আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
চাঁদার নগদ ১০ হাজার টাকাসহ কথিত সাংবাদিক মোঃ নজরুল ইসলাম ও তার সহযোগী স্কুল শিক্ষক মোঃ মাসুদ মোল্লাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মিলনায়তন থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
জানাগেছে, সরকারী নির্দেশ মোতাবেক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাড়ী বাড়ী গিয়ে অ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষা গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়। উপজেলার দক্ষিণ সোনাখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র গত বৃহস্পতিবার বিতরন করেন। প্রশ্নপত্র বিতরনের অনিয়মের অভিযোগ এনে দৈনিক শিক্ষা তথ্য নামে একটি অনলাইন পোর্টালের কথিত সাংবাদিক মোঃ নজরুল ইসলাম স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোসাঃ শিউলি আক্তারের কাছে ৪০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করেন। ওই চাঁদার টাকা দিতে অপরগতা প্রকাশ করে প্রধান শিক্ষক। এরপরে সাংবাদিক নজরুল ইসলাম প্রধান শিক্ষককে পত্রিকায় নিউজ করাসহ চাকুরীচ্যুত করার ভয়ভীতি দেখায়। নিরুপায় হয়ে প্রধান শিক্ষক চাঁদাবাজ সাংবাদিক নজরুল ইসলামের দাবীকৃত চাঁদার টাকা দিতে রাজী হয়। মঙ্গলবার ওই টাকা নিতে নজরুল ইসলাম ও তার সহযোগী স্কুল শিক্ষক মোঃ মাসুদ মোল্লাকে নিয়ে দক্ষিণ সোনাখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মিলনায়তনে এসে নগদ ১০ হাজার টাকা গ্রহন করেন। খবর পেয়ে আমতলী থানার এসআই আব্দুল হাই একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে টাকাসহ কথিত সাংবাদিক নজরুল ইসলাম ও তার সহযোগী পশ্চিম সোনাখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাসুদ মোল্লাকে আটক করে। এ ঘটনায় কথিত সাংবাদিক মোঃ নজরুল ইসলাম ও তার সহযোগী মাসুদ মোল্লার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্ততি চলছে। পুলিশ নজরুল ইসলামের কাছ থেকে চাঁদার নগদ ১০ হাজার টাকা জব্দ করেছে। অভিযোগ রয়েছে কথিত সাংবাদিক নজরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষকে ঠুনকো অযুহাতে ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কথিত সাংবাদিক নজরুলের বাড়ী আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পুর্ব সোনাখালী গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুল করিম চৌকিদার। তার সহযোগী স্কুল শিক্ষক মোঃ মাসুদ মোল্লার বাড়ী একই গ্রামে। তার বাবার নাম নুরুল হক মোল্লা।
দক্ষিণ সোনাখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ মহসিন আলম বলেন, কথিত সাংবাদিক নজরুল ইসলামের দাবীকৃত ৪০ হাজার টাকা নেয়ার সময় বিদ্যালয় মিলনায়তন থেকে হাতে নাতে টাকাসহ নজরুল ইসলাম ও তার সহযোগী মাসুদ মোল্লাকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
বিদ্যালয়রে প্রধান শিক্ষক মোসাঃ শিউলী আক্তার বলেন, অ্যাসেইনমেন্ট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিতরনের অনিয়মের অভিযোগ তুলে কথিত সাংবাদিক মোঃ নজরুল ইসলাম আমার কাছে ৪০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করেন। তার দাবীকৃত টাকা আমি দিতে অস্বীকার করলে আমাকে চাকুরীচ্যুত করাসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখায়। নিরুপায় হয়ে তার দাবীকৃত চাঁদার টাকা আমি নজরুলকে দিয়েছি।
কথিত সাংবাদিক নজরুল ইসলাম চাঁদা দাবীর কথা অস্বীকার করে বলেন, আমাকে ডেকে নিয়ে পকেটে টাকা ভরে দিয়ে ফাঁসিয়ে দিয়েছেন।
আমতলী থানার এসআই মোঃ আব্দুল হাই বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নগদ ১০ হাজার টাকাসহ কথিত সাংবাদিক নজরুল ইসলাম ও তার সহযোগী মাসুদ মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আমতলী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ মজিবুর রহমান বলেন, সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে নজরুল ইসলাম ৪০ হাজার টাকা চাঁদা দাবীর বিষয়টি প্রধান শিক্ষক আমাকে অবহিত করেছেন।
আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, চাঁদার টাকাসহ নজরুল ইসলাম ও স্কুল শিক্ষক মাসুদ মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনার মামলার প্রস্তুতি চলছে।