বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আবুল বাশার নামের এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকার অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসাথে আদালতের আদেশ অনুযায়ী ধর্ষণের ফলে জন্ম নেয়া শিশুটি বড় হবে আসামির পরিচয়ে।
সোমবার দুপুরে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো: হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আবুল বাশার (২৫) বরগুনা সদর উপজেলার আয়লাপাতাকাটা ইউনিয়নের বধুঠাকুরানী গ্রামের আবদুল হালিম মিয়ার ছেলে। রায় ঘোষণার সময় মামলার আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ২০০৯ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে আবুল বাশারের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। একই বছর ২৫ আগস্ট থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময় আবুল বাশার তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেছেন। ধর্ষণের ফলে ভিকটিম গর্ভবতী হয়ে পড়েন। পরে বাশার ভুক্তভোগীকে বিয়ে করতে রাজি না হলে তিনি আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতে মামলা চলার সময় ভুক্তভোগী একটি ছেলে সন্তান প্রসব করেন।
আদালত রায়ে উল্লেখ করেন, ধর্ষণের ফলে ১০ বছর আগে ভিকটিমের একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। ওই ছেলের নাম সিয়াম। ছেলেটি এখন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়াশোনা করে। ছেলেটি বড় হবে বাশারের পরিচয়ে। রায়ে বলা হয়, অর্থদণ্ড দেয়া দুই লাখ টাকা রাষ্ট্র আদায় করে ভিকটিমকে প্রদান করবে। এ ছাড়া শিশুটির লেখাপড়া ও ভরণ-পোষণের দায়িত্ব সরকার বহন করবে।
রায় ঘোষণার সময় ভুক্তভোগী ও তার শিশু সন্তান নিয়ে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের পিপি আশ্রাফুল আলম নয়া দিগন্তকে বলেন, বাদিপক্ষ এ রায়ে সন্তুষ্ট।
মামলার বাদি আদালত প্রাঙ্গনে নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘বাশার আমাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অসংখ্যবার ধর্ষণ করেছে। অথচ বাশার আমাকে বিয়ে করেনি। আসামির সন্তান এখন পঞ্চম শ্রেণীতে বধুঠাকুরানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পড়াশোনা করে। আমার ছেলেকে স্কুলে ভর্তির সময় তার বাবার নাম ঠিকই আবুল বাশার দেয়া হয়েছে। আমি এখন পর্যন্ত বিয়ে করিনি।’
রায়ের ব্যাপারে আবুল বাশার আদালতের বারান্দায় বলেন, ‘এই রায়ের বিরুদ্ধে আমি হাইকোর্টে আপিল করবো।’
আসামির পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন, আইনজীবী মো: নিজাম উদ্দিন।