গত ১৮ আগস্ট থেকে হঠাৎ পানি বেড়ে দক্ষিণাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যায়। সপ্তাহব্যাপী পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ঝালকাঠিতে দেখা দেয় বন্যা। এ অবস্থায় বন্যায় ভেসে গেছে তিন কোটি টাকার ফসল। একই সঙ্গে জেলার আমন, শাক-সবজি, পেঁপে ও আখের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর দুই কোটি পাঁচ লাখ আট হাজার ৯৬০ টাকা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করলেও মাঠপর্যায়ে আরও এক কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, ঝালকাঠির চার উপজেলার দুটি পৌরসভা ও ৩২ ইউনিয়নের ১৮ হাজার ৮৮১ হেক্টর জমিতে উফশী রোপা আমন বীজতলা, স্থানীয় আমন বীজতলা, শাক-সবজি, পান ও পেঁপে চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে সাত হাজার ৮০০ কৃষকের সাত হাজার ৮৩০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলার পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়েছে, আমন বীজতলার কোনো ক্ষতি হয়নি। ১৪ হাজার ২০০ হেক্টর জমির আমনের (উফশী ও স্থানীয় জাত) মধ্যে সাত হাজার ২০০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এতে ৮৩ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ১৫৮০ হেক্টর জমির শাক-সবজির মধ্যে ৪১০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে ৭৩ লাখ ৮০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। ৪৮৬ হেক্টর জমির পান বরজের ১৬০ হেক্টর জমির বরজ নষ্ট হয়ে ২৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। ৩৫০ হেক্টর জমির পেঁপের মধ্যে ৫৮ হেক্টর জমির পেঁপে নষ্ট হয়ে ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তবে এ ক্ষতির মধ্যে আখ চাষ, আমন ও উফশী আমন বীজতলার পরিসংখ্যান উল্লেখ করেনি কৃষি বিভাগ। সেই সঙ্গে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র পর্যায়ের অনেক চাষির তথ্য পরিসংখ্যানে নেই।
তৃণমূল পর্যায়ের কৃষকরা জানান, কৃষি কর্মকর্তারা সরেজমিনে পরিদর্শন না করে ধারণানির্ভর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের অনেক কম নির্ধারণ করে তালিকা করেছেন। যা বাস্তবতার সঙ্গে শতভাগ মিল নেই।
ঝালকাঠি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. ফজলুল হক বলেন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তালিকা পাঠানো হয়েছে। সরকারি প্রণোদনা বা ভর্তুকির বরাদ্দ এলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে। ধারণার ওপর ভিত্তি করে ক্ষতির পরিসংখ্যান যদি কোনো কর্মকর্তা করে থাকেন তাহলে প্রমাণ সাপেক্ষে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।