বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

যেসব তেলের ব্যবহারে চোখে ঘুম আসবে

যেসব তেলের ব্যবহারে চোখে ঘুম আসবে

লাইফস্টাইল ডেস্ক:

প্রাচীনকাল থেকে স্ট্রেস দূর করতে, মনকে শান্ত করতে ও শরীরকে শিথিল করতে হার্বাল অয়েল ব্যবহার করা হচ্ছে। আধুনিক গবেষণাও এসেনশিয়ালের উপকারিতাকে সমর্থন করছে। অসংখ্য গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু হার্বস করটিসলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রেখে স্ট্রেস প্রতিরোধ করে ও স্নায়ুতন্ত্রকে পুনরায় শান্ত করে তোলে, বলেন হলিস্টিক হেলথ এক্সপার্ট সুসান স্মিথ জোনস। তিনি আরো বলেন, ‘স্ট্রেসের সঙ্গে ঘুমের সম্পর্ক রয়েছে। উচ্চ মাত্রার স্ট্রেসে ঘুমের সমস্যা হয়।’

আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের একটি জরিপ বলছে, বয়স বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে ঘুমের মান কমে যেতে পারে এবং রাতে জেগে থাকার একটি মূল ফ্যাক্টর হতে পারে স্ট্রেস। এ ধরনের ঘুমের সমস্যায় এসেনশিয়াল অয়েল চোখে ঘুম আনতে অথবা ভালোভাবে ঘুমাতে সাহায্য করতে পারে। আপনার ঘুম যেতে সমস্যা হলে এখানে আলোচিত এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

* ক্যামোমাইল অয়েল

সম্ভবত এ হার্ব সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় চা হিসেবে। শতশত বছর ধরে লোকজন পরিপাক অথবা পাকস্থলির সমস্যা উপশম করতে এ হার্ব ব্যবহার করে আসছেন। এতে উচ্চ ডোজে ফ্লেভানয়েড রয়েছে। ডা. জোনস বলেন, ‘স্ট্রেস-সম্পর্কিত পেটের গ্যাস, বদহজম, অ্যাসিডিটি, পেপটিক আলসার, ক্রোন’স ডিজিজ ও ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোমের চিকিৎসায় ক্যামোমাইল তেল বেশ কার্যকর। অনেকে স্নায়ুকে শান্ত করতে ও স্ট্রেস বা টেনশন কমাতে এ তেল ব্যবহার করেন। ক্যামোমাইল তেলকে হালকা সিডাটিভ (ঘুমাচ্ছন্নকারী) হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নিজেকে শিথিল করতে ও ঘুমের জগতে হারিয়ে যেতে বিছানায় যাওয়ার ৪৫ থেকে ৬০ মিনিট পূর্বে এককাপ ক্যামোমাইল চা পান করতে পারেন।’

* রোজ অয়েল

পারফিউম থেকে নাইট ক্রিম সবকিছুতে এ পুষ্প সুবাস ব্যবহারের একটি কারণ রয়েছে। এটি শুধুমাত্র শিথিলকারকই নয়, গবেষণায় দেখা গেছে যে রোজ অয়েল (গোলাপ তেল) অ্যানজাইটি, স্ট্রেস ও ডিপ্রেশন উপশম করতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, ইরানিয়ান রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় এর স্বপক্ষে জোরালো প্রমাণ রয়েছে। এ গবেষণার গবেষকরা দেখেছেন যে, গোলাপ তেলের অ্যারোমাথেরাপি সিম্প্যাথিক স্টিমিউলেশন হ্রাস করে অ্যানজাইটি কমিয়েছে, বলেন ডক্টর অব ওরিয়েন্টাল মেডিসিন অ্যান্ড আকুপাঙ্কচারের আকুপাঙ্কচার ফিজিশিয়ান এলিজাবেথ ট্রেটনার। তিনি ঘুমানোর পূর্বে এ তেল ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন- কারণ এটি মানসিক স্থিরতা, একাগ্রতা ও নিরাপত্তার অনুভূতি দেয়।

