বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

আমতলীতে আ’লীগের দু’গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ইট পাটকেল নিক্ষেপ ॥ আহত ১১

আমতলীতে আ’লীগের দু’গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ইট পাটকেল নিক্ষেপ ॥ আহত ১১

আমতলী প্রতিনিধি ॥ সোমবার দুপুরে আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক পৌর মেয়র ও বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও আমতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।

এতে ৭টি মোটর সাইকেল ভাংচুর ও প্রতিপক্ষের হামলায় ১১ জন আহত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় ২ জনকে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

আইন শৃংখলা রক্ষায় শহর জুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনার সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

জানাগেছে, আমতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য গোলাম ছরোয়ার ফোরকানকে ঋণ খেলাপীর অভিযোগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারী বরগুনা জেলা যুগ্ম জজ প্রথম আদালত ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে বিচারক আল মামুন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী সামসুদ্দিন আহম্মেদ ছজুকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিজয়ী ঘোষনা করে নির্বাচন কমিশনকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে গেজেটভুক্ত করার আদেশ দেন।

এ আদেশের বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ¦ গোলাম ছরোয়ার ফোরকান রবিবার বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন।

আদালতের বিচারক মো. হাসানুল ইসলাম মামলাটি আমলে নিয়ে তাকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে ও প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী সামসুদ্দিন আহম্মেদ ছজুকে চেয়ারম্যান ঘোষনা করে গেজেটভুক্তির যে রায় দিয়েছিলেন তা স্থগিত করে দেন।

রায়ে স্থগিত হওয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যানেরন কর্মী সমর্থকরা উচ্ছাসিত হয়। সোমবার সকাল ১১ টার দিকে তার সমর্থকরা মোটর সাইকেল শোভাযাত্রা করে ফোরকানকে আমতলী উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে নিয়ে আসে এবং সংবর্ধনার আয়োজন করে।

ওই সংবর্ধনায় কয়েক হাজার নেতা-কর্মী ও কর্মী সমর্থকরা অংশ নেয়। এ দিকে উপজেলা চেয়ারম্যানের এ সংবর্ধনাকে প্রতিহত করতে উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানের নেতৃত্বে অন্তত পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা এসে উপজেলা কম্পাউন্ডের মধ্যে সকাল ১০ টার দিকে অবস্থান নেয়।

উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার সমর্থকরা ইউএনও অফিসের সম্মুখে এবং চেয়ারম্যানের অফিস ও ইউএনও অফিসের দোতালায় অবস্থান নেয় এবং সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়রের সমর্থকরা স্মৃতিস্তস্তের পাদদেশে অবস্থান নেয়।

এ সময় দু’পক্ষের কর্মী-সমর্থকরা বিভিন্ন ধরনের উস্কানী মূলক শ্লোগান দিতে থাকে। এক পর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে তাৎক্ষনিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এক পর্যায়ে পুলিশ উভয় পক্ষকে উপজেলা পরিষদ কম্পাউন্ডের মধ্যে থেকে সরিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।

আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মো. মতিয়ার রহমান ফোরকান মিয়ার সংবর্ধনা সভা পন্ড করার কথা অস্বীকার করে বলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফোরকান মিয়া পটুয়াখালী থেকে তার ভাই যুবদলের সভাপতির মনিরুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে আমতলীতে কয়েকশ সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমতলী এসে আওয়ামীলীগের কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা ও আমতলীতে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে।

আমি এটা প্রতিরোধ করেছি। এছাড়া ফোরকানের কর্মী সমর্থকরা আমার কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা করে।

হামলা ৬ জন কর্মী আহত হয়েছে। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমি উভয় পক্ষকে শান্ত রাখার জন্য উপজেলা পরিষদের সামনে গিয়েছিলাম।

আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে সেজন্য পুলিশকে সহযোগিতা করেছি।

আমতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম সরোয়ার ফোরকান অভিযোগ করে বলেন, আমতলী পৌরসভার মেয়র মতিয়ার রহমানের সন্ত্রাসী কর্মী সমর্থকরা পৌরসভার সামনে দিয়ে আমার কর্মী সমর্থকরা বাড়ী ফিরে যাওয়ার সময় তাদের উপর হামলা করে।

হামলায় ৫ জন আহত হয়েছে এর মধ্যে জাহাঙ্গীর (২৫) ও সিরাজ (৫০) আহত হয়েছে। তাদেরকে প্রথমে আমতলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অবস্থা গুরুতর হওয়ায় দুপুর ২টায় তাদেরকে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। অপর আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া তারা আমাদের ৭টি মোটর সাইকেল ভাংচুর করেছে। তিনি আরো বলেন, আমার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে পন্ড করার জন্য মতিয়ার রহমান সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এসে গন্ডগোল করেছে।

তারতো এখানে কোন কাজ ছিল না। তিনি মতিয়ার রহমানের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার সাথে বিএনপি এবং সন্ত্রাসী কোন বাহিনী ছিল না।

যারা ছিল সবাই আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের কর্ম সমর্থক ছিল। আওয়ামীলীগের লোক কখনো সন্ত্রসী হয় না। তিনি হামলার বিচার দাবী করেন।

আমতলী থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, পুলিশের কঠোর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব হয়েছে।

বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। হামলায় আহত হওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম তারেক রহমান বলেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথেষ্ট সজাগ রয়েছে।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ছিল। তিনি আরো বলেন, পরিস্থিতি রক্ষায় শহর জুরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech