রাজধানীর বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব। মঙ্গলবার বাদ জোহর বনানী কবরস্থানে চতুর্থ নামাজে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তাকে চিরশায়িত করা হয়েছে। এর আগে সকালে তার মরদেহ নেয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ড. ইনামুল হকের মরদেহ নেয়া হয়েছিল বুয়েটে। সেখানকার মাঠে নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছিল।
শ্রদ্ধা নিবেদনের এই আয়োজন করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইনামুল হকের দুই জামাতা অভিনেতা লিটু আনাম ও সাজু খাদেম এবং দুই মেয়ে হৃদি হক ও প্রৈতি হক। ড. ইনামুল হককে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডাক্তার জাফরুল্লাহ, অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি, তানজিকা, নাতাশা হায়াত, মোমেনা চৌধুরী, বৃন্দাবন দাস, মীর সাব্বির, নির্মাতা অরণ্য আনোয়ারসহ অনেকে।
গতকাল সোমবার দুপুরে বেইলী রোডের নিজ বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন ড. ইনামুল হক। এরপর বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। জানা যায়, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা গেছেন।
১৯৪৩ সালের ২৯ মে ফেনী সদরের মটবী এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন ড. ইনামুল হক। তার বাবা ওবায়দুল হক ও মা রাজিয়া খাতুন। দেশের অভিনয় জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র ড. ইনামুল হক পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৬৫ সালে প্রভাষক হিসেবে বুয়েটের রসায়ন বিভাগে যোগ দেন তিনি। পরবর্তীতে তিনি সহকারী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে উন্নীত হন।
ড. ইনামুল হকের অভিনয় জীবন শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের সময়। জনগণকে আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করার জন্য নাটকের পথ বেছে নেন তিনি। একাত্তরে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ট্রাকে ঘুরে ঘুরে পথনাটক করেছেন। পরবর্তীতে তিনি টিভি নাটক, সিনেমা এবং ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে অভিনয় করে দেশজুড়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
গুণী এই অভিনেতার পুরো পরিবার নাটকে সম্পৃক্ত। তার স্ত্রী লাকী ইনামও কিংবদন্তি অভিনেত্রী, মেয়ে হৃদি হকও নির্দেশক ও অভিনেত্রী। তার অপর মেয়ে পৈত্রি হকের স্বামী সাজু খাদেম।
২০১২ সালে ড. ইনামুল হক একুশে পদক লাভ করেন। ২০১৭ সালে তাকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে সরকার।