বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

আমতলীতে স্কুলে নিয়োগ প্রক্রিয়ার অনিয়ম আবেদন করেও নিয়োগ পরীক্ষার কার্ড পায়নি তিন প্রার্থী

আমতলীতে স্কুলে নিয়োগ প্রক্রিয়ার অনিয়ম আবেদন করেও নিয়োগ পরীক্ষার কার্ড পায়নি তিন প্রার্থী

আমতলী প্রতিনিধি:
গোপনে ও তরিগড়ি করে নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন আমতলীর আঠারোগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মজিবুর রহমান। নিরাপত্তা কর্মী পদে আবেদন করেও নিয়োগ কার্ড পায়নি তিন প্রার্থী। শুক্রবার বিকেলে এমন অভিযোগ করেন আবেদনকারী তিন প্রার্থী। তারা আরো অভিযোগ করেন প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমান ও বিদ্যালয় ব্যবস্থপনা কমিটির সভাপতি আব্দুল মান্নান খান মন্টু যোগসাজসে ২৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তিন পদে গোপনে নিয়োগ দেয়ার জন্য এমন অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। তরিড়রি করে নিয়োগের প্রস্তুতি নেয়ায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার নিয়োগ দেয়ার দাবী জানান তারা।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিরাপত্তা কর্মী, অফিস সহায়ক ও আয়া পদ শুন্য রয়েছে। ওই তিন পদে জনবল নিয়োগের জন্য প্রধান শিক্ষক মোঃ মজিবুর রহমান গত আগষ্ট মাসে বিজ্ঞপ্তি দেয়। ওই তিন পদে ১৭ জন প্রার্থী আবেদন করেন। এর মধ্যে আয়া পদে ৫ জন, নিরাপত্তা কর্মী পদে ৫ এবং অফিস সহায়ক পদে ৭ জন আবেদন করেন। ওই বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর বরগুনা জেলা স্কুলে নিয়োগ পরীক্ষার আহবান করা হয়। এদিকে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর ওই স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির মেয়াদ শেষ হবে। কিন্তু বর্তমান কমিটির সভাপতি মোঃ আব্দুল মান্নান মন্টু ও প্রধান শিক্ষক কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার ৪ দিন আগে তরিগরি করে নিয়োগের প্রস্তুতি নিয়েছেন। তরিগরি করে নিয়োগ প্রক্রিয়া গ্রহন করায় জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষক মোঃ মজিবুর রহমান ও সভাপতি মোঃ আব্দুল মান্নান মন্টু তিন পদে তিন প্রার্থীর কাছ থেকে ২৪ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে তরিগরি করে নিয়োগ বোর্ড গঠন করে নিয়োগ সম্পন্ন করতে চাচ্ছেন। অপর দিকে নিরাপত্তা কর্মী পদে আবেদনকারী মোঃ আল আমিন, মোঃ বেল্লাল তালুকদার ও কাওসার মিয়া নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর ১৭ ঘন্টা আগেও নিয়োগ কার্ড দেয়নি প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি যোগসাজসে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে তিন প্রার্থী মোঃ কামরুল হাসান জিকু, খাজিদা বেগম ও মোঃ রুবেলের নিকট থেকে ২৪ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়েছেন। ওই তিন প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে ম্যানেজ বোর্ড গঠন করেছেন এমন অভিযোগ করেন নিরাপত্তা কর্মী পদে আবেদনকারী মোঃ আল আমিন, বেল্লাল তালুকদার ও কাওসার মিয়া।
নিরাপত্তা কর্মী পদে আবেদনকারী মোঃ আল আমিন বলেন, প্রধান শিক্ষক মোঃ মজিবুর রহমান আমার কাছে ওই স্কুলের ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা মোঃ জাকির হোসেনের মাধ্যমে ৮ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবী করেন। ওই টাকা না দেয়ায় আমাকে নিয়োগ দিবে না মর্মে নিয়োগ কার্ড দেয়নি। এই গোপন নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে পুনরায় নিয়োগ দেয়ার আহবান জানান তিনি।
নিরাপত্তা কর্মী পদে আবেদনকারী বেল্লাল তালুকদার ও কাওসার বলেন, প্রধান শিক্ষক মোঃ মজিুবর রহমান ও সভাপতি মোঃ আব্দুল মান্নান মন্টু যোগসাজসে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে তিন প্রার্থী মোঃ কামরুল হাসান জিকু, খাজিদা বেগম ও মোঃ রুবেলের নিকট থেকে ২৪ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়েছেন। ওই তিন জনকে নিয়োগ দিতে আমাদের নিয়োগ কার্ড দেয়নি। তারা আরো বলেন, আমরা নিয়োগ কার্ডের জন্য প্রধান শিক্ষকের কাছে গেলে তিনি যথা প্রক্রিয়ার নিয়োগ কার্ড আমাদের কাছে পৌছে যাবে বলে জানিয়ে দেন। কিন্তু নিয়োগ পরীক্ষার ১৭ ঘন্টা পুর্বেও আমরা নিয়োগ কার্ড পাইনি।
ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা মোঃ জাকির হোসেন নিরাপত্তা কর্মী পদে আবেদনকারী মোঃ আল আমিনের নিকট টাকা দাবীর কথা অস্বীকার করে বলেন, বর্তমান সভাপতি মোঃ আব্দুল মান্নান মন্টু তার ভাগ্নে কামরুল হাসান জিকুকে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে নিয়োগ দিতে তরিগরি করে নিয়োগ সম্পন্ন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
প্রধান শিক্ষক মোঃ মজিবুর রহমান বলেন, নিয়োগ কার্ড নিয়ে তিন প্রার্থীর বাড়ীতে লোক পাঠানো হয়েছে। না পেলে আমার কিছুই করার নেই।
আঠারোগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ আব্দুল মান্নান মন্টু বলেন, যথা প্রক্রিয়াই নিয়োগের প্রস্তুতি চলছে। তিনি আরো বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ার কোন ঘুষ নেয়া হয়নি। সচ্ছ ভাবেই নিয়োগ দেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জিয়াউল হক মিলন বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করতে চেষ্টা করবো।
বরগুনা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech