আমতলীতে অপরহনের একমাস ৭ দিন পরে অপহৃতা স্কুল ছাত্রীকে পাশর্^বর্তী কলাপাড়া উপজেলার সুলতানগঞ্জ গ্রাম থেকে মঙ্গলবার রাতে উদ্ধার করেছে আমতলী পুলিশ। অপহরনের মুল হোতা রাকিবুল ইসলাম প্যাদাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার অপহরনকারী রাকিবুলকে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ এবং একই আদালতে অপহৃতাকে জবানবন্দির জন্য হাজির করা হয়। আদালতের বিচারক মো. সাকিব হোসেন অপহরনকারী রাকিবুলকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন এবং অপহৃতার ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহন করেছেন।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামের কৃষকের কন্যা উত্তর টিয়াখালী আমিরজান একাডেমিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীতে লেখাপড়া করে।
ওই ছাত্রীকে পাশর্^বর্তী কলাপাড়া উপজেলার সুলতানগঞ্জ গ্রামের হাকিম আলী প্যাদার বখাটে পুত্র মো. রাকিবুল ইসলাম প্যাদা প্রেমের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু ওই ছাত্রী তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
এতে ক্ষিপ্ত হন বখাটে রাবিকুল। এরপর থেকে বিদ্যালয় আসা যাওয়ার পথে প্রায়ই বখাটে রাকিবুল ওই ছাত্রীকে উত্যাক্ত করে আসছিল। এ বিষয়টি স্কুল ছাত্রী বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকে জানায়। কিন্তু বখাটে রাকিবুলকে স্কুল শিক্ষকরা শাসিয়ে দেন। এতে আরো ক্ষিপ্ত হয় রাকিবুল।
গত ২১ সেপ্টেম্বর ওই স্কুল ছাত্রীকে রাকিবুল ও তার দুই সহযোগী ইমরান মোল্লা ও কামাল হাওলাদার প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় জোড়পূর্বক মোটর সাইকেলে তুলে অপহরন করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় স্কুল ছাত্রীর বাবা গত ৩০ সেপ্টেম্বর আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৯(১) ধারায় রাকিবুল ইসলাম প্যাদাকে প্রধান আসামী করে তিন জনের নামে মামলা দায়ের করেন।
আদালতের বিচারক মো. সাকিব হোসেন মামলাটি আমলে নিয়ে আমতলী থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহন করে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার রাতে ওই মামলাটি আমতলী থানার ওসি এজাহার হিসেবে গ্রহন করেন। অপহরনের এক মাস সাত দিনেও ওই স্কুল ছাত্রীর কোন হদিস ছিল না।
অপহরনের এক মাস সাত দিন পর মঙ্গলবার রাতে পুলিশ অপহৃতাকে পাশর্^বর্তী কলাপাড়া উপজেলার সুলতানগঞ্জ গ্রামের বখাটে রাকিবুলের বাড়ী থেকে উদ্ধার এবং আসামী রাকিবুলকে গ্রেফতার করে। বুধবার পুলিশ আসামী রাকিবুলকে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে সোপর্দ এবং অপহৃতাকে জবানবন্দির জন্য আদালতে হাজির করেন।
আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. সাকিব হোসেন আসামী রাকিবুলের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এবং অপহৃতা স্কুল ছাত্রীর ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহন করেন।
আদালতে জবানবন্দি শেষে পুলিশ অপহৃতার ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে প্রেরন করা হয়।
মামলার বাদী স্কুল ছাত্রীর বাবা বলেন, প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় আমার মেয়েকে বখাটে রাকিবুল ও তার সহযোগীরা অপহরন করে নিয়ে যায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, অপহৃতাকে উদ্ধার করে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, আসামী রাকিবুলকে গ্রেফতার করে এবং অপহৃতাকে জবানবন্দির জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে।