শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ঝালকাঠিতে দুই বিচারক হত্যা দিবস পালিত হয়েছে। ২০০৫ সালের এই দিনে জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) জঙ্গিরা আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়ে ঝালকাঠির দুই বিচারক সিনিয়র সহকারী জজ সোহেল আহম্মেদ ও জগন্নাথ পাঁড়েকে হত্যা করে। বিচারক হত্যা দিবস উপলক্ষে শনিবার নানা কর্মসূচি পালন করে ঝালকাঠির বিচার বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সকাল সাড়ে ৯টায় নিহত বিচারকদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন জেলা ও দায়রা জজ মো. শহীদুল্লাহ, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল ইসলাম, পৌর মেয়র মো. লিয়াকত আলী তালুকদার, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও পিপি আবদুল মান্নান রসুল ও সাধারণ সম্পাদক আ.স.ম মোস্তাফিজুর রহমান মুনসহ বিচার বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে আদালতের শহীদ সোহেল-জগন্নাথ মিলনায়তনে শোক সভা, দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়।
২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর সকাল ৯ টার দিকে সরকারি বাসা থেকে কর্মস্থলে যাবার পথে তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসে এই নৃশংস হামলা চালানো হয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান বিচারক সিনিয়র সহকারী জজ সোহেল আহম্মেদ এবং বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় বিচারক সিনিয়র সহকারী জজ জগন্নাথ পাঁড়ের। এ সময় মাইক্রোবাসটি বিধ্বস্ত হয়। আহত অবস্থায় ধরা পড়ে হামলাকারী জেএমবি সুইসাইড স্কোয়াডের সদস্য ইফতেখার হাসান আল মামুন।
সারাদেশের মানুষ এ ঘটনায় হতবাক হয়ে যান। এরপর জেএমবির শীর্ষ নেতারা আটক হয়। জঙ্গিদের ঝালকাঠিতে এনে তাদের উপস্থিতিতে জেলা জজ আদালতে চাঞ্চল্যকর এ মামলার বিচারকার্য চলে। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রেজা তারিক আহমেদ ২০০৬ সালের ২৯ মে সাতজনকে ফাঁসির আদেশ দেন।
উচ্চ আদালতে সে রায় অনুমোদনের পর দেশের বিভিন্ন জেলখানায় ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ ৬ শীর্ষ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
এরা হলেন- জেএমবি প্রধান শায়খ আবদুর রহমান, সেকেন্ড ইন কমান্ড সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলাভাই, সামরিক শাখা প্রধান আতাউর রহমান সানি, উত্তরাঞ্চলীয় সমন্বয়কারী আবদুল আউয়াল, দক্ষিণাঞ্চলীয় সমন্বয়কারী খালেদ সাইফুল্লাহ ও বোমা হামলাকারী ইফতেখার হাসান আল মামুন। ২০১৬ সালের ১৬ অক্টোবর জঙ্গি আসাদুল ইসলাম আরিফের ফাঁসি কার্যকর করা খুলনা কারাগারে।