বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

আমতলীতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ : মামলা দায়ের

আমতলীতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ : মামলা দায়ের

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি ::

আমতলীতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক স্কুল ছাত্রীকে বখাটে দুইবন্ধু মিলে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণের পর ওই মেয়ের নগ্ন ছবি মোবাইলে ধারন করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। সোমবার ফের তাদের সাথে দেখা করার জন্য বলার পর অভিভাবকরা পুলিশের সাথে যোগাযোগের পর ৩ জনকে আসামী করে মেয়েটির মা বাদী হয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমতলী থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে।

মামলা সূত্রে জানাগেছে, আমতলী উপজেলার মহিষডাঙ্গা গ্রামের বারেক মৃধার ছেলে ট্রাক হেল্পার বখাটে মেহেদী আমতলী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের পঞ্চম শ্রেনীতে পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রীকে গত ছয় মাস ধরে উত্যাক্ত করে আসছিল। কিন্তু বখাটের প্রেমের প্রস্তাবে রাজি হয়নি ওই স্কুল ছাত্রী। গত তিন মাস পূর্বে বখাটে মেহেদী (২০) ওই ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে যোগাযোগ শুরু করে। প্রেমের এ সুযোগ নিয়ে গত শনিবার বিকেলে ওই ছাত্রীর সাথে দেখা করতে মেহেদী তার বন্ধু রাসেলকে (২২) নিয়ে আমতলী পৌর শহরের বাঁধঘাট চৌরাস্তায় অবস্থিত সকাল সন্ধ্যা হোটেলে আসে।

রাসেল ও মেহেদির পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই হোটেল থেকে মেহেদী তার ভাবীকে দেখানোর কথা বলে ওই ছাত্রীকে হোটেলের সামনে সোলায়মান নামে এক ব্যাক্তির বাসায় নিয়ে যায়। ওই সময় সোলায়মানের স্ত্রী বাসায় ছিল না কিন্তু সোলায়ন বাসায় ছিল। সোলায়মান বখাটে মেহেদি ও রাসেলকেসহ ওই স্কুল ছাত্রীকে ঘরে তুলে দিয়ে সে বাহির থেকে ঘড়েরর দরজায় তালা দিয়ে চলে যায়। ওই বাসায় দুই বন্ধু মিলে ওই ছাত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। অনেক অনুনয় বিনয় করেও দুই বখাটের হাত থেকে রক্ষা পায়নি স্কুল ছাত্রী। দুই বখাটে ধর্ষণ শেষে ওই ছাত্রীর নগ্ন ছবি মোবাইলে ধারন করে। এই ঘটনা কাউকে জানালে এবং পুনরায় তাদের ডাকে সারা না দিলে নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখায় তারা এমন অভিযোগ ধর্ষণের শিকার স্কুল ছাত্রীর।

ওইদিন রাতেই বাসায় গিয়ে এ ঘটনা ওই ছাত্রী তার মাকে জানায়। নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার ভয়ে ওই ছাত্রীর অভিভাবকরা এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে সাহস পায়নি। সোমবার রাতে ওই দুই বখাটে মুঠোফোনে আবার স্কুল ছাত্রীকে তাদের সাথে একটি নির্জন স্থানে দেখা করার প্রস্তাব দেয়। নিরুপায় হয়ে স্বজনরা মঙ্গলবার সকালে ওই ছাত্রীকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন এবং আমতলী থানা পুলিশকে জানান। এ ঘটনায় মেয়েটির মা বাদী হয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বখাটে মেহেদি তার বন্ধু রাসেল ও ঘড় মালিক সোলায়মানকে আমামী করে আমতলী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। মামলার পর বুধবার দুপুরে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে মেয়েটির ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।

কান্নাজরিত কন্ঠে ধর্ষনের শিকার স্কুল ছাত্রী বলেন, মেহেদী ও তার বন্ধু রাসেল তার ভাবিকে দেখানোর কথা বলে আমাকে একটি ঘরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেছে। আমি অনেক কান্নাকাটি করেও রক্ষা পায়নি। তিনি আরো বলেন, মোবাইলে আমার নগ্ন ছবি ধারন করেছে ওরা। আমি যদি এ কথা কাউকে বলে দেই এবং তাদের ডাকে আবার না আসি তাহলে ওরা এই ছবি ফেইজ বুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। মঙ্গলবার ছবির ভয় দেখিয়ে আবার আমাকে তাদের সাথে নির্জন স্থানে দেখা করতে বলে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

ধর্ষিতা স্কুল ছাত্রীর বাবা বলেন, মেহেদি আর রাসেল মোর মাইয়াডারে মিথ্যা বইল্যা সোলায়মানেসর বাসায় নিয়া জোর কইর‌্যা ধর্ষণ করে। হের পর মোবাইলে ছবি উডায়। হেই ছবি ফেইজবুকে দেওয়ার ভয় দ্যাহ্যায়। হেইয়ার লইগ্যা মামলা হরতে বিলম্ব হয়। মুই এই ধর্ষণ কারীর ফাঁসি চাই।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. তারান্নুম মাহযাবিন বলেন, ওই ছাত্রীর নমুনা সংগ্রহ করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ধর্ষণেল এঘটনায় আমতলী থানায় ৩ জনকে আসামী করে মামলা হয়েছে। এজাহার ভূক্ত আসামীদের গ্রেপ্তারের জোর প্রচেষ্টা চলছে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech