আমতলী প্রতিনিধি:
বরগুনার আমতলীতে এ বছর আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও বাজারে ধানের দাম ভালো। এতে লাভবান হবে কৃষকরা। কৃষকরা জানান, বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, এ বছর আমতলীতে আউশ চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়ছিল ১০ হাজার ১’শ হেক্টর। ওই লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর আমতলীতে ধাউশ ধানের আবাদ বেশী। আউশ ধান চাষের উপযুক্ত সময় বৈশাখ মাস থেকে শুরু করে জৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। বীজতলা থেকে শুরু করে পাঁচ মাসের মধ্যে উচ্চ ফলনশীল আউশ ধানের ফলন আসে। উচ্চ ফলনশীল জাতের বিরি-৪৮, চায়না ও গোড়াইল্লা ইরি ধান চাষ করছেন কৃষকরা। গত আষাঢ়ের শুরুতে বিরামহীন বর্ষণে আউশ ধানের ক্ষতির সম্বাবনা থাকলেও তেমন ক্ষতি হয়নি বলে জানান তারা। বর্তমানে কৃষকরা ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা । এদিকে বাজারে ধানের দাম ভালো। শুরুতেই বাজারে প্রতিমণ ধান ৭২০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের কারনে বাজারে ধানের দাম নিয়ে কৃষকরা কিছুটা চিন্তিত থাকলেও লকডাউন উঠে যাওয়ায় সেই দুচিন্তা কেটে গেছে বলে জানান কৃষকরা। কৃষকরা আরো বলেন, এক একর জমিতে উৎপাদন খরচ ৩০ হাজার টাকা। ওই জমিতে ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০-৬০ মণ। বাজারে প্রতিমণ ধান ৮০০-৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে হিসেবে ওই জমিতে আয় হবে ৪০-৪৮ হাজার টাকা। বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় কৃষকরা এ বছর ভালো লাভবান হবে।
সোমবার সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, উপজেলার কুকুয়া, হলদিয়া, চাওড়া, আমতলী সদর, গুলিশাখালী ও আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে আউশ ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের সোহেল রানা বলেন, তিন একর জমিতে আউশ ধানের চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে প্রতিমণ ধান ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, দু’এক দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু করবো।
কুকুয়া গ্রামের কৃষক জালাল উদ্দিন বলেন, এক একর জমিতে আউশ ধান চাষ করেছি। ফলন বেশ ভালোই হয়েছে। বাজারে দামও ভালো। আশা করি বেশ লাভবান হবো।
ঘোপখালী গ্রামের আফজাল শরীফ বলেন, এ বছর আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে এবং বাজারে ধানের দামও ভালো।
ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম ও মোঃ ফয়সাল মৃধা বলেন, তিন জাতের ধান বাজারে বিক্রি হচ্ছে। চায়না ধান প্রতিমণ ৭২০ টাকা, বিরি-৪৮ ধান ৮০০ টাকা এবং গোডাইল্লা ইরি ৮৫০ টাকার বিক্রি হচ্ছে। তারা আরো বলেন, তুলনামুলক বাজারে ধানের দাম ভালো।
আমতলী উপজেলা আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেন বলেন, বাজারে বিআর-৪৮, চায়না ও গোডাইল্লা ইরি ধান বিক্রি হচ্ছে। শুরুতেই বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় কৃষকরা লাভবান হবে।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, এ বছর আউশ ধান চাষের লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়েছে। আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আশাকরি কৃষকরা আগামীতে আউশ ধান চাষে আরও উৎসাহিত হবে। তিনি আরো বলেন, বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় কৃষকরা লাভবান হবে।