বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

কুয়াকাটায় সাব-মেরিন ক্যাবলের ফাইভার অপটিক্যাল ক্যাবল স্থাপন

কুয়াকাটায় সাব-মেরিন ক্যাবলের ফাইভার অপটিক্যাল ক্যাবল স্থাপন

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটার আমখোলাপাড়ায় ক্রমশ:ই ঝুঁকিপূর্ন হয়ে উঠছে অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের ২৬০০ ভোল্টের ডিসি পাওয়ারের ফাইভার অপটিক্যাল ক্যাবল। মাটির অগভীর থেকে ক্যাবল টানা, ক্যাবল স্থাপনের পর জনসচেতনতা সৃস্টি না করা, হ্যান্ড হোল ও দীর্ঘ সংযোগ ক্যাবলের কোন সতর্কীকরন চিহ্ন না থাকাসহ রক্ষনা বেক্ষনের অভাবে ক্যাবলের চিহ্নিতকরন খুঁটি উপড়ে যাওয়াকে এজন্য দায়ী এলাকাবাসী। রাস্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ন ক্যাবলের ঝুঁকিপূর্ন এমন ব্যবহারের ফলে অসাবধানতাসহ অজানা থাকায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার শংকায় ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন তারা।

প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারসহ দ্রুতগতির নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেটে সেবা প্রদানের জন্য ৬’শ ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে জেলার কলাপাড়ার আমখোলা পাড়ায় ১০ একর জমির উপর র্নিমান করা হয় দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন। ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে এ সংযোগ চালু হয়। বাংলাদেশকে দক্ষিন পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ওয়েস্টার্ন ইউরোপের (সি-মি-ইউ) সাথে সংযুক্ত করতে সাগরের নিচ দিয়ে ফ্রান্স থেকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা ও মিয়ানমার হয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত ২৫ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ ক্যাবল স্থাপন করা হয়।

প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের লাইফ টাইম শেষে দ্বিতীয় এ প্রকল্প দিয়েই পুরো দেশে ইন্টারনেট সেবা প্রদানের জন্য প্রথম সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন কক্সবাজারের জিলং পর্যন্ত যুক্ত করতে তৈরি করা হয়েছে একটি
ব্যাকবোন। কুয়াকাটা সৈকত থেকে আমখোলা পাড়ায় স্টেশন পর্যন্ত বসতবাড়ি, পুকুর-ঘের, সড়ক-মহাসড়ক, আবাদি জমি পেড়িয়ে সাড়ে ছয় কিলোমিটার ক্যাবল লাইন স্থাপন করা হয়।

একইভাবে লাইন টানা হয়েছে প্রথম সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন কক্সবাজারের জিলং পর্যন্ত। কিন্তু দীর্ঘ সংযোগ ক্যাবল স্থাপনের পর যথাযথ সতর্কীকরন চিহ্ন দেয়া হয়নি। সৃস্টি করা হয়নি জনসচেতনতা। চিহ্নিতকরন যে কয়টি খুঁটি দেয়া হয়েছে তাও রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে উপড়ে পড়েছে। এতে স্থানীয় মানুষ পুরোপুরি অন্ধকারে রয়েছে সাবমেরিন ক্যাবলের গুরুত্ব সম্পর্কে। সম্প্রতি (৯ আগস্ট) উপজেলার আলীপুরে স্কাভেটর দিয়ে নিজেদের জমির মাটি কাটার সময় অপটিক্যাল ক্যাবল কেটে যায়। এতে দেশের ইন্টারনেট সার্ভিস বিপর্যস্ত হয়ে পরে। মেরামত শেষে ১৩ ঘন্টা পর সার্ভিস চালু হয়। অনিচ্ছাকৃত এ দুর্ঘটনায় মামলা দায়েরসহ দু’জনকে গ্রেপ্তারের পর স্থানীয় মানুষ সাবমেরিন ক্যাবলের গুরুত্ব সম্পর্কে ধারনা পায়। পাশপাশি তাদের মধ্যে সৃস্টি হয়েছে ভীতির।

এছাড়াও (২০ আগস্ট) কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্টে সমুদ্র থেকে উঠে আসা হাই ভোল্টেজ আরকুলেটেট সংযোগ ক্যাবল উম্মুক্ত হয়ে পড়ে। সরকারী এমবি কলেজের ইংরেজী বিভাগের প্রভাষক সাবরিনা মাহমুদা, শিক্ষার্থী মারিয়াম জাহান, সামাজ সেবক আ. মান্নান হাওলাদার বলেন, এতটুকু জানি আমাদের বসতভিটার ভিতর থেকেই সাব-মেরিন ক্যাবল লাইন টেনে নেয়া হয়েছে। কিন্তু কোন জায়গা থেকে টানা হয়েছে জানিনা।

গোড়া আমখোলা এলাকার আমিন উদ্দিন, মজিবর, কামাল বলেন, আমাদের অবহিত না করেই ক্যাবল লাইন টানা হয়েছে। এর গুরুত্ব কিংবা উচ্চ ভোল্টের কারনে এটি ঝুঁকিপূর্ন সে সম্পর্কে কোন ধারনা দেয়নি বিএসসিসিএল। আলীপুরের বাসিন্দা গৃহবধূ মেরী, রোকেয়া, খালেদা বলেন, ক্যাবল চিহ্নিত করা না থাকায় নিজেদের প্রয়োজনে বসতভিটার ভ’মি উন্নয়নের কাজ করতে ভয় লাগছে। সাব-মেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) তরিকুল ইসলাম বলেন, জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে স্থানীয়দের মাঝে সচেতনতা সৃস্টি করতে প্রচারনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড’র (বিএসসিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান বলেন, প্রতি দু’শ মিটার অন্তর ক্যাবল চিহ্নিতকরন সাইনবোর্ড দেয়া আছে। এখন প্রতি একশ’ মিটার পরপর রাতে দৃশ্যমান হয় এমন সাইনবোর্ড (রেডিয়াম) দেয়া হবে। ভবিষ্যতে যাতে আর কোন অনাকাংখিত ঘটনা না ঘটে, তাই মাইকিংয়ের প্রচারনার মাধ্যমে জনসচেনতা বাড়ানো হবে। যাতে এলাকাবাসী ক্যাবল সংশ্লিস্ট এলাকায় কাজ করার সময় কোম্পানীকে অবহিত করে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech