নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও দুই ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন শনিবার রাতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, নতুন করে আক্রান্ত দুইজনের মধ্যে একজন ইতালি সম্প্রতি ইতালি থেকে এসেছেন। আরেকজন সম্প্রতি জার্মানি থেকে ফিরেছেন। তাদের রাজধানীর একটি হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, এই দুইজনের সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদেরও হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে।
এর আগে গত ৮ মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো তিনজন করোনারোগী শনাক্ত হয়। শনিবার দুইজন নিশ্চিত হওয়ার পর এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচজনে। এদের মধ্যে আগের তিনজন করোনামুক্ত হয়ে সুস্থ হয়েছেন।
শনিবার দুপুরে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের সবাই এখন করোনামুক্ত। তবে রাতেই করোনায় আক্রান্তের নতুন তথ্য এলো।
করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে ৯ জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন জেলায় প্রায় প্রতিদিনই হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।
গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম করোনার অস্তিত্ব ধরা পড়ে; এরপর তা ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী। বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৬৯ জনে; মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ৪২৯ জনের।
করোনাভাইরাসকে এরই মধ্যে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সার্স ও মার্স পরিবারের সদস্য করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ফ্লুর মতো উপসর্গ নিয়ে যে রোগ হচ্ছে তাকে বলা হচ্ছে কভিড-১৯।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এখন পর্যন্ত এ রোগে মৃত্যুহার ৩.৪ শতাংশ, যেখানে মৌসুমি ফ্লুতে মৃত্যুহার থাকে ১ শতাংশের নিচে। তবে করোনায় ৯ বছরের নিচের কেউ মারা যায়নি। প্রবীণদের মধ্যেই মৃত্যুহার বেশি।
করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মতো।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।
করোনাভাইরাসের কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন এখনও তৈরি হয়নি। ফলে এমন কোনো চিকিৎসা এখনও মানুষের জানা নেই, যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। আপাতত একমাত্র উপায় হলো আক্রান্তদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।