আমতলী প্রতিনিধি।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন বরগুনার আমতলী থানার কমান্ডার সম্মুখ্য যুদ্ধে অংশ নেয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আফাজ উদ্দিন বিশ^াসের সন্তানদের মিথ্যা মামলা দিয়ে ওয়ালী উল্লাহ রাজন তালুকদার হয়রানী করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মুক্তিযোদ্ধার কন্যা ফারহানা ইয়াসমিন রোজী বিশ^াস এমন অভিযোগ করেন। মামলার ভয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। দ্রুত এ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে হয়রানী বন্ধের দাবী জানান তারা।
জানাগেছে, ১৯৫০ সালে মুক্তিযোদ্ধা আফাজ উদ্দিন বিশ^াসের স্ত্রী কোহিনুর বেগমকে তার বাবা মরহুম জিন্নাত আলী তালুকদার আমতলী শহরের পুরাতন বাজার এলাকায় ৮ শতাংশ জমি দান করেন। ওই জমিতে বাড়ী নির্মাণ করে গত ৭০ বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধা আফাজ উদ্দিন বিশ^াস পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন সময় ওই বাড়ীতে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান করে যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। গত ২০১৭ সালে ওই বাড়ীর সামনের অংশ স্থানীয় প্রভাবশালী আল রাশেদিন রোমান তালুকদার ও ওয়ালী উল্লাহ রাজন তালুকদার তাদের দাবী করে দখল করে নেয়। গত ৫ বছর ধরে ওই জমি তারা দখল করে আছে। জমি উদ্ধারে ফারহানা রোজি স্বরাষ্ট মন্ত্রনালয়, বরগুনা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দেন। কিন্তু গত পাঁচ বছরে কোন প্রতিকার পাইনি তারা এমন অভিযোগ রোজি বিশ^াসের। গত সোমবার রাতে ওয়ালী উল্লাহ রাজন তালুকদার বাদী হয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের হয়রানী করতে ফারহানা ইয়াসমিন রোজিকে প্রধান আসামী করে আমতলী থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করেন এমন দাবী পরিবারের সদস্যদের। ওই মামলার ভয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের লোকজন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এদিকে এ ঘটনা সরেজমিনে তদন্তে ইউএনও একেএম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ ২৩ ডিসেম্বর দিন ধার্য্য করে নেটিশ দেন। কিন্তু রাজন তালুকদার ইউএনও’র নোটিশ উপেক্ষা করে মামলা দায়ের করেন। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে হয়রানী বন্ধের দাবী জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবার।
মুক্তিযোদ্ধা আফাজ উদ্দিন বিশ^াসের কন্যা ফারহানা ইয়াসমিন রোজি বলেন, আমার মা কোহিনুর বেগমকে নানার দেয়া ৮ শতাংশ জমিতে গত ৭০ বছর ধরে বসবাস করে আসছি। ওই বাড়ীর জমি আল রাশেদিন রোমান তালুকদার ও ওয়ালী উল্লাহ রাজন তালুকদার দখল করে নিয়েছে। তারা জোরপুর্বক জমি দখল করে আমাদের চলাচলের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের জমি থেকে বিতারিত করতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। এ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান তিনি।
মামলার বাদী ওয়ালী উল্লাহ রাজন তালুকদার হয়রানীর কথা অস্বীকার করে বলেন, আমার জমির উপরে নির্মিত ঘর ভাংচুর করে মালামাল চুরি করে নিয়েছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।
আমতলী থানার ওসি একেএম মিজানুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।