আমতলী প্রতিনিধি।
বিরামহীন ভারী বর্ষণে আমতলী উপজেলার ৩১৮ হেক্টর আমন ধানের বীজতলা পঁচে হয়ে গেছে। এতে আমতলীতে আমন ধানের বীজের তীব্র সংঙ্কট দেখা দিয়েছে। রবিবার আমতলীতে অসাধু ব্যবসায়ী রত্তন গাজী বিএডিসির ৩৬০ টাকার ১০ কেজি বীজ ধান ৮’শ থেকে টাকায় বিক্রি করছেন। দ্রুত অসাধু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং বীজ সংঙ্কট নিরসনের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।
জানাগেছে, গত ২৬ জুলাই থেকে ছয় দিনের বিরামহীন বর্ষণে আমতলীতে চরম জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ওই জলাবদ্ধতায় উপজেলার ৩১৮ হেক্টর জমির আমনের বীজতলা পঁচে যায়। পুনরায় কৃষকরা বীজতলা তৈরির উদ্যোগ নেয়। ওই বীজতলা তৈরিতে ১’শ ৯৫ মেট্রিক টন আমন ধানের বীজের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এই মুহুর্তে কৃষকদের হাতে বীজ ধান নেই। কৃষকরা বিএডিসি, উপজেলা কৃষি অফিস ও বীজের দোকানে হন্য হয়ে বীজ খুঁজছেন। কিন্তু বীজ পাচ্ছেন না। বীজ না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পরেছেন কৃষকরা। এদিকে বীজের চাহিদাকে পুঁজি করে অসাধু বীজ ব্যবসায়ী রত্তন গাজী অবৈধ পথে বিএডিসির ৮’শ কেজি ধান এনে গোপনে বেশী দামে বিক্রি করছেন। তিনি ৩৬০ টাকার ১০ কেজি ধান ৮’শ টাকায় বিক্রি করছেন। কৃষকরা নিরুপায় হয়ে বেশী দামে ওই বীজ ক্রয় করছেন। কৃষকরা অভিযোগ করেন, বীজ ব্যবসায়ী ৩৬০ টাকার ধান ৮’শ টাকায় বিক্রি করছেন। অপর দিকে বীজ ধানের সংঙ্কটকে পুঁজি করে বিভিন্ন কোম্পানীর ধান বেশী দামে বিক্রি করছেন ডিলাররা। তারা ৭০০ টাকার ধান ১০০০ টাকার বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ করেন কৃষক আলম মিয়া।
রবিবার দুপুরে আমতলী পৌর শহরের বাঁধঘাট চৌরাস্তায় তালুকদার টেডার্স, আরিফ স্টোর, মামুন স্টোর, হাওলাদার টেডার্স ও ইউনুস ডিলারের দোকান ঘুরে আমন ধানের বীজ পায়নি। বীজ ধান না পেয়ে কৃষকরা খালি হাতে ফিরে গেছেন। অপরদিকে আমতলী সরকারী কলেজের সামনে গাজী বীজ ভান্ডারের মালিক রত্তন গাজী অবৈধভাবে বিএডিসির ৮০০ কেজি বীজ এনে বেশী দামে বিক্রি করছেন। তিনি ৩৬০ টাকার দশ কেজি বীজ ৮’শ টাকায় বিক্রি করছেন।
আমতলী পৌরশহরের ওয়াবদা এলাকার কৃষক জাহিদ ও আনসার মিয়া বলেন, রত্তন গাজীর দোকান থেকে ১০ কেজি বিএডিসির বিআর-২৩ ধানের বীজ ৮’শ টাকার ক্রয় করেছি।
তালতলীর কৃষক সোহরাফ হোসেন বলেন, রত্তন গাজীর দোকান থেকে ১০ বস্তা ধান ৮ হাজার টাকায় ক্রয় করেছি।
গাজী বীজ ভান্ডারের মালিক রত্তন গাজী ১০ কেজি ধান ৮’শ টাকায় বিক্রির কথা স্বীকার করে বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ৮০০ কেজি আমনের বীজ ৫ হাজার ৬’শ টাকায় কিনে এনেছি।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, ভারী বর্ষণে ৩’শ ১৮ হেক্টর আমনের বীজতলা পঁচে গেছে। এতে বীজ ধানের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, বেশী দামে বীজ বিক্রির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়েছি।