আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:
দুপক্ষের দ্বন্ধের জেরে গত একমাস ৫ দিন ধরে আমতলী বিআরটিসি বাস কাউন্টারে টিকেট বিক্রি বন্ধ হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পরেছে হাজার হাজার যাত্রী। দ্রুত কাউন্টার চালু করে টিকেট বিক্রির দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জানাগেছে, ২০১৯ সাল থেকে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক চলাচলরত বিআরটিসি বাসের আমতলী কাউন্টারে মোঃ অলি উল্লাহ ও ফরিদ ম্যালাকারকে নিঃস্বার্থ কাউন্টার প্রতিনিধি নিয়োগ দেয় বিআরটিসি কর্র্তৃপক্ষ । ওই সময় থেকে তারা যাত্রী সেবা নিশ্চিত করে টিকেট বিক্রি করে আসছেন। গত ৪ নবেম্বর জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধা ও করিমুল হাসান নামের দুই জন নিঃস্বার্থ কাউন্টার প্রতিনিধি দাবী করে টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেয়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে চরম উত্তোজনা বিরাজ করে। ফলে গত একমাস ৫ দিন ধরে ওই কাউন্টারে টিকেট বিক্রি এবং বাসে যাত্রী ওঠা-নামা বন্ধ রয়েছে। ওই কাউন্টার থেকে যাত্রীদের টিকেট দেয়া হচ্ছে না। ওই কাউন্টার থেকে প্রতিদিন দুই’শ যাত্রী মাওয়া, ফরিদপুর, বরিশালসহ উত্তরবঙ্গে যেতে টিকিট নিয়ে নিশ্চিন্তে গন্তব্যে পৌছেন। ওই হিসেবে গত এক মাস ৫ দিনে অন্তত ৭ হাজার
বিআরটিসি বাসে চলাচলরত যাত্রী ভোগান্তিতে পরেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফরিদ ম্যালাকার ও জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধার মধ্যে চরম দ্বন্ধ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা ওই দুই গ্রুপের মধ্যে এ বিষয় নিয়ে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ আমতলী থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। ফরিদ ম্যালাকার দাবী করেন ২০১৯ সালে ১৬ এপ্রিল বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ তাকে নিঃস্বার্থ কাউন্টার প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়েছেন। ওই সময়ে থেকেই তিনি ভালোভাবে কাউন্টার পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু গত ৪ জুলাই জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধা তার কাউন্টার দাবী করে তাকে টিকেট বিক্রি বন্ধ করে দেয়। জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধা দাবী করেন ২০১৯ সালের ৪ জুলাই বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ তাকে আমতলী নিঃস্বার্থ প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়েছেন। সেই মতে সে বিআরটিসির নিঃস্বার্থ কাউন্টার প্রতিনিধি। কিন্তু ফরিদ ম্যালকার জোর পুর্বক দখল করে আছে। কাউন্টার বন্ধের বিষয়টি জানিয়ে গত ৫ নবেম্বর ফরিদ ম্যালাকার বিআরটিসি প্রধান কার্যালয়ে অভিযোগ করেন। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিআরটিসি প্রধান কার্যালয়ের জেনারেল ম্যানেজার বরিশাল ডিপো ম্যানেজারকে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেয়। গত ৯ নবেম্বর বরিশাল ডিপো ম্যানেজার জাহাঙ্গির আলম তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। ওই প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেছেন বরিশাল ডিপো থেকে গত ২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল মোঃ ফরিদ ম্যালাকারকে এবং একই বছরের ০২ জুলাই জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধাকে নিঃস্বার্থ কাউন্টার প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হয়। আবার একই দিনেই জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধাকে নিঃস্বার্থ কাউন্টার প্রতিনিধি নিয়োগ বাতিল করে বিআরসিটি কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে ৪ জুলাই আবারো খোকন মৃধাকে কাউন্টার প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হয়। ওই প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ আছে ২০১৯ সালের ৪ জুলাই জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধাকে নিঃস্বার্থ কাউন্টার প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া পত্রে বিভিন্ন অসংতি পরিলক্ষিত হয়। এ ঘটনায় দুইপক্ষের মধ্যে চরম উত্তোজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে বিআরসিটি ডিপো ম্যানেজারের সিদ্ধান্ত মতে পুলিশ কাউন্টার বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে গত একমাস ৫ দিন ধরে কাউন্টার বন্ধ রয়েছে। কাউন্টারে বাস আসছে না। এতে চরম বিপাকে পড়েছে যাত্রীরা। দ্রুত সমস্যা নিরশনের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
যাত্রী মোঃ সাগর, সোহেল, সারমিন ও মহসিন বলেন, কাউন্টারে বাস আসছে না। টিকেট বিক্রি বন্ধ রয়েছে। এতে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পরেছে। দ্রুত যাত্রীসেবা নিশ্চিত করনের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
আমতলী বিআরটিসি বাস কাউন্টার পরিচালক মোঃ নজরুল ইসলাম নান্নু আকন বলেন, বাস কাউন্টার বন্ধ থাকায় যাত্রী সেবা ব্যহত হচ্ছে। প্রতিদিন অন্তত দুই’শ যাত্রী বিআরসিটি কাউন্টার থেকে মাওয়া, বরিশাল ও ফরিদপুরসহ উত্তর বঙ্গে যাওয়াত করে। ওই হিসেবে গত এক মাস ৫ দিনে অন্তত ৭ হাজার যাত্রী চরম ভোগান্তিতে পরেছে।
বরিশাল ডিপো ম্যানেজার মোঃ জাহাঙ্গির আলম বলেন, আমতলী বাস কাউন্টারের সার্বিক পরিস্থিতি জানিয়ে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। ওই প্রতিবেদনের আলোকে বিআরটিসি প্রধান কার্যালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
আমতলী থানার ওসি একেএম মিজানুর রহমান বলেন, বরিশাল ডিপো ম্যানেজারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক পুনরায় দরপত্র আহবান না করা পর্যান্ত কাউন্টার বন্ধ থাকবে। সেই মতে কাউন্টার বন্ধ রয়েছে।