পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার মানিকখালী গ্রামে শ্বশুর ও শাশুড়ির যৌতুকের দাবীকৃত টাকা না দেয়ায় প্রবাসী পুত্রের স্ত্রী তানজিলা বেগম (২৬) এর ওপর অমানুষিক নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।
শনিবার রাতে তানজিলার বাবা মো. সিদ্দিক মীর বাদী হয়ে মেয়ের শ্বশুর মো. ধলু মুন্সী ও শাশুড়ি আলেয়া বেগম ও চাচা শ্বশুর নুর মোহাম্মদ মুন্সী এ তিনজনকে আসামি করে মঠবাড়িয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে এ মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ রাতেই নির্যাতিতা গৃহবধূর শাশুড়ি আলেয়া বেগমকে গ্রেপ্তার করে রোববার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করেছে।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মানিকখালী গ্রামের ধলু মুন্সীর ছেলে সৌদি প্রবাসী নাসির মুন্সীর সঙ্গে একই ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের সিদ্দিক মীরের মেয়ে তানজিলার বিয়ে হয়। নাসির বর্তমানে সৌদি আরবে থাকায় সম্প্রতি শ্বশুর ও শাশুড়ি বসত ঘর তোলার জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা যৌতুক আনার জন্য র্দীঘদিন ধরে তানজিলার ওপর চাপ দিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে পুত্রবধূর সঙ্গে প্রায়ই শ্বশুর-শাশুড়ির ঝগড়া হয়।
এর জের ধরে গত বৃহস্পতিবার (০৩/০৯/২০২০)দুপুরে বাপের বাড়ি হতে টাকা দিতে তানজিলা অপারগতার কথা বললে শ্বশুরের সঙ্গে তানজিলার কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শ্বশুর তাঁর পুত্রবধূকে প্রকাশ্যে মারধর করেন। এ সময় শাশুড়িও চাচা শ্বশুরও তাঁকে মারধর করেন। তানজিলার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
গত চারদিন ধরে দু সন্তানের জনণী তানজিলাকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদিকে মারধরের এই ঘটনা প্রত্যক্ষদর্শী কেউ একজন মুঠোফোনে ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট দেন।
এ ঘটনার পর থেকে তানজিলার শ্বশুর পলাতক। মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ফেরদৌস ইসলাম বলেন, তানজিলা বেগমের শরীরে জখমের চিহ্ন আছে। তাঁকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুজ্জামান মিলু মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গৃহবধূ তানজিলাকে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর আমরা মামলা নিয়েছি। এ মামলার এজাহার নামীয় ওই গৃহবধূর শাশুড়ি আলেয়া বেগমকে গ্রেপ্তার করে রোববার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’