আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানের ভাগ্নে মোঃ আবুল কালাম আজাদ ও উপজেলা জাতীয় শ্রমিকলীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাসান মৃধাকে কুপিয়ে হাত ও পায়ের রগ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্ত্বরা ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে আমতলী উপজেলার খুড়িয়ার খেয়াঘাট ও নোমরহাট সড়কের চলাভাঙ্গা নামক স্থানে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে আমতলী হাসপাতালে নিয়ে আসে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুজনকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। শনিবার মুমুর্ষ অবস্থায় মেয়রের ভাগ্নে আজাদকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নেয়া হয়। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। বরগুনা পুলিশ সুপার মোঃ জাহাঙ্গির মল্লিক ও সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ মহরম আলী শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জানাগেছে, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানের ভাগ্নে মোঃ আবুল কালাম আজাদ ও উপজেলা জাতীয় শ্রমিকলীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাসান মৃধা শুক্রবার রাত ৮টার দিকে ধানখালী দাওয়াত খেতে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে আমতলী সদর ইউনিয়নের খুড়িয়ার খেয়াঘাট- নোমরহাট সড়কের চলাভাঙ্গা নামক স্থানে সড়কের পাশে ওত পেতে থাকা দুর্বৃত্ত্বরা আজাদের ব্যবহৃত মোটর সাইকেলের গতিরোধ করে। পরে দুর্বৃত্ত্বরা তাদের সড়কের পাশে দলক্ষেতে (ঘাস ক্ষেত) নিয়ে যায়। ওইখানে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে আজাদের দুই হাতের বাহু, তালু, কব্জি, দু পায়ের হাটু, গোড়ালীসহ রগ এবং হাসানের দু’হাতের বাহু ও কব্জি কেটে দেয়। দুর্বৃত্ত্বরা তাদের কুপিয়ে রাস্তার পাশে ফেলে রাখে যায়। পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান দাবী করেন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা কৌশলে দাওয়াত খাওয়ানের কথা বলে আজাদ ও হাসানকে কুপিয়েছে। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে আমতলী হাসপাতালে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসা মোঃ মোশের্^দ আলম তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সঙ্কটজনক অবস্থায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করেছে। শনিবার ভোররাতে গুরুতর আহত আজাদকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরন করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ও ডিভি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। ১৮ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও ঘটনার প্রকৃত কারন উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। রহস্য উদঘাটনে বরগুনা পুলিশ সুপার মোঃ জাহাঙ্গির মল্লিক ও সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ মহরম আলী শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
চলাভাঙ্গা গ্রামের মোঃ জামাল তালুকদার বলেন, রাত সাড়ে ৮ টার দিকে মোটর সাইকেলের শব্দ ও আলো জ¦লতে দেখে ঘটনাস্থল যাই। এ সময় আমি কারা বললেই মোটর সাইকেলে বেশ কয়েকজন লোক খুড়িয়ার খেয়াঘাটের দিকে পালিয়ে যায়। পরে একজন লোককে সড়কের পাশে একজন এবং দল ক্ষেতে একজন রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পাই। তিনি আরো বলেন, গুরুতর আহতদের আমি বাড়ী থেকে পুরাতন কাপড় এনে বেধে দিয়েছি।
একই গ্রামের টমটম চালক মোঃ রাকিব খলিফা বলেন, আহতদের একটি পিকআপে করে আমতলী হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ মোশের্^দ আলম বলেন, গুরুতর আহত আজাদের দুই হাত ও দুই পা বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে কুচি কুচি করে দিয়েছে। পায়ের রগ বিছিন্ন হয়ে যাওয়ায় আজাদের রক্তক্ষরণ বন্ধ করা যায়নি। তার অবস্থা সংঙ্কটজনক। অপর আহত হাসানের দু’হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহৃ রয়েছে। তিনি আরো বলেন, দু’জনকেই উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, দাওয়াত খাওয়ানোর কথা বলে ডেকে নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা কৌশলে আমার ভাগ্নে আজাদ এবং শ্রমিকলীগ নেতা হাসানকে সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে কুপিয়ে হাত ও পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। আমি এ বর্বরতায় শাস্তি দাবী করছি।
আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) রনজিত কুমার সরকার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযান অব্যহত আছে। তথ্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।
বরগুনা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গির মল্লিক বলেন, ভিকটিমের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ দেয়নি এবং প্রত্যক্ষ কোন স্বাক্ষী নেই। তাই রহস্য উদঘাটনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তিনি আরো বলেন ভিকটিমের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে অভিযোগ মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং সঠিক তথ্য বেড়িয়ে আসবে।