বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

আমতলীতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন, তোপের মুখে পরীক্ষা স্থাগিত

আমতলীতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন, তোপের মুখে পরীক্ষা স্থাগিত

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:
বরগুনার আমতলী সরকারী কলেজে অ্যাসাইনমেন্টের নামে টাকা আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সোমবার কলেজের প্রধান ফটকে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ ও তোপের মুখে পড়ে কলেজ অধ্যক্ষ মোঃ মজিবুর রহমান পরীক্ষা স্থাগিত করেছেন।
জানাগেছে, আমতলী সরকারী কলেজে একাদ্বশ, দ্বাদশ ও স্নাতক শ্রেনীতে দুই হাজার সাত’শ শিক্ষার্থী রয়েছে। করোনা ভ্ইারাসের প্রার্দূভাবের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বন্ধ হয়নি আমতলী সরকারী কলেজের পরীক্ষার নামে টাকা আদায়। গত ১৫ অক্টোবর অ্যাসাইনমেন্টের নামে কলেজ অধ্যক্ষ পরীক্ষা শুরু করেন। ওই পরীক্ষা গত ২৮ অক্টোবর শেষ হয়। ওই সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এক হাজার দুই’শ ষাট টাকা আদায় করেন। অভিযোগ রয়েছে ওই সময়ে কলেজের অধিকাংশ শিক্ষার্থী টাকা দিতে অপরগতা প্রকাশ করলেও কলেজ অধ্যক্ষ তাদের অপরগতা আমলে নেয়নি। উল্টো পরীক্ষায় ফি না দিলে পরবর্তি শ্রেনীতে উত্তীর্ণের অনুমতি দিবে না বলে হুমকি দেয়। নিরুপায় হয়ে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের চাহিদা মত টাকা দিয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেন। ওই পরীক্ষা শেষ হওয়ার এক মাসের মাথায় আবারো আগামী ২৯ নভেম্বর অ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষা প্রস্তুতি নেন। এই পরীক্ষায় ফি. বেতনসহ বিভিন্ন ফি বাবদ এক হাজার দুই’শ ষাট টাকা ধার্য্য করেন। ওই টাকা দিতে অপরগতা প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা। এনিয়ে রবিবার কলেজ অধ্যক্ষের সাথে শিক্ষার্থীদের বাদানুবাদ হয়। পরে ওইদিনই ওই শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। সোমবার কলেজের অন্তত দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষার নামে টাকা আদায় বন্ধের দাবীতে কলেজের প্রধান ফটকে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। ঘন্টা ব্যাপী শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভের তোপের মুখে পড়ে অধ্যক্ষ পরীক্ষা স্থাগিত করে তার অফিস কক্ষ ত্যাগ করেন। এদিকে কলেজ অধ্যক্ষের এমন কার্যক্রম সোসাল মিডিয়াল প্রকাশিত হলে আমতলীতে নিন্দার ঝড় উঠে। দ্রুত বিষয়টি বরিশাল শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মুহাম্মাদ ইউনুসের নজরে আসে। তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আস্বাস দেন। অভিযোগ রয়েছে কলেজ অধ্যক্ষ মোঃ মজিবুর রহমান সরকারী নিয়মনীতি মানছে না। তিনি সরকারী নিয়মনীতি উপেক্ষা করে তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রনালয় অ্যাসাইনমেন্টের নামে টাকা আদায়ের বিষয়ে পরিপত্র জারি করেছে। ওই পরিপত্রে উল্লেখ আছে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অ্যাসাইনমেন্টের নামে অর্থ আদায় করতে পারবে না। অর্থ আদায় করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। কিন্তু মন্ত্রনালয়ের এ পরিপত্র আমতলী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষের কাছে তেমন কিছুই না। তিনি উল্টো ওই পরিপত্রের বিরুদ্ধে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করছেন। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রাসেল, জুবায়ের ও মেহেদীর। মানববন্ধন কলেজ শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন, কাজী অপসরি, শরীয়াতুল্লাহ, মেহেদী হাসান ও জোহান ইমন বলেন, কলেজ অধ্যক্ষ মোঃ মজিবুর রহমান অ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষার নামে আমাদের কাছ থেকে এক হাজার দুই’শ ষাট টাকা আদায় করছে। যে খানে পরীক্ষার ফি মাত্র দুই’শ ৮০ টাকা। তারা আরো বলেন, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে সারা বিশ^ টালমাটাল কিন্তু কলেজ অধ্যক্ষের কাছে তা তেমন ব্যপার না। তিনি তার ইচ্ছা মাফিক আইন করে কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এ ঘটনা তদন্তপূর্বক দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, অধ্যক্ষ মোঃ মজিবুর রহমান ইতিমধ্যে অন্তত পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষার নামে এক হাজার দুই’শ ষাট টাকা করে কয়েক লক্ষ টাকা উত্তোলন করেছেন।
আমতলী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মজিবুর রহমান বলেন, পরীক্ষা আপাদত বন্ধ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, পরীক্ষার ফি ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন ছাড়া অন্য কোন অর্থ আদায় করা হচ্ছে না। যারা বেতন দেয়নি তাদের কাছ থেকে শুধু মাত্র বেতন নেয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা সমুদয় টাকা কলেজের ব্যাংক হিসেবে জমা হচ্ছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিমকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন,তদন্ত প্রতিবেদন পেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech