মানবপাচার আইনে করা মামলায় নৃত্যশিল্পী ও কোরিওগ্রাফার ইভান শাহরিয়ার সোহাগের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পিছিয়ে আগামী ৩১ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরার আদালত নতুন এদিন ধার্য করেন।
এদিন মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ধার্য ছিল। কিন্তু মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। এজন্য আদালত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৩১ জানুয়ারি নতুন দিন ধার্য করেন।
এর আগে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর রিমান্ড শেষে আসামি ইভানকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরা শুনানি শেষে তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে মানবপাচারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক দালাল চক্রের কে বা কারা জড়িত তা জানার জন্য ইভানকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির এসআই মো. কামরুজ্জামান।
এদিকে দুবাই পুলিশের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত মাসে মানবপাচারকারী চক্রের মূলহোতা আজম খান এবং তার চার সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নৃত্যশিল্পী সোহাগকে গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর নিকেতন থেকে গ্রেফতার করে সিআইডি।
গত ২ জুলাই মূলহোতা আজম খানসহ নয়জনের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে লালবাগ থানায় একটি মামলা করেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মৃনাল কান্তি শাহ।
মামলার আসামিরা হলেন- আলামিন হোসেন ওরফে ডায়মন্ড (২৬), স্বপন হোসেন (২৮), আজম খান (৪৫), নাজিম (৩৬), এরশাদ ও নির্মল দাস (এজেন্ট), আলমগীর, আমান (এজেন্ট) ও শুভ (এজেন্ট)।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আজম খান তার দুই ভাইসহ মামলার আসামিরা দুবাইয়ের হোটেল ও ড্যান্স বারে মেয়েদের যৌনকর্মে বাধ্য করতেন। এই তিনজনের প্রতিনিধিরা দেশের বিভিন্ন নাচের ক্লাব বা সংগঠন থেকে মেয়েদের সংগ্রহ করে কাজ দেয়ার নামে তাদের দুবাই পাঠাচ্ছিলেন। দুবাই পুলিশের দেয়া তথ্য ধরে সিআইডি গত জুলাই মাসে আজম খান এবং তার দুই সহযোগী ডায়মন্ড ও আনোয়ার হোসেন ওরফে ময়নাকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হন আজমের এ-দেশীয় প্রতিনিধি নির্মল সরকার ও মো. ইয়াছিন।
আজম খান এবং এ দেশে তার দুই প্রতিনিধি নির্মল সরকার ও মো. ইয়াছিন আদালতে সম্প্রতি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ওই জবানবন্দিতে তারা গডফাদার হিসেবে বাড্ডার সজীব ও ময়মনসিংহের অনীকের নাম বলেছেন।
আজম খান জবানবন্দিতে বলেছেন, লালবাগের স্বপন, আল আমিন ওরফে ডায়মন্ড, বংশালের ময়না, চট্টগ্রামের মাহাফুজ ও ময়মনসিংহের অনীক তাকে মেয়ে সংগ্রহের কাজে সাহায্য করেন। বাড্ডার সজীব ও ময়মনসিংহের অনীকেরও দুবাইতে ড্যান্স বার আছে।
আজমের ভাই নাজিমের বন্ধু মো. ইয়াছিন ও নির্মল ড্যান্স একাডেমির নির্মল সরকার তাদের জবানবন্দিতে বলেন, তারা আজম খান ছাড়াও সজীবের জন্য নারী পাচার করেছেন।