস্যই থাকছেন ৪১ হাজার ৯৫৬ জন। আর পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে গঠিত ১২৯টি মোবাইল ফোর্সে থাকবেন ১ হাজার ২৯০ জন, ৪৩টি স্ট্রাইকিং ফোর্সে থাকবেন ৪৩০ জন, রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্সে থাকছেন ৫২০ জন। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে টিম হিসাবে দুই সিটিতে র্যাবের টিম থাকছে ১৩০টি। গড়ে ১১ জন করে এতে মোট ১ হাজার ৪৩০ জন র্যাব সদস্য আছেন। এছাড়াও দুই সিটিতে র্যাবের ১০টি রিজার্ভ টিম থাকছে, এতে ১১০ জন সদস্য থাকছেন। আর রিজার্ভসহ দুই সিটিতে ৭৫ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করছেন। গড়ে ৩০ জন করে মোট ২ হাজার ২৫০ জন বিজিবি সদস্য থাকছেন। সবমিলে দুই সিটিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় অর্ধলক্ষ সদস্য মাঠে আছেন। দুই সিটিতে বৃহস্পতিবার থেকে রবিবার পর্যন্ত নির্বাচনি অপরাধ দমন ও সংক্ষিপ্ত বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মাঠে থাকবেন ১৭২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ৬৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষ
জানা গেছে, ঢাকার দুই সিটিতে ২ হাজার ৪৬৮টি ভোটকেন্দ্র ও ১৪ হাজার ৪৪৫টি ভোটকক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটিতে ১ হাজার ৩১৮টি ভোটকেন্দ্র ও ৭ হাজার ৮৫৭টি ভোটকক্ষ এবং দক্ষিণ সিটিতে ১ হাজার ১৫০টি ভোটকেন্দ্র ও ৬ হাজার ৫৮৮টি ভোটকক্ষ রয়েছে।
ঢাকার দুই সিটিতে মোট ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা রয়েছেন ৪৫ হাজার ৮০৩ জন। এর মধ্যে ২ হাজার ৪৬৮ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ১৪ হাজার ৪৩৪ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও ২৮ হাজার ৮৬৮ জন পোলিং কর্মকর্তা রয়েছেন। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
বন্ধ থাকবে সব ধরনের যানচলাচল
সিটি ভোটের দিন ঢাকা মহানগরে সব ধরনের গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে কিছু যানবাহন চলতে পারবে অনুমতি সাপেক্ষে। শুক্রবার রাত ১২টা থেকে ১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাস, বেবিট্যাক্সি/সিএনজি অটোরিকশা, ট্যাক্সি ক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, ট্রাক, টেম্পো ও অন্যান্য যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে বলে এক প্রজ্ঞাপনে জানিয়েছে ইসি। মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে ২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টা পর্যন্ত। তবে অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের এজেন্ট, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক ও কর্মরত সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা শিথিলযোগ্য। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের পরিচয়পত্র থাকতে হবে। এছাড়া সিটি নির্বাচন উপলক্ষ্যে ২৪ ঘণ্টা ইঞ্জিনচালিত নৌযান বন্ধ থাকবে। ইসির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এ আদেশ জারি করেছে।
সিটি ভোট দেখবে ১০ দূতাবাস
ঢাকার দুই সিটি ভোট পর্যবেক্ষণ করবেন বিভিন্ন দেশের ৭৪ বিদেশি পর্যবেক্ষক। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৯টি দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) প্রতিনিধি ঢাকা সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। এরমধ্যে আমেরিকার ২৭ জন, ব্রিটিশ ১২ জন, সুইজারল্যান্ডের ছয় জন, জাপানের পাঁচ জন, নেদারল্যান্ডসের ছয় জন, ডেনমার্কের তিন জন, নরওয়ের চার জন, অস্ট্রেলিয়ার দুই জন, কানাডার চার জন ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পাঁচ জন পর্যবেক্ষক সিটি ভোট পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। এই ৭৪ জনের মধ্যে ৪৬ জন বিদেশি এবং ২৮ জন বাংলাদেশি। তবে এ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তারা বলছেন, বিদেশি কোটায় দেশীয়রা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারেন না। এছাড়া ভোট পর্যবেক্ষণে ইসির অনুমতি পেয়েছেন বিভিন্ন দেশীয় সংস্থার অন্তত ১০১৩ জন পর্যবেক্ষক।