* লোবান তেল

বাইবেল যুগের সময় থেকে এ সুগন্ধিকে বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতায় ব্যবহার করা হয়ে আসছে। এসেনশিয়াল অয়েল ও ডিফিউজার ব্র্যান্ড ভিট্রুভির সহপ্রতিষ্ঠাতা সারা প্যান্টন বলেন, ‘এ অ্যারোমেটিক রেসিন (লোবান) রাতে ব্যবহারে বিশেষ সুফল পাওয়া যায়, যেমন- এ তেল চোখে ভালো ঘুম আনতে সাহায্য করে। ঘুমের নতুন অভ্যাস গড়ে তুলতে এ তেল ব্যবহারে ফল পেতে পারেন, কারণ এটি মনকে প্রশান্ত করে বা মানসিক স্থিরতা এনে ঘুমের জন্য প্রস্তুত করে তোলে।’ তিনি বিছানায় যাওয়ার পূর্বে হাতের তালুতে তিন ফোঁটা লোবান তেল নিয়ে পায়ের তলায় মাখতে পরামর্শ দিচ্ছেন।

* ল্যাভেন্ডার অয়েল

ল্যাভেন্ডার হচ্ছে অন্যতম সর্বাধিক পরিচিত এসেনশিয়াল অয়েল, যার পরিচিতি কেবলমাত্র প্রশান্তিদায়ক সুগন্ধির জন্য নয়। ডা. ট্রেটনার বলেন, ‘ল্যাভেন্ডারে জীবাণু ও ছত্রাকের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো শক্তি রয়েছে। এ তেল ব্যথা উপশমকারী, ঘুম আনয়নকারী ও উদ্বেগ প্রশমনকারী হিসেবেও কাজ করে। মাথাব্যথা, উকুন, সিস্ট, পেশি ব্যথা, পেটের সমস্যা, বিষণ্নতা, স্নায়ু দুর্বলতা, মুড ডিসঅর্ডার ও পিএমএসের চিকিৎসায়ও এটি সহায়ক হতে পারে।’ তিনি ঘুমানোর পূর্বে শিথিল হতে পানির স্প্রে বোতলে পানির সঙ্গে কিছু ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল যোগ করে বেডরুমে ছিটাতে পরামর্শ দিচ্ছেন।

* ক্যাটনিপ অয়েল

ক্যাটনিপ হচ্ছে পুদিনা পরিবারের একটি হার্ব। পুদিনা পরিবারের এ সদস্য সম্পর্কে ডা. জোনস বলেন, ‘ক্যাটনিপ নামে পরিচিত  অ্যারোমেটিক হার্ব হচ্ছে স্নায়ুকে শান্ত করার ঐতিহ্যবাহী ঘরোয়া চিকিৎসা, যা শারীরিক জট খুলে ও গভীর ঘুমে সহায়তা করে। এ হার্বটি স্ট্রেস-সম্পর্কিত পেটের সমস্যা, গ্যাস, বমিভাব ও পেটফাঁপার চিকিৎসায়ও সহায়ক হতে পারে।’ তিনি ভালো হজম ও ঘুমের প্রস্তুতির জন্য রাতের খাবার খাওয়ার পর ক্যাটনিপ তেলের চা পানের পরামর্শ দিচ্ছেন।

* সিডারউড অয়েল

সিডারউড এসেনশিয়াল অয়েল তৈরি করা হয় সিডার গাছের বাকল থেকে। প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে এ তেলের ব্যবহার হয়ে আসছে, যেমন- এটি ওষুধ ও প্রসাধনী উভয়ভাবে ব্যবহার করা হয়। মিসৌরির সেন্ট লুইসে অবস্থিত রেডিয়ান্স ফ্লোট+ওয়েলনেসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা, এসেনশিয়াল অয়েল বিশেষজ্ঞ ও সাইকিয়াট্রিস্ট জিনিয়া থমাস বলেন, ‘সিডারউড এসেনশিয়াল অয়েল ত্বক ও স্নায়ুতন্ত্রের জন্য ভালো, মস্তিষ্কের উপকার করে, ঘুমের মান ও গভীরতা বৃদ্ধি করে, মনোযোগের দৈর্ঘ্য ও স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং মেজাজ ও আবেগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।’ এটি রাতে শরীরকে বিষমুক্ত করে ও নেগেটিভ এনার্জি তাড়াতে সাহায্য করে। ঘুমানোর পূর্বে নেগেটিভ এনার্জি দূর করে শান্ত হতে এ তেল ব্যবহার করতে পারেন। ডা. প্যান্টনের পরামর্শ হচ্ছে, ‘হাতের তালুতে পাঁচ ফোঁটা সিডারউড এসেনশিয়াল অয়েল ও দশ ফোঁটা ইউক্যালিপটাস অয়েল নিয়ে দ্রুত ঘষে গভীর শ্বাস টানুন।’

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech