আমতলী উপজেলার আমড়াগাছিয়া নামক স্থানে বুধবার সকালে সাড়ে ৮ টার সময় চাওরা খালের সেতটিু ভেঙ্গে ইট বোঝাই ট্রলিসহ খালে পড়ে গেছে। এতে ট্রলির চালক রাসেল ও হেল্পার ইয়াসিন আহত হয়। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন। সেতু ভেঙ্গে খালে পড়ায় চাওরা কুকুয়া এবং গুলিশাখালীসহ ৩ ইউনিয়নের ১১ গ্রামের মানুষের যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ।
জানাগেছে, ২০০৬ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ চাওরা খারের আমড়াগাছিয়া বাজার সংলগ্ন স্থানে একটি লোহার সেতু নির্মান করে। নি¤œমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ করায় সেতুটি পূর্ব থেকেই নড়বড়ে ছিল। নির্মাণের ১০ বছরের মাথায় ২০১৬ সালে সেতুটির মাঝবরাবর অংশ ভেঙ্গে পড়ে। তখন প্রায় সপ্তাহ খানেক যোযোগ বন্ধের পর এলজিইডি দায়সারা ভাবে সংস্কার করে কোন রকম সেতুটি চালু করে। সেতুটি সংস্কারের পর ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। কিন্তু প্রকৌশল বিভাগের নিষেধাঞ্জা উপক্ষো করে ট্রাক ও ট্রলির মালিকরা ওই সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল অব্যাহত রাখে।
এতে দিন দিন সেতুটি পুন:রায় নড়বড়ে হয়ে পড়ে। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার সময় ইট বোঝাই একটি ট্রলি আমড়াগাছিয়া থেকে গুলিশাখালী গুচ্ছগ্রামে যাচ্ছিল। ট্রলিটি সেতুটি পাড় হওয়ার সময় মাঝ বরাবর অংশে যাওয়া মাত্র সেতু ভেঙ্গে ট্রলিসহ খালে পড়ে যায়। এতে ওই ট্রলিতে থাকা চালক রাসেল ও হেল্পার ইয়াসিন খালে পড়ে আহত হয়। আহতরা খাল থেকে সাতরিয়ে কিনারে উঠতে পারলেও ট্রলিটি ইটসহ তলিয়ে যায়। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন।
সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ায় সেতুর উত্তর প্রান্তে অবস্থিত গুলিশাখালী ইউনিয়নের গোছখালী, ডালাচারা, বাইন বুনিয়া, কালিবাড়ী এবং খালের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত কুকুয়া ইউনিয়নের সাহেব বাড়ী, আজিমপুর, আমড়াগাছিয়া ও চাওরা ইউনিয়নের, সিকদার বাড়ী, ডাক্তার বাড়ী ও পাতাকাটা গ্রামসহ ১১ টি গ্রামের মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পরেছে ওই ১১ টি গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ।
গোছখালী বাজারের রফিকুল ইসলাম বলেন, চাওরা খালের আমড়াগাছিয়া নামক স্থানের এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন আমরাসহ গুলিশাখালী ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ যাতাযাত করি। সেতুটি ভেঙ্গে পড়ায় আমাদের এখন ভোগান্তির শেষ থাকবে না। আমড়া গাছিয়া বাজারের আউয়াল মিয়া বলেন, সেতু ভেঙ্গে পড়ায় গুলিশাখালী, কুকুয়া এবং চাওরা ইউনিয়নের অন্তত ১১ টি গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষের চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হবে। তিনি এখানে একটি গার্ডার সেতু নির্মানের দাবী জানান।
আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী মো. আল মামুন বলেন, ধারন ক্ষতার চেয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করায় সেতুটি ভেঙ্গে পড়েছে। ট্রলির মালিককে সেতু মেরামত করে দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, চাওরা খালের আমড়া গাছিয়া নামক স্থানে একটি গার্ডার সেতু নির্মাণের প্রস্তাব স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় পাঠানো আছে। অনুমোদন এবং বরাদ্দ পাওয়া গেলে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন বলেন, মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে সেতুটি সংস্কার ব্যবস্তা করা হবে।