আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
রাতের আধারে ঘর তুলে প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ জামাল হাওলাদার ও তার লোকজন জোরপূর্বক জমি দখল করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জমি দখলে বাঁধা দেয়ায় তিন মাসের অন্তঃস্বত্তা নারী নাজমা বেগম (৩৫) , হাওয়া আক্তার (৩৪) ও হনুফা আক্তারকে (২৬) ধর্ষণ চেষ্টা এবং বেধরক মারধর করেছে। এতে অন্তঃস্বত্তা নাজমা বেগমের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। শনিবার সকালে স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। ঘটনা ঘটেছে বরগুনার আমতলী উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামের শুক্রবার গভীর রাতে। আহত হনুফা বেগম বলেন, ঘর তুলে জমি দখলে বাঁধা দিতে গেলে জামাল হাওলাদার আমাদের ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। কিন্তু ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে আমাদের মারধর করেছে।
জানাগেছে, উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামে রাজ্জাক হাওলাদারের ৭০ শতাংশ জমি রয়েছে। স্থানীয় গুলিশাখালী ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সাধারণ সদস্য প্রভাবশালী মোঃ জামাল হাওলাদার শুক্রবার গভীর রাতে ১০-১২ জন লোক নিয়ে ওই জমি দখল করতে ঘর তোলে। ওইদিন রাতে জমির মালিক রাজ্জাক হাওলাদার তার ভাই মাসুদ ছারছিনা দরবারের মাহফিলে ছিল। খবর পেয়ে রাজ্জাক হাওলাদারের তিন মাসের অন্তঃস্বত্তা স্ত্রী নাজমা বেগম, ছোট ভাইয়ের স্ত্রী হাওয়া বেগম ও বোন হনুফা আক্তার ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘর তুলতে বাঁধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয় জামাল হাওলাদার ও লোকজন। পরে জামাল হাওলাদার তার সহযোগী নাশির মাঝি, হারুন হাওলাদার ও ওয়াজেদ মিস্ত্রিসহ তার লোক তাদের মারধর এবং ধর্ষণ চেষ্টা চালায় এমন অভিযোগ আহত হনুফা বেগমের। তাদের হামলায় তিন মাসের অন্তঃস্বত্তা নারী নাজমা বেগমের রক্তক্ষরণ হয়। অপর দুই নারী আহত হয়েছে। শনিবার সকালে স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
শনিবার আমতলী হাসপাতালে গিয়ে দেখাগেছে, অন্তঃস্বত্তা নারী নাজমা বেগম বেধম ব্যথায় কাতরাচ্ছেন।
কান্নাজনিত কন্ঠে আহত নারী নাজমা বেগম বলেন, ঘর তুলতে বাধা দিলে জামাল হাওলাদার, নাশির মাঝি, হারুন হাওলাদারসহ ১০-১২ জনে আমাদের ধর্ষণ চেষ্টা চালায় এবং মারধর করে। জামালের লাথির আঘাতে আমার রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
এ বিষয়ে জামাল হাওলাদার রাতে জমিতে ঘর তোলার কথা স্বীকার করে বলেন, তাদের মারধর ও ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ মিথ্যা। তিনি আরো বলেন, প্রয়োজনে আমি তাদের জমিতে ঘর তুলেছি। ওই পরিমান জমি তাদের অন্য স্থান থেকে দিয়ে দেব।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, তিন মাসের অন্তঃস্বত্তা নারী নাজমা বেগমের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তিন নারীকেই যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